মিন্টু ইসলাম শেরপুর বগুড়া প্রতিনিধি:
বগুড়ার শেরপুরে গোপনে বউকে তালাক দেওয়ার ঘটনায় স্বামীকে ফিরে পেতে গৃহবধূর অনশন। জানা যায়, উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নে স্ত্রীর মর্যাদা পেতে ১১ দিন ধরে গ্যাস ট্যাবলেট হাতে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে অনশন করছেন সুমি আক্তার রনি (৩০) নামের এক গৃহবধূ। সে ওই ইউনিয়নের গুয়াগাছি গ্রামের আবু তাহেরের মেয়ে। রোববার (১০ মার্চ) দুপুরে জয়লা আলাদি গ্রামের এ ঘটনা ঘটে। জানা যায়, সুঘাট ইউনিয়নের গুয়াগাছি গ্রামের আবু তাহেরের মেয়ে সুমি আক্তার রনির সাথে পার্শ্ববর্তী জয়লা আলাদি গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে পলাশ রায়হানের সঙ্গে ২০১৮ সালে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর তারা ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে ঢাকার একটি কাজি অফিসে গিয়ে বিবাহ করেন। বিয়ের বিষয়টি গোপন রেখে শেরপুর শহরে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে ৩ বছর সংসার করে তারা। এরমাঝে ওই গৃহবধুুর স্বামী পলাশ রায়হানের একটি বেসরকারী কোম্পানিতে চাকরি হওয়ার সুবাদে ঢাকায় চলে যান। পলাশ রায়হানকে বাড়ি থেকে বিয়ের চাপ দিলে তাদের বিয়ের বিষয়টি পরিবারকে জানায়। কিন্তু পলাশের পরিবার তা অস্বীকার করে। এ ঘটনায় গত ১ মার্চ সকালে সুমি আক্তার রনি স্ত্রীর দাবিতে ওই ছেলের বাড়িতে এসে অনশন করে। পরে বিষয়টি স্থানীয় মাতব্বর ও জনপ্রতিনিধিদের জানালে তারা শালিসি বৈঠক বসে। তখন পলাশ রায়হান জানান আমি তাকে গত ১২ ফেব্রুয়ারী তালাক দিয়েছি। এ কথা বলে ওই বৈঠক থেকে পালিয়ে যায়। এরপর সালিসি বৈঠকের মাতব্বর ও জনপ্রতিনিধিরা সুমি আক্তার রনিকে শুক্রবার ১ মার্চ তার মা বাবার হেফাজতে রেখে যায়। পরে পলাশ রায়হান বাড়ীতে না আসায় সুমি আক্তার রনি ওই দিনেই হাতে গ্যাসট্যাবলেট নিয়ে বসে পড়েন স্বামীর অপেক্ষায়। এরপর ১১ দিন অতিবাহিত হলেও কেউ সুমি কে সড়াতে পারেনি।
সুমি আক্তার রনি বলেন, আমি স্ত্রীর মর্যাদা না পেলে এখানে আমার হাতে থাকা গ্যাসট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করবো। লোকমুখে শুনেছি আমার স্বামী আমাকে তালাক দিয়েছে। কিন্তু কোন পেপার আমি হাতে পাইনি। এটা আমার স্বামীর বাড়ি। এখান থেকে কোথাও যাবনা। যদি যেতে হয় আমার লাশ যাবে। এ বিষয়ে পলাশ রায়হানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বনিবনা না হওয়াতে ডিভোর্স দিয়েছি। রায়হান পলাশের বাবা ও মা জানান, আমার ছেলে গোপনে বিয়ে করেছে এবং তালাকও দিয়েছে আমরা কিছুই জানিনা। মেয়ে এসে অনশন করছে। কিন্তুু ছেলে চাকুরীতে গেছে। তার সঙ্গে কথা বলেছি সে বলছে তাকে নিয়ে সংসার করবেনা।
শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. রেজাউল করিম রেজা জানান, বিষয়টি অবগত হলাম দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে শেরপুর উপজেলা নির্বাহি অফিসার সুমন জিহাদি বলেন, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে বিষয়টি দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করবো। যেন কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।