ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদসংস্থা বিবিসি তাদের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বিবিসি জানায়, বৃহস্পতিবার বালমোরাল ক্যাসল প্রাসাদে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের রাজকীয় বাসভবন বাকিংহাম প্যালেস এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘রানি আজ বিকেলে বালমোরালে শান্তিপূর্ণভাবে মারা গেছেন।’
রানি এলিজাবেথ গ্রীষ্মকালীন আবাস স্কটল্যান্ডের বালমোরাল ক্যাসল প্রাসাদে ছিলেন। মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) এ প্রাসাদে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে লিজ ট্রাসকে যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অনুমোদন দেন রানি।
ব্রিটেনকে সবচেয়ে বেশি সময় শাসন করেছেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। লন্ডনের মেফেয়ারে ইয়র্কের ডিউক এবং ডাচেস (পরে রাজা জর্জ এবং রাণী এলিজাবেথ)-এর প্রথম সন্তান এলিজাবেথ আলেকজান্ড্রা ম্যারি। সময়টা ১৯২৬ সালের ২১ এপ্রিল।
তার বাবা ১৯৩৬ সালে নিজের ভাই রাজা অষ্টম এডওয়ার্ডের পর সিংহাসনে বসেন। তখন থেকেই সিংহাসনের উত্তরাধিকারী ছিলেন ১০ বছরের এলিজাবেথ। ১৭ বছরের অপেক্ষায় অবসান ঘটে ১৯৫৩ সালে। এ বছরের ২ জুন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের মুকুট মাথায় নেন ২৭ বছরের এলিজাবেথ। তবে এক বছর আগে ১৯৫২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি রাজা জর্জ মারা গেলে, সেদিনই রানি হন এলিজাবেথ।
প্রাসাদেই ব্যক্তিগতভাবে শিক্ষিত হয়েছিলেন এলিজাবেথ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর নারী বিভাগ-অগজিলিয়ারি টেরটোরিয়াল সার্ভিসে যোগদান করে জনসাধারণের দায়িত্ব পালন শুরু করেছিলেন তিনি।
১৯৪৭ সালে গ্রিস ও ডেনমার্কের সাবেক প্রিন্স ডিউক অফ এডিনবরা ফিলিপকে বিয়ে করেন এলিজাবেথ। এই দম্পতির চার সন্তান; ওয়েলসের প্রিন্স চার্লস, প্রিন্সেন অ্যান, ইয়র্কের ডিউক প্রিন্স অ্যান্ড্রু এবং ওয়েসেক্সের আর্ল প্রিন্স এডওয়ার্ড।
বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা এই ব্রিটিশ শাসক প্রায়শই প্রজাতন্ত্রের অনুভূতি এবং রাজপরিবারের চাপে সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছেন। ১৯৯৭ সালে পুত্রবধূ ডায়ানার মৃত্যুর পর, ব্যাপক সমালোচিত হন এলিজাবেথ।
গ্রীষ্মকালীন ছুটি কাটাতে স্কটল্যান্ডের বালিমোর ক্যাসেলে অবস্থান করছিলেন রানি। সেখান থেকেই রানির অসুস্থতার কথা প্রথম প্রকাশ হয়।
জানানো হয়, চলাচলে সমস্যা দেখা দেয়ায় নতুন প্রধানমন্ত্রীকে নিয়োগ দিতে লন্ডনের বাকিংহ্যাম প্যালেসে ফিরতে পারবেন না রানি। তাই রানির ৭০ বছরের শাসনামলে এই প্রথম স্কটল্যান্ড থেকে নিয়োগ দেয়া হয় লিজ ট্রাসকে।
এর দু’দিন পর বৃহস্পতিবার নতুন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নির্ধারিত একটি বৈঠক বাতিল করেন রানি। জানানো হয়েছিল, রানির শারীরিক অবস্থা গুরুতর। চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণে আছেন তিনি। অবশেষে লন্ডন সময় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করে বাকিংহ্যাম প্যালেস।