মনোহরগঞ্জে সহিংসতার আশঙ্কা টিসিবির স্মার্ট কার্ড বিতরণ নিয়ে ক্ষুব্ধ ১১ হাজার পরিবার

আইন-অপরাধ আরো কুমিল্লা চট্টগ্রাম পরিবেশ সারাদেশ
শেয়ার করুন...

মনোহরগঞ্জ (কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ
স্মার্ট কার্ডে টিসিবির পণ্য বিতরণের নামে আওয়ামী পুনর্বাসনের চেষ্টার অভিযোগে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার ১১ ইউনিয়নের প্রায় ১১ হাজার পরিবার। গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার পতনের পর আওয়ামী লীগের আমলে করা টিসিবির তালিকা যাচাই-বাছাই করে নতুন তালিকা করার নির্দেশ দেয় অন্তবর্তীকালীন সরকার। নতুন এই তালিকা জানুয়ারি থেকে পণ্য বিক্রির কথা থাকলেও মার্চেও শুরু করতে পারেনি।
জানা যায় বিগত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার আমলে টিসিবির তালিকায় শুধুমাত্র আওয়ামী পরিবারের সদস্য এবং নামে বেনামে তালিকা করে নামমাত্র পন্য বিক্রি করে বাকিগুলো কালোবাজারে বিক্রি করে দেয়া হতো। স্বৈরাচার হাসিনার পতনের পর নভেম্বর মাসে নতুন করে তালিকা করার নির্দেশনা দেয় সরকার। নির্দেশনা অনুযায়ী পুরনো তালিকা যাচাই-বাছাই করে যারা টিসিবির পণ্য পাওয়ার অযোগ্য তাদেরকে বাদ দিয়ে নতুন তালিকা করা হয়। নতুন তালিকায় জানুয়ারি মাস থেকে পণ্য বিক্রির কথা থাকলেও স্মার্ট কার্ডের অযুহাতে বিক্রি বন্ধ রাখা হয়। সম্প্রতি বিভিন্ন ইউনিয়নে স্মার্ট কার্ড বিতরণ শুরু করে উপজেলা প্রশাসন। খোঁজ নিয়ে দেখা যায় আওয়ামী আমলের পুরনো তালিকায় সুবিধাভোগীদের নামেই স্মার্ট কার্ড বিতরণ শুরু করে। পুরনো তালিকায় স্মার্ট কার্ড বিতরণের সংবাদে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে টিসিবির সুবিধা থেকে ১৭ বছর বঞ্চিত থাকা সাধারণ মানুষ। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন প্রশাসনে বসে থাকা আওয়ামী দোসররা আবারো আওয়ামী অপশক্তিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। এদিকে একে অপরের ওপর দায় চাপাচ্ছেন কর্মকর্তারা। বলছেন আগের তালিকা সরকার বাদ না দিলে আমাদের করার কিছু নেই।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এই উপজেলার ১১ ইউনিয়নে ১০ হাজার ৮৩৫টি টিসিবি সুবিধাভোগী পরিবার রয়েছে। গত নভেম্বর মাসে যাচাই-বাছাই শেষে নতুন তালিকা জমা নেয়া হয়। কিন্তু ১৭ বছর বঞ্চিত থাকা অসহায় পরিবারগুলোর স্মার্ট কার্ডের তালিকায় নাম আসেনি।

এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন রিজিয়া বেগম, অহিদুল বেপারী, জাহিদ, ফিরোজা বেগম, খাদিজা, ফাতেমা, আব্দুস সোবহানসহ অনেকেই। তারা বলেন খোঁজ নিয়ে জানতে পারি বিতরণ করা স্মার্ট কার্ডগুলো স্বৈরাচার আমলে সুবিধাভোগীদের নামে। নতুন করে তৈরি করা তালিকা অনুসারে স্মার্ট কার্ড না থাকায় তাদেরকে দেওয়া হবেনা স্বল্পমূল্যের পণ্য। পরে দুঃখ ভারাক্রান্ত হয়ে বলেন, ১৭ বছর ধরে বঞ্চিত ছিলাম এখনো বঞ্চিত হলে কষ্টের কথা কাকে বলবো। তারা ক্ষোভ জানিয়ে আরো বলেন সরকার পরিবর্তন হলেও তাদের দোসররা পরিবর্তন হয়নি। তারা আওয়ামী অপশক্তিকে পুনর্বাসন করছে। বাজার থেকে চড়া দামে চিনি, তেল, ডাল, ছোলা, চাল কেনা আমাদের মতো গরীব মানুষের জন্য কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তারা বলেন স্মার্ট কার্ড বাদ দিয়ে অথবা নভেম্বরে করা তালিকা অনুসারে বিগত দিনে বঞ্চিত অসহায় পরিবারের মাঝে টিসিবির পণ্য বিতরণের দাবি জানান ।
এসময় আরো বলেন পুরনো তালিকায় স্মার্ট কার্ড বিতরণে যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার দায় প্রশাসনকেই নিতে হবে।

সুবিধাভোগীদের টিসিবি পণ্য নতুন তালিকায় অনুযায়ী দেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহরিয়া ইসলাম বলেন, নতুন তালিকা আপলোড দেয়া হয়েছে পর্যায়ক্রমে সেগুলোও আসবে, তবে স্মার্ট কার্ড ছাড়া পণ্য দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।


শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.