রাহাদ সুমন,বানারীপাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি ॥ বরিশালের বানারীপাড়ায় সন্ধ্যা নদী এবং এর শাখা নদীতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মা ইলিশ নিধনের মহোৎসব চলছে। উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের ঢিলেঢালা অভিযানের কারণে রাত-দিন প্রকাশ্যে শত শত জেলে নৌকায় অসাধু জেলেরা কারেন্ট জাল দিয়ে অবাধে এ মা ইলিশ শিকার করছেন। নিষেধাজ্ঞার শুরু থেকে এ পর্যন্ত বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডা. অন্তরা হালদার,উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মুসতাহসিন তাসমিম রহমান অনিদ্র ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন রজনীর নেতৃত্বে সন্ধ্যা নদীতে অভিযান চালিয়ে ৭জন জেলেকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে দুই জনকে ১৬ দিন করে বিনাশ্রম কারাদন্ড ও পাঁচ জনকে ৫ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড দেওয়া হয়েছে। এসময় প্রায় এক লাখ মিটার নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল জব্দ করে পুড়িয়ে বিনষ্ট করা হয়। এছাড়া মঙ্গলবার ( ২৯ অক্টোবর) রাতে অভিযান কালে গ্রেপ্তার এড়াতে নৌকা থেকে সন্ধ্যা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ হওয়ার প্রায় ৪০ ঘন্টা পরে বৃহস্পতিবার ( ৩১ অক্টোবর ) দুপুরে নদীতে জেলে শহীদ সিকদারের (৭২) মরদেহ ভেসে ওঠে। পরে মরদেহ স্বজনরা উদ্ধার করে উপজেলার সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের মসজিদবাড়ি গ্রামে পারিবারিক করবস্থানে তাকে দাফন করেন। এ দুর্ঘটনার পরেও থেমে নেই মা ইলিশ শিকার। সন্ধ্যা নদীর তীরবর্তী বসবাসকারীসহ স্থানীয়দের অভিযোগ নদীতে অভিযান চলছে দায়সারা গোছের নামকাওয়াস্তে। এদিকে,অভিযানে জব্দ হওয়া বিপুল পরিমানের ইলিশ ইয়াতিম খানায় বিতরণের পাশাপাশি অভিযানে থাকাদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা করার অভিযোগ উঠেছে। বন্দর বাজারের মৎস্য আড়ৎদার ও বানারীপাড়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য সুধীর রঞ্জন অভিযোগ করে বলেন, ঢিলেঢালা অভিযানের সুযোগে রিল্যাক্স মুডে জেলেরা রাত-দিন সমানে সন্ধ্যা নদীতে কারেন্ট জাল দিয়ে অবাধে মা ইলিশ নিধন করছেন। নিধন করা এসব মা ইলিশ স্বল্প মূল্যে বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে গিয়ে বাড়ি বাড়ি ফেরী করে বিক্রি করা হচ্ছে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন রজনী বলেন,নিরাপত্তাহীনতার মাঝেও আমরা আমাদের সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছি । তবে জেলেরা নিজেরা সচেতন না হলে শুধু অভিযান করে ইলিশ নিধন বন্ধ করা সম্ভব না।
বানারীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি ) মো. মোস্তফা জানান, পুলিশ নিয়মিত সন্ধ্যা নদীতে মৎস্য অভিযানের দুটি টিমে রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা ডিউটি করছে।
বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডা. অন্তরা হালদার বলেন, সন্ধ্যা নদীর মা ইলিশ রক্ষায় এখন পর্যন্ত ৭জন জেলেকে আটক করে ভ্রাম্যমান আদালতে সাজা দেওয়া হয়েছে। অভিযানের সময় জেলেদের হামলার শিকার হচ্ছেন তারা। জনবল সংকট ও হামলার কারনে পুলিশের অনাগ্রহ থাকা সত্ত্বেও ঝুঁিক নিয়ে অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রয়েছে।