অনলাইন ডেস্কঃ
ভোলার মনপুরা উপজেলার দক্ষিণে চরনিজাম সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে ভেসে আসছে একটি নাবিকবিহীন বিদেশি পুরনো জাহাজ। জাহাজের গায়ে লেখা আছে ‘আল কুবতান’। এটির আকার বড় পন্টুনের মতো। জাহাজের ভিতরে রয়েছে একটি এক্সকেভটর (ভেকু), একটি পাথর ভাঙার মেশিন এবং বড় বড় পাথরসহ বেশ কিছু সরঞ্জামাদি।
জাহাজটি বৃহস্পতিবার ভোলার মনপুরা উপজেলার চরনিজাম এলাকায় একটি চরে আটকা পড়ে। আজ শুক্রবার পর্যন্ত এটি কোন যায়াগা থেকে এসেছে তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। শুক্রবার (১৫ জুলাই) সকালের দিকে কোস্টগার্ডের একটি টিম জাহাজে কাছে যাওয়ার জন্য রওনা দিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের কর্মকর্তরা। তবে সমুদ্র উত্তাল থাকায় জাহাজের কাছে যেতে তাদের বেগ পেতে হচ্ছে। জনমানবহীন এরকম বিশাল জাহাজ ভেসে আসায় স্থানীয়দের মনে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, শুক্রবার সকালে বিদেশি জাহাজের আল কুবতানের তদারকি করতে চরমানিকা কোস্টগার্ডের একটি টিম ঘটনাস্থলে রওয়ানা হয়েছে বলে জানান মনপুরার কোস্টগার্ডের কন্টিজেন্ট কমান্ডার মো. আসলামুল হক। তবে নেটওর্য়াক সমস্যায় চরমানিকা কোস্টগার্ডের সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে মনপুরা উপজেলার চরনিজামের পূর্বপাশে বঙ্গোপসাগরে এল কুবতান নামের একটি জাহাজ ভাসতে দেখেন স্থানীয়রা। পরে বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান জাকির হোসেন ও উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করেন।
স্থানীয়রা আরো জানান, নাবিকবিহীন জাহাজটির উপরের অংশ খোলা। জাহাজটিতে পাথরবোঝাই। একটি ভেকু মেশিন, পাথর ভাঙার মেশিন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় মালামাল রয়েছে। জাহাজটিতে কয়েক কোটির টাকার সম্পদ রয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা ধারণা করছেন।
ভেসে আসা জাহাজের একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে জাহাজটির সঙ্গে ট্রলার বেঁধে রেখে গুরুত্বপূর্ণ মালামাল লুট করেছেন অনেকে। স্থানীয় একটি সূত্র দাবি করছে, এরই মধ্যে ট্রলারে করে জাহাজ থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকার মালামাল নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রশাসন দ্রুত জাহাজটি উদ্ধার করতে না পারলে জাহাজে রক্ষিত বাকি মালামালও নিয়ে যাবে ওই চক্রটি।
মনপুরা উপজেলার উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের অর্ন্তগত বিচ্ছিন্ন চরনিজামের চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন জানান, জাহাজের খবরটি স্থানীয়রা তাকে জানালে তিনি পুলিশ প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করেছেন।
মনপুরা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা দায়িত্বে থাকা চরফ্যাসনের ইউএনও আল নোমান জানান, জাহাজটির ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বৃহস্পতিবার রাতেই নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও নৌপুলিশকে অবহিত করা হয়েছে। দুর্গম নৌপথ ও সমুদ্র উত্তাল থাকায় জাহাজটি হেফাজতে নিতে দেরি হচ্ছে।