নারায়ণগঞ্জে সিপিবি হরতাল রাস্তা অবরোধ দিয়ে সরকার পতনের ঘোষনা

অর্থনীতি ঢাকা রাজনীতি সারাদেশ
শেয়ার করুন...

মোহাম্মদ রায়হান বারি, নারায়ণগঞ্জ থেকেঃ
ভোজ্য তেল নিয়ে কারসাজি, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির পাঁয়তারা, বাজার সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম, জনগণের ভোটাধিকার হরণের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ ও ব্যর্থ বাণিজ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিবি নারায়ণগঞ্জ শহর কমিটি ২০ মে শুক্রবার বিকাল ৪ টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করে।

সমাবেশ সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিবির নারায়ণগঞ্জ শহর কমিটির সভাপতি আঃ হাই শরীফ। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিবির নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা শিবনাথ চক্রবর্তী, বিমল কান্তি দাস, কমরেড সুজয় রায় চৌধুরী বিকু, শাহানারা বেগম, কমরেড মৈত্রী ঘোষ, শিশির চক্রবর্তী, শুভ বণিক ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি ইবনে সানি দেওয়ান প্রমুখ।

সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, রাষ্ট্র ও সরকার লুটেরা ব্যবসায়ীদের পাহারা দিচ্ছে। মূলত সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। বর্তমান সরকার এদের সকল প্রকার সহযোগিতা করছে। মানুষকে জিম্মি করে, কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ভোজ্যতেলের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ানো হয়েছে। এই সরকার সিন্ডিকেট ও মজুতদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে বরং তাদেরই সহযোগিতা করছে। বর্তমান সরকারই এসব কারসাজির মূল হোতা। আমরা ভোজ্যতেল নিয়ে কারসাজি সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ ও সরবরাহ নিশ্চিত করার জোর দাবি জানিয়েছিলাম কিন্তু সরকার কোন ব্যবস্থা নেয়নি। বরং নতুন করে সরকার বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির পাঁয়তারা শুরু করে দিয়েছে; গ্যাসের মূল্য তো আগেই বাড়িয়েছে। ২০১৪ সাল ও ২০১৮ সালের মত আবারও একটা কারচুপির নির্বাচন করে গায়ের জোরে পুনরায় রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার ষড়যন্ত্র করতে শুরু করে দিয়েছে। গণতন্ত্র ও মানুষের স্বাধীনতা খর্ব করে চলেছে।

আমরা অবিলম্বে সরকারের এসকল অগণতান্ত্রিক কর্মকা- বন্ধ করার জোর দাবি জানাচ্ছি। তেলের দাম কমানো ও দেশের সংকট পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে দক্ষ ও দুর্নীতিমুক্তভাবে তেলসহ নিত্যপণ্যের পর্যাপ্ত মজুত গড়ে তোলার দাবি জানাচ্ছি। দেন দরবার করে লুটেরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কিছু পাওয়া যাবে না, এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে। সারাদেশে রেশন প্রদান ও ন্যয্যমূল্যের দোকান চালু করতে হবে। ব্যাবসায়ী সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে। বিশেষ প্রণোদনা দিয়ে দেশে তেলসহ নিত্যপণ্যের উৎপাদন বাড়াতে হবে এবং মজুত পণ্যের সুষম বন্টন নিশ্চিত করতে হবে।

বাণিজ্যমন্ত্রীকে পদচ্যুত করার আহ্বান জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, দুর্নীতিবাজ অযোগ্য মন্ত্রী, আমলা আর কমিশন ভোগীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। বাণিজ্যমন্ত্রীকে এই মুহূর্তে পদত্যাগ করতে হবে।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, সরকার জনগনের সুরক্ষা দিতে সম্পুর্ন ব্যার্থ হয়েছে। সাধারণ জনগণের আয় বাড়াতে পারেনি, অথচ বেশি দামে নিত্যপণ্য কিনতে বাধ্য করে লুটেরা ব্যবসায়ীদের পকেট ভারী করছে। সাধারণ মানুষকে আজ প্রয়োজনের তুলনায় কম খেয়ে বাঁচার চেষ্টা করতে হচ্ছে। তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে মানুষ যখন দিশেহারা তখন সরকারের মন্ত্রী বলছেন,‘মূল্য বৃদ্ধির প্রশ্নে সরকারের কিছুই করার নেই।’ আমরা বলি “এই সরকারকে আর ক্ষমতায় রাখার দরকার নেই। সাধারণ মানুষের পকেট কাটার সরকার আর না।”

নেতৃবৃন্দ বলেন, দাম কমানোর উদ্যোগ না নিলে, গণবিরোধী কর্মকান্ড থেকে সরে না আসলে বামপন্থী অন্যান্য দলগুলো সাথে নিয়ে হরতাল, অবরোধের মত কঠিন কর্মসূচি দেয়া হবে। দরকার হলে এ সরকারের পতন ঘটানো হবে। এ আন্দোলনে দেশের শ্রমিক কৃষক মেহনতি মানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।


শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.