সরকারি কলেজে ‘ক্লাস পার্টির’ নামে উচ্চ শব্দে সাউন্ড বক্স বাজিয়ে পিকনিকের অভিযোগ

আরো ঢাকা পরিবেশ শিক্ষা শিক্ষা সাহিত্য সারাদেশ
শেয়ার করুন...

জহুরুল ইসলাম হালিম, রাজবাড়ী থেকেঃ
রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দে সরকারি গোয়ালন্দ কামরুল ইসলাম কলেজে সোমবার (০৬ জুন) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গার্হস্থ্য বিজ্ঞান বিষয়ে ‘ক্লাস পার্টির’ নামের পিকনিক করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সকাল ১০টার পর থেকে শুরু করে দুপুর পর্যন্ত উচ্চ শব্দে সাউন্ড বক্স বাজিয়ে কলেজ মিলনায়তনে এই পিকনিক করা হয়। এতে করে আশপাশের শ্রেনী পাঠদান চরমভাবে ব্যাহত হয় বলে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন।

ক্ষুদ্ধ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, ২০২২ সালের এইচএসসি মানবিক বিভাগের গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিষয়ক পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে শ্রেনি শিক্ষক প্রভাষক দিলরুবা ইয়াসমীন ওরফে রুবীর উদ্যোগে ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম লিন্টুর সহযোগিতায় ক্লাস পার্টির নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা তুলেন। ওই টাকা দিয়ে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ক্লাস পার্টির আয়োজন করেন। উচ্চ শব্দে সাউন্ড বক্স বাজিয়ে নাচ গান করে অনুষ্ঠানে কেক কাটা থেকে শুরু করে দুপুরের খাবার পর্যন্ত আয়োজন করা হয়। এছাড়া শ্রেনি কক্ষটিকে বেলুন ও ফুল দিয়ে সাজানো হয়। সেই সাথে উচ্চ শব্দে সাউন্ড বক্স বাজিয়ে উৎসব করা হয়। এ ধরনের উৎসবের কারনে আশপাশের শ্রেনি পাঠদান পর্যন্ত চরমভাবে ব্যাহত হয়। অনেক শিক্ষার্থী ক্লাস করতে না পারায় কলেজ থেকে চলে যান।

‘ক্লাস পার্টি’ নামক অনুষ্ঠানে সরকারি গোয়ালন্দ কামরুল ইসলাম কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল হালিম তালুকদার, ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম লিন্টু, সমাজ কর্ম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহসিনা পারভীন, যুক্তিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক পুতুল রানী দাস, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সোমা বোস, অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বিশ্বজিৎ কুমার, সমাজ কর্ম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নজির হোসেন মোল্লা, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক দিলরুবা ইয়াসমিন ওরফে রুবী, ভূগোল বিভাগের প্রভাষক রাহিমা খাতুন, ইংরেজী বিভাগের প্রভাষক রমেশ কুমার আগরওয়ালা, বাংলা বিভাগের অতিথি শিক্ষক সুমি আক্তার প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন ।

এ বিষয়ে কলেজের শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক যুক্তিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সামছুন্নাহার ছিদ্দীকা জানান, কলেজে কোন অনুষ্ঠান হলে শিক্ষক পরিষদকে অবহিত করতে হয়। কিন্তু আমি সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পরেও আমাকে জানানো হয়নি। পাঠদান ব্যাহত করে ‘ক্লাস পার্টি ‘ কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ক্লাস পার্টির ব্যাপারে কিছুই জানি না। উচ্চ শব্দে সাউন্ড বক্স বাজালে আশেপাশের শ্রেনি কক্ষে পাঠদান বাধাগ্রস্ত হবে এটাই স্বাভাবিক। ‘ক্লাস পার্টি ‘ পাঠ্যপুস্তকের অন্তর্ভুক্ত কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এব্যাপারে আমি বোর্ডের কোন নির্দেশনা পাইনি।

এব্যাপারে গার্হস্থ্য বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক দিলরুবা ইয়াসমিনের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আব্দুল হালিম তালুকদার মুঠোফোনে কথা হলো তিনি বলেন, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান বিষয়ের ‘ক্লাস পার্টি’ পাঠ্যপুস্তকের অন্তর্ভুক্ত। সাউন্ড বক্স বাজলেও আশেপাশের শ্রেনি কক্ষে পাঠদান বাধাগ্রস্ত হয়নি এবং সাউন্ড বক্স বাজানো বৈধ। আইনগতভাবে বক্স বাজিয়েই ‘ক্লাস পার্টি’ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।


শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.