পৃথিবীর কেন্দ্রে ‘গোলযোগ’, আশঙ্কায় বিজ্ঞানীরা

তথ্য প্রযুক্তি পরিবেশ সৌরজগত
শেয়ার করুন...

অনলাইন ডেস্কঃ পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠের নিচে গলিত ধাতু এবং ম্যাগমার সমুদ্রে ঘেরা আয়রন বলের আকারে জমাট হয়ে রয়েছে। যাকে পৃথিবীর কেন্দ্র বলা হয়। এটা এতটাই গরম যে প্রতি ঘণ্টায় এক ট্রিলিয়ন কাপ কফি বানাতে পারে অর্থাৎ পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের জন্য ১০০ কাপ কফি। হঠাৎ যদি পৃথিবীর কেন্দ্র বা কোর অস্বাভাবিক বা ঠাণ্ডা হয়ে যায় তাহলে কী হবে? সত্যিই বিষয়টা উদ্বে‌গের।

সম্প্রতি বিজ্ঞান বিষয়ক সাময়িকী নেচার জিওসায়েন্সে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন, পৃথিবীর কেন্দ্রের তরল অংশ ঠাণ্ডা হয়ে কঠিন শিলায় পরিণত হচ্ছে।
ভূ-তাত্ত্বিকদের গবেষণায় উঠে এল এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। তারা জানিয়েছেন, পূর্বদিকের ঘনত্ব ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, উল্টোদিকে পশ্চিম অংশের ঘনত্ব সেই তুলনায় প্রায় স্থির রয়েছে। আপাতত এর ফলে বড় ধরণের কোনো বিপদের আশঙ্কা না থাকলেও মহাশূন্যে সব গ্রহই নির্দিষ্ট ভারসাম্যের কারণে টিকে থাকে। তাই আগামীতে এই পরিবর্তনের কেমন প্রভাব পড়তে পারে, তা নিয়ে বেশ চিন্তিত বিজ্ঞানীরা।
পৃথিবীর কেন্দ্র মূলত লোহা এবং নিকেল দিয়ে গঠিত। প্রবল তাপে গলিত অবস্থায় থাকা এই তরল অংশও ক্রমশ কঠিন হয়ে আসছে। গত ১০০ বছরের বিভিন্ন ভূমিকম্প থেকে পাওয়া সিসমিক তরঙ্গের তথ্য সে-কথা প্রমাণ করেছে। কিন্তু তার থেকেও চিন্তার বিষয়, এই ঘনীভবন সর্বত্র একই গতিতে ঘটছে না। পূর্ব গোলার্ধে, অর্থাৎ ইন্দোনেশিয়ার নীচে যত দ্রুত ঘনীভবন ঘটছে, আমেরিকার নিচে তার গতি অনেকটাই কম।
যদি পৃথিবীর কেন্দ্র একেবারে ঠান্ডা হয়ে যায় তাহলে এটি কোনো বিদ্যুৎ তৈরি করবে না এবং ম্যাগনেটিক ফিল্ড নষ্ট হয়ে যাবে। ম্যাগনেটিক ফিল্ড না থাকলে বায়ুমণ্ডলও থাকবে না। ফলে পৃথিবীর অবস্থা মঙ্গল গ্রহের মতোই হবে। কোনো অক্সিজেন থাকবে না, পানি বা পাথর কিছুই গরম হবে না, কোনো রকম গ্যাস বের হবে না, ধীরে ধীরে পৃথিবী শীতল হতে থাকবে। আগ্নেয়গিরি থেকে লাভা নির্গমন হবে না। টেক্টনিক প্লেট স্থির হয়ে যাবে। ভূমিকম্প হবে না। পৃথিবীতে প্রাণের কোনো অস্তিত্বই থাকবে না। আমাদেরকে পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে।
এটা তো সত্য যে আজ না হোক সুদূর ভবিষ্যতে পৃথিবী ঠাণ্ডা হয়ে যাবে, তখন আমাদেরকে এই দুনিয়ায় ছেড়ে অন্য কোথাও পাড়ি দিতে হবে। তাছাড়া সকলেরই মৃত্যু ঘটবে।


শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *