কুমিল্লা দক্ষিন জেলা প্রতিনিধিঃ
লাকসাম উপজেলার দুইটি গুরুত্বপূর্ণ হাটবাজারে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।
অপরাধ নির্মূল করার লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নেন মুদাফরগঞ্জ ও বিজরা বাজার ব্যবসায়ীরা নিজেদের অর্থে ও সরকারি বরাদ্দ পেয়ে বাজারের দোকানসংলগ্ন গলিতে এবং বিভিন্ন সড়কে সুবিধাজনক স্থানে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেন বাজার পরিচালনা কমিটির।
জানা যায়, লাকসাম, বরুড়া,লালমাই ও শাহরাস্তি উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত মুদাফরগঞ্জ ও বিজরা বাজার। উপজেলার মনোহরগঞ্জ, লালমাই, বরুড়া ও শাহারাস্তি থানার বড় ব্যবসায়ীদের পাইকারী ও খুচরা ব্যবসার জোন হচ্ছে এ বাজারগুলোতে।এক কথায় এই দুইটি বাজারে তিন উপজেলার মোহনা। তিনটি উপজেলার প্রচুর জনসমাগম ঘটে এ বাজারগুলেতে।
বিভিন্ন সময়ে বাজারে রাতের অন্ধকারে চুরিডাকাতি, মাদক বিক্রি ও অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িয়ে আছে। এছাড়াও পণ্যপরিবহন ও পণ্যখালাসের জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট নিয়ম কানুন ও সময়সূচি না থাকার কারণে পণ্যবাহী বড় বড় ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, বাজারে ঢুকে পুরো রাস্তায় দখল করে রাখে। পণ্যখালাস করে ওইসব যানবাহন স্থান ত্যাগ না করা পর্যন্ত দীর্ঘসময় ধরে সৃষ্টি হয় যানজট। এমনকি সড়কের মোড়ে মোড়ে রাস্তার ওপর বিভিন্ন যানবাহন দাঁড় করিয়ে চাঁদা আদায় করে একপক্ষ। আরেক পক্ষ চেক করে গাড়িতে টোকেন (চাঁদা আদায়ের দলিল) আছে কি না। দীর্ঘদিন ধরে এই সড়ক ও বাজারে এমন নৈরাজ্য চলছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে একাধিকবার আলোচনাও হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই চলে আসছে।
বাজারকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হলে জনবহুল এসব হাট-বাজারে অপরাধ কর্মকাণ্ড অনেক কমে যাবে বলে মনে করেন তারা।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের উদ্বুদ্ধ করে তাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে হাট ও বাজারগুলোতে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে তারা।তাই বাজার পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দ সিদ্ধান্তে ও সকল ব্যবসায়ীরা মিলে নিজেদের অর্থ ও সরকারি বরাদ্দ পেয়ে দুইটি বাজারে দোকানসংলগ্ন গলিতে এবং বিভিন্ন সড়কে সুবিধাজনক স্থানে প্রায় ৯ লাখ টাকা ব্যয়ে মোট ৫৭টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়।
তার পাশাপাশি অলিগলির গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হেলোজিং লাইট স্থাপনে রাতেরবেলা লাইটের আলোতে আলোকিত পুরো বাজার এলাকায়।
মুদাফরগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম তুহিন বলেন, অনেক সময় সঠিক প্রমাণের অভাবে প্রকৃত অপরাধীরা পার পেয়ে যায়। এখন প্রকৃত অপরাধীকে শনাক্ত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আর বেগ পেতে হবে না। সে লক্ষ্যে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনতে এ উদ্যোগ নিয়েছে বাজার ব্যবসায়ীরা তাদের নিজেদের অর্থে ২৭ টি সিসি ক্যামেরা বিভিন্ন পয়েন্ট স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ১৬ টি হেলোজিং লাইট স্থাপনে করেছেন এ বাজারে।
বিজরা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম বলেন, বাজার ব্যবসায়ীদের অর্থে ও সরকারি ১ লাখ টাকা বরাদ্দে পেয়ে প্রায় ৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩০টি সিসি ক্যামেরা আনা হয়েছে। এর মধ্যে বাজারে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্ট ২০ টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে বাকী ১০ টি বসানো হবে। এতে বাজার দোকানদার ব্যবসায়ীরা ও বাইরের এলাকা থেকে হাটে আসা ব্যবসায়ী, ক্রেতা-বিক্রেতারা নিরাপত্তা বোধ করবেন।
সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (লাকসাম সার্কেল) মোঃ মহিতুল ইসলাম বুধবার দুপুরে বলেন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে তথ্য প্রযুক্তির সুবিধার মধ্যে সিসিটিভি ক্যামেরার কার্যকারিতা পরীক্ষিত। উপজেলার দুটি বড় বাজার মুদাফরগঞ্জ ও বিজরা বাজার সম্পূর্ণ সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে।
সিসি ক্যামেরা স্থাপনের ফলে বিশাল এই হাটের পুরোটাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে থাকবে। ফলে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সেখানে পৌঁছতে পারবে।এছাড়াও উপজেলা নেতৃবৃন্দের সাথে কথা হয়েছে উপজেলা বাজারসহ ইউনিয়ন সকল চোট বড় বাজেরের বিভিন্ন পয়েন্ট সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।