শাহরাস্তি (চাঁদপুর) সংবাদদাতাঃ
চাঁদপুরের শাহরাস্তির বিভিন্ন স্থানে লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। রোদ ও ভ্যাপসা গরমে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সাধারণ মানুষ। বিদ্যুতের কোনো কোনো গ্রাহক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। অনেকে বিরক্তি প্রকাশ করে দিচ্ছেন ফেসবুকে পোস্ট।
লোডশেডিংয়ের কারণে শাহরাস্তিতে চিকিৎসা, শিক্ষা, শিল্প–কলকারখানা ও কৃষিতে নেমে এসেছে বিপর্যয়। লোডশেডিংয়ের কারণে ভোগান্তির মধ্যে আছে মানুষ। কলকারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। আউশ ও রোপা আমনের ক্ষেতে সেচ দিতে সংকটে পড়েছেন কৃষক। উপজেলার উপলতা এলাকার গৃহিণী জান্নাতুন ফেরদৌস বলেন, সারা দিনে কতবার বিদ্যুৎ যায়, তার হিসাব নেই। এক সপ্তাহ ধরে শুধু রাতেই দুই/তিন ঘণ্টা ধরে লোডশেডিং হচ্ছে। গরমের কারণে ঠিকমতো ঘুমাতে পারেন না। বাচ্চাটার ঠিকমতো পড়াশোনাও হচ্ছে না।
উপজেলার আয়নাতলী গ্রামের আবাসিক গ্রাহক আলমগীর হোসেন বলেন, সাত-আট দিন ধরে প্রচণ্ড গরমের পাশাপাশি ব্যাপকভাবে লোডশেডিং হচ্ছে। দিনে পাঁচ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না।এমন লোডশেডিং আগে কখনো দেখিনি। শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি ভোগান্তির মধ্যে আছেন।
ঠাকুরবাজারের বাজারের বাণিজ্যিক গ্রাহক অমল চন্দ্র পাল বলেন, দিনে-রাতে বিদ্যুৎ থাকছেই না। সময় অনুযায়ী বিদ্যুৎ নেওয়ার কথা থাকলেও তাও মানা হচ্ছে না। কোন কারণ ছাড়াই যখন ইচ্ছে তখনি বিদ্যুত নিয়ে যাচ্ছে।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি শাহরাস্তির কর্মকর্তারা বলছেন, গ্যাস–স্বল্পতার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় জাতীয় গ্রিড থেকে চাহিদার তুলনায় অনেক কম বিদ্যুৎ সরবরাহ পাচ্ছেন। এ কারণে ঘন ঘন লোডশেডিং দিতে হচ্ছে।
চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুত সমিতি-১–এর শাহরাস্তি উপজেলার ডিজিএম মোবারক হোসেন সরকার বলেন, শাহরাস্তির গ্রাহকসংখ্যা প্রায় ৮০২৪৭ হাজার। যার মধ্যে সংযোগ প্রাপ্ত আবাসিক গ্রাহক ৬৯০৫৫ জন, বাণিজ্যিক গ্রাহক ৮৭০৭ জন, সেচ গ্রাহক ৪৯৩ জন, শিল্প গ্রাহক ৬৫৮ জন, সিআই/সড়ক বাতি/অন্যান্য ১৩৩৪। এই পরিমাণ গ্রাহকের প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা গড়ে ১৯ মেগাওয়াট। তবে বর্তমানে পাওয়া যাচ্ছে ১৩/১৪ মেগাওয়াট করে। চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহের ঘাটতি থাকায় উপজেলায় দিনে ও রাতে লোডশেডিং হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, প্রতি মাসে প্রায় ৩০০ নতুন গ্রাহক সংযুক্ত হচ্ছে। দিন দিন গ্রাহক সংখ্যায় বেড়ে যাওয়া বিদ্যুতের চাহিদাও বাড়ছে। সেক্ষেত্রে সকলকেই বিদ্যুত সাশ্রয়ী হওয়ার আহবান জানান তিনি। পাশাপাশি প্রাকৃতিক দূর্যোগে সৃষ্ট বিভিন্ন সমস্যায় বিদ্যুত সরবরাহ নিশ্চিত করতে দ্রুত অফিসে জানানোর অনুরোধ করেন। অবৈধ সংযোগের ব্যাপারে তার কাছে জানালে তথ্যদাতার পরিচয় গোপন রেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাসও দেন।