বাংলা একডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩ পাচ্ছেন সুমন কুমার দাস

আরো পরিবেশ সারাদেশ সিলেট
শেয়ার করুন...

দিরাই-শাল্লা প্রতিনিধি:তৌফিকুর রহমান তাহের
বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২৩’ পাচ্ছেন সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার কৃতিসন্তান, লোক গবেষক ও সাংবাদিক সুমন কুমার দাস। আগামী ফেব্রুয়ারিতে অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর হাতে এ পুরস্কার তুলে দিবেন।

বুধবার (২৪ জানুয়ারি) বাংলা একাডেমি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পুরস্কারের জন্য মনোনীত ব্যক্তিদের নাম জানিয়েছে। এবার সাহিত্যের বিভিন্ন বিভাগে ১৬ জনকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। এর মধ্যে ফোকলোর বিভাগে এ পুরস্কার পাচ্ছেন সুমন কুমার দাস।

অনুভূতি জানতে চাইলে গবেষক সুমন কুমার দাশ বলেন, এ সম্মাননা ওই সমস্ত সাধক, গায়ক, বাউল-ফকিরদের জন্য যাদের জীবনচর্চা, জীবনসংগ্রাম ও কাজ নিয়ে আমি লিখেছি।

এ ছাড়া বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন। একইসঙ্গে প্রিয়জন, সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীসহ সকলের প্রতিও কৃতিজ্ঞতা জানিয়েছেন।

প্রাকৃতজনদের আচার-কৃষ্টি-সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করে ইতোমধ্যেই ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন সুমন কুমার দাস। ১৯৮২ সালের ১২ সেপ্টেম্বর তাঁর জন্ম সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা উপজেলার সুখলাইন গ্রামে। তবে এখন সিলেট নগরের বাসিন্দা। পেশায় সাংবাদিক। ২০০৪ সাল থেকে তিনি জাতীয় গণমাধ্যম প্রথম আলোতে যুক্ত রয়েছেন।

লোকসংস্কৃতি গবেষক, প্রাবন্ধিক, আখ্যানকার হিসেবে তিনি সুপরিচিত। অবসর আর কাজের ফাঁকে হাওরাঞ্চলসহ দেশের নানা প্রান্ত ঘুরে সংগ্রহ করেছেন অসংখ্য লোকগান, লোকনাট্য ও পাঁচালির পাণ্ডুলিপি। তাঁর সংগ্রহে পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি লোকগান রয়েছে। বেদে-বাইদ্যানিদের গান, ভিক্ষুক-সংগীত, ধামাইলগান, জারি-মার্সিয়া, পল্লিগীতি, মাজার-সংগীত, ঢপযাত্রা থেকে শুরু করে বাউল-ফকির পদাবলি কোনওটাই তাঁর চোখ এড়ায়নি।

বাংলার বিচিত্র লোকগান ও লোকসংস্কৃতি নিয়ে গবেষণা করে বিশিষ্টতা অর্জন করেছেন। গ্রামীণ মানুষের সাংস্কৃতিক জীবনযাপনকে নাগরিক সমাজে নিরন্তর পরিচয় করিয়ে চলছেন। বাংলাদেশ ও কলকাতা থেকে প্রকাশিত তাঁর রচিত ও সম্পাদিত বইয়ের সংখ্যা ষাটের অধিক।

লোকসাহিত্য নিয়ে লেখা তাঁর অসংখ্য প্রবন্ধ-নিবন্ধ জাতীয়-আন্তর্জাতিক সাহিত্য-সাময়িকী এবং জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর রচিত বইয়ের মধ্যে ‘লোকায়ত জীবন ও লোকসংস্কৃতি’, ‘বাংলাদেশের বাউল-ফকির : পরিচিতি ও গান’, ‘বাউলকোষ’, ‘লোকসংস্কৃতি লোকসাধক’, ‘লোকগান লোকসংস্কৃতি’, ‘বাউলসাধনা, লালন সাঁই ও অন্যান্য’, ‘লোকভাবন’, ‘শাহ আবদুল করিম : জীবন ও গান’, ‘গান থেকে গানে’, ‘লোকগানের বিচিত্র ধারা’, ‘লোকসাধকের দরবারে’, ‘ধীর পায়ে ধূলিপথে’, ‘লোকায়ত বাংলার পথ ধরে’, ‘বেদে-সংগীত’ উল্লেখযোগ্য। তাঁর সম্পাদিত বইয়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হচ্ছে : ‘দুর্বিন শাহ সমগ্র’, ‘বাংলাদেশের ধামাইল গান’ ও ‘আরকুম শাহ সমগ্র’।

বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২৩ প্রাপ্ত অন্যরা হলেন- কবিতায় শামীম আজাদ, কথাসাহিত্যে নূরুদ্দিন জাহাঙ্গীর ও সালমা বাণী, প্রবন্ধ–গবেষণায় জুলফিকার মতিন, অনুবাদে সালেহা চৌধুরী, নাটক ও নাট্যসাহিত্যে (যাত্রা, পালা নাটক, সাহিত্যনির্ভর আর্টফিল্ম বা নান্দনিক চলচ্চিত্র) মৃত্তিকা চাকমা ও মাসুদ পথিক, শিশুসাহিত্যে তপংকর চক্রবর্তী, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায় আফরোজা পারভীন ও আসাদুজ্জামান আসাদ, বঙ্গবন্ধুবিষয়ক গবেষণায় সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল ও মো. মজিবুর রহমান, বিজ্ঞান–কল্পবিজ্ঞান–পরিবেশবিজ্ঞানে ইনাম আল হক, আত্মজীবনী–স্মৃতিকথা–ভ্রমণকাহিনী-মুক্তগদ্যে ইসহাক খান এবং ফোকলোরে তপন বাগচী।


শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.