ন্যায্য দাম না পাওয়ার আশঙ্কায় অভিমান করে আখ খেতে আগুন দিয়েছেন একজন আখচাষি। শনিবার গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ এলাকায়৷
রংপুর চিনিকলসহ রাষ্ট্রায়ত্ত ছয়টি চিনিকলে আখমাড়াই বন্ধ রাখার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন চিনিকলের শ্রমিক-কর্মচারী ও আখচাষিরা। অন্যদিকে আখের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার আশঙ্কায় অভিমান করে নিজের আখখেতে আগুন দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন এক আখচাষি। শনিবার গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
চিনিকলের শ্রমিক-কর্মচারী ও আখচাষিরা শনিবার সকাল নয়টার দিকে মহিমাগঞ্জ এলাকায় রংপুর চিনিকলের সামনে গোবিন্দগঞ্জ-মহিমাগঞ্জ সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে ও টায়ারে আগুন দিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করতে থাকেন। এতে ছোট-বড় বিভিন্ন যানবাহন আটকা পড়ে। দুপুর ১২টার দিকে অবরোধ তুলে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তাঁরা।
সংবাদ সম্মেলন চলার সময় মিলস গেট সাব-জোনের গোপালপুর গ্রামের জিল্লুর রহমান নামের এক আখচাষি তাঁর এক একর জমির আখে আগুন লাগিয়ে দেন। খবর পেয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানার একদল পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। পরে গোবিন্দগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সোনাতলা ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট এসে আগুন নেভায়।
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় রংপুর চিনিকলসহ রাষ্ট্রায়াত্ত ছয়টি চিনিকলে আখ মাড়াই বন্ধ রাখার প্রতিবাদে শ্রমিক–কর্মচারী ও চাষিদের বিক্ষোভ সমাবেশ। আজ শনিবার মহিমাগঞ্জ এলাকায়
বিক্ষুব্ধ আখচাষি জিল্লুর রহমান বলেন, রংপুর চিনিকলের চেয়ে ছোট জয়পুরহাট চিনিকলে আখ দিতে গেলে জমিতেই আখ শুকিয়ে যাবে। ছয় মাসেও তাঁরা আখ মাড়াই করতে পারবেন না। ফলে ধানের আবাদও করা সম্ভব হবে না। তাই আখ পুড়িয়ে দিলে আগামী বোরো মৌসুমে ধানের আবাদ করা যাবে। সেই চিন্তা থেকে আখখেতে তিনি আগুন দিয়েছেন।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে ২৪ ডিসেম্বরের মধ্যে চিনিকল চালুর দাবি মানা না হলে হরতাল, অবরোধ ও চিনিকলের আওতায় সব জমির আখ আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রুবেল আমিন, মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম, রংপুর চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আবু সুফিয়ান, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, সহসম্পাদক ফারুক হোসেন, কোষাধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম, আখচাষি কল্যাণ গ্রুপের সভাপতি জিন্নাত আলী প্রধান, সহসম্পাদক আবদুর রশিদ, ইক্ষু উন্নয়ন কর্মী সংসদের সম্পাদক শাহজাহান আলী প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, তাঁদের দাবি আদায়ে ২০ ডিসেম্বর থেকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে। ২৪ ডিসেম্বর মহিমাগঞ্জ এলাকায় অর্ধদিবস হরতাল পালন করা হবে। এর মধ্যে দাবি মানা না হলে ২৫ ডিসেম্বর থেকে হরতাল, অবরোধ, গণ-অনশন ও চিনিকলের সব আখখেতে আগুন দেওয়া হবে।