মোঃ মেহেদী হাসান মুন্না, রাজশাহী
রাজশাহীতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ৩০০জনকে ৩১ লাখ টাকার ব্যবসা ও শিক্ষা সহায়তার অনুদান প্রদান করা হয়েছে।
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন প্রকল্পের জাতীয় নগর দারিদ্র হ্রাসকরণ কর্মসূচির আওতায় আর্থ-সামাজিক তহবিলের অধীনে উপকারভোগীদের মাঝে ব্যবসা ও শিক্ষা সহায়তার এই অনুদান প্রদান করা হয়।
সোমবার দুপুরে নগর ভবনের সিটি হল সভা কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উপকারভোগীদের মাঝে অনুদানের অর্থ বিতরণ করেন প্রকল্পের সভাপতি, আ’লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন।
প্রকল্পের আওতায় নগরীতে ব্যবসা সহায়তায় ২০০ জনকে ২২ লাখ টাকা ও শিক্ষা সহায়তা ১০০ জনকে ৯ লাখ ৪৫ হাজার টাকা প্রদান করা হয়।
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পে সদস্য সচিব ও রাসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নূর ইসলাম তুষারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী সংগঠনের উপদেষ্টা আরিফুল হক কুমার, ইউএনডিপির টাউন ম্যানেজার আব্দুল কাইউম মন্ডল, চিফ কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট অফিসার আজিজুর রহমান বক্তব্য দেন।
সঞ্চালনায় ছিলেন ইউএনডিপির সোসিও ইকোনোমিক এন্ড নিউট্রিশন অফিসার জুলফিকার আলী। অনুষ্ঠানে প্রকল্প কর্মকর্তাবৃন্দ ও সিডিসি টাউন ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন জাতীয় পরিবেশ পদক-২০২১ অর্জন করায় রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে সিডিসি টাউন ফেডারেশন, ক্লাস্টার, সিএইচডিএফের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছে সরকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার দেশের সকল মানুষের জীবনমান উন্নয়নে বিভিন্ন ধরণের সহায়তা অব্যাহত রেখেছেন। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন এলাকায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে এ প্রকল্পের আওতায় বৃহৎ জনগোষ্ঠী নিজেরা নিজেদের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করছে। প্রকল্পটি ২০২৩ সালে মেয়াদ শেষে আবারো এক টার্ম থাকে সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
মেয়র মহোদয় আরও বলেন, রাজশাহীতে শিল্প-কারখানা প্রতিষ্ঠা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজশাহীতে ইতোমধ্যে তিনটি শিল্পাঞ্চল অনুমোদন দিয়েছেন। এরমধ্যে বিসিক-২ শিল্পনগরীর ভূমি উন্নয়ন কাজ শেষ হয়েছে। এখন প্লট বরাদ্দ প্রদান করা হবে। রাজশাহীতে ঢাকার বড় শিল্পপতিদের বিনিয়োগ করানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। এছাড়া চামড়া শিল্প পার্ক ও বিশেষ অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চলছে।
রাসিক মেয়র লিটন বলেন, সরকার ভূমিহীন ছিন্নমূল মানুষের জন্য গৃহনির্মাণ প্রকল্প অব্যাহত রেখেছেন। আগামীতে সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে রাজশাহীতে গৃহহীন মানুষের গৃহ নির্মাণ করে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। সিসিডি সদস্যদের সঞ্চয়ের অর্থ নিয়ে তাদের কল্যানে একটি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার কাজ চলছে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে শুরু হওয়া সহায়তায় এ প্রকল্পের আওতায় এ পর্যন্ত ২৬৮ জনকে শিক্ষানবিশ দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণে ৪২ লাখ টাকা ও ব্যবসা সহায়তায় ১৪৯২ জনকে ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া শিক্ষা সহায়তায় ৩৭৩ জনকে ৩৫ লাখ টাকা, গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারী মাকে পুষ্টি সহায়তায় ১২০০ জনকে ৯২ লাখ টাকা, বয়সন্ধীকালীন স্বাস্থ্য সচেতনায় কিশোরী সহায়তায় ৪৫০ জনকে ১১ লাখ টাকা ও দলীয় ব্যবসায় ১০১ জনকে ৬ লাখ টাকা অনুদান প্রদান করা হয়েছে।
এ প্রকল্পের আওতায় সর্বমোট ৩ হাজার ৮৮৪ জনকে ৪ কোটি ৩ লাখ টাকা অনুদান প্রদান করা হয়েছে।