যুক্তরাজ্যে সিরিয়াল কিলার লুসি লেটবির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

আইন-অপরাধ আন্তর্জাতিক আরো
শেয়ার করুন...

অনলাইন ডেস্ক
সাত শিশুকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত ব্রিটিশ নার্স লুসি লেটবিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বিচারপতি গস এই রায় দেন। তিনি আরও ছয় শিশুকে হত্যার চেষ্টা করেছিলেন। তাকে যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে সবচেয়ে নিকৃষ্টতম সিরিয়াল কিলার হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে।

লুসি লেটবিকে (৩৩) সাজা ঘোষণা করেছে উত্তর ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার ক্রাউন কোর্ট। শুক্রবার তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। সোমবার আদালতে হাজির হতে না পারায় লেটবির নিন্দা করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক।

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি এটা কাপুরুষোচিত কাজ যারা এ ধরনের জঘন্য অপরাধ করে এবং পরে ভুক্তভোগীদের সামনে হাজির হতে পারে না। তার অপরাধের কারণে নিহতদের পরিবার এবং প্রিয়জনদের ওপর যে প্রভাব পড়েছে তা শুনতে না পারাও কাপুরুষোচিত কাজ।

লেটবি তার পরিচর্যায় থাকা শিশুদের রক্ত ও পেটে বাতাস ঢুকিয়ে, তাদের অতিরিক্ত দুধ খাইয়ে, তাদের শারীরিকভাবে নির্যাতন করে এবং ইনসুলিন দিয়ে তাদের দেহে বিষ ঢুকিয়ে হত্যা করতে চাইতো বলে আদালত শুনানিতে জানিয়েছে। লেটবির বিরুদ্ধে অভিযোগ এবং তার পরবর্তী দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর প্রশ্ন কীভাবে এতদিন সে তার অপরাধ গোপন করতে পেরেছে?

ব্রিটেনের ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিস (সিপিএস) শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেছে, তিনি ২০১৫ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে কাউন্টেস অব চেস্টার হাসপাতালে নবজাতক ওয়ার্ডে ১৩টি শিশুকে গোপনে নির্যাতন করেছিলেন।

প্রসিকিউটরদের বক্তব্য, লেটবি শিশুদের হত্যার পর তার সহকর্মীদেরকে বুঝাতো শিশুরা স্বাভাবিকভাবেই মারা গেছে। তবে হাসপাতালের চিকিৎসকরা মারা যাওয়া বা অপ্রত্যাশিতভাবে দুর্বল হয়ে যাওয়া শিশুর সংখ্যা মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার ঘটনা খেয়াল করেন। কিন্তু চিকিৎসকরা শুরুতে এর কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছিলেন না। এরপর পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করে।

যুক্তরাজ্যের পিএ মিডিয়া নিউজ এজেন্সি অনুসারে, ২০১৮ এবং ২০১৯ সালে লেটবিকে তদন্তের জন্য পুলিশ দুবার গ্রেপ্তার করেছিল। ২০২০ সালের নভেম্বরে তাকে আবার গ্রেপ্তার করা হয়।

কর্তৃপক্ষ তার ঠিকানা অনুসন্ধানের সময় তার লেখা কিছু নোট খুঁজে পেয়েছে। নোটগুলোতে লেখা ছিল, ‘আমি বেঁচে থাকার যোগ্য নই। আমি তাদের উদ্দেশ্যমূলকভাবে হত্যা করেছি কারণ আমি তাদের যত্ন নেওয়ার মতো যথেষ্ট ভাল নই।’ ‘আমি একজন ভয়ঙ্কর দুষ্ট ব্যক্তি’। ‘আমি খারাপ, আমি এই কাজ করেছি।’

ভুক্তভোগীদের পরিবারের ভাষ্য, তারা ভেবেছিলেন হয়তো কখনোই তাদের শিশুদের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে পারবেন না।

image_pdfimage_print

শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.