মনপুরা উপজেলা প্রতিনিধিঃ
ভোলা জেলার মনপুরা উপজেলায় নিন্মচাপ ও পূর্ণীমার প্রভাবে মেঘনার পানি বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হওয়ায় ৪-৫ ফুট জোয়ারের পানিতে মূল ভূখন্ডের নি¤œাঞ্চল, লঞ্চঘাট এলাকা, চরাঞ্চল সহ বেড়ীর বাহিরে প্লাবিত হয়েছে। এতে ১৫ গ্রামের ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এদিকে উপজেলার মনপুরা ইউনিয়নের কাউয়ারটেকে ঢাকাগামী লঞ্চ ঘাট এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়। ওই লঞ্চঘাট এলাকার ডিসি রোডের ওপর দিয়ে জোয়ারে পানি প্রবাহিত হয়। এছাড়াও বেড়ীবাঁধহীন সদ্য ঘোষিত নতুন চর কলাতলী ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকায় ৫ ফুট জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কলাতলী চরের রাস্তাঘাট ছিঁড়ে যায় অনেক পুকুরের মাছ চলে যায় অনেক ঘরবাড়ি ডুবে যায় ইউপি সদস্য মোঃ রহমান। অপরদিকে বিচ্ছিন্ন চরনিজাম, বদনারচর, ঢালচর ও চর শামসুদ্দিনে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ওই সমস্ত চরে বসবাসরত ২০ হাজারের ওপরে মানুষ বুধবার ও বৃহস্পতিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে বলে জানান চরে বসবাসরত বাসিন্দারা। মেঘনার পানি বুধবার বিপদসীমার ৬৯ সেন্টিমিটার ও বৃহস্পতিবার ৭০ সেন্টিমিটার ওপর প্রবাহিত হয়েছে বলে জানান পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এর ডিভিশন-২ এর উপসহকারি প্রকৌশলী আবদুর রহমান। গত দুই দিন নি¤œচাপের পাশাপাশি পূর্ণীমার প্রভাবে মেঘনার পানি বিপদসীমার উর্ধ্বমুখী হওয়ায় জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। উপজেলার মনপুরা ইউনিয়নের কাউয়ারটেক এলাকার বাসিন্দা মিজান, বাশার, সালেকা, আন্দিরপাড় এলাকার জসিম, নিজাম, রাজিব, হাজিরহাট ইউনিয়নের দাসেরহাট এলাকার বাবলু, সিরাজ, মরিয়ম, সোনারচর গ্রামের বাসিন্দা প্রাণকৃষ্ণ, মিলন চন্দ্র সহ অনেকে জানান, জোয়ারের পানিতে ঘর-বাড়ি সব ডুবে গেছে। প্রতিদিন জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাই ভয় হচ্ছে জলোচ্ছ্বাস হয় কিনা। রাতে বেলায় জোয়ারের পানি বেশি হওয়ায় খাটের ওপর নির্ঘুম কাটাতে হয়। সরেজমিনে বুধবার ও বৃহস্পতিবার ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার ১নং মনপুরা ইউনিয়নের পূর্ব আন্দিরপাড়, পশ্চিম আন্দিরপাড়, কাউয়ারটেক, ঈশ্বরগঞ্জ, কূলাগাজী তালুক গ্রাম ও হাজিরহাট ইউনিয়নের দাসেরহাট, চরফৈজুদ্দিন, সোনারচর, চরযতিন, চরজ্ঞান গ্রাম ও উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের আলমনগর ও মাষ্টারহাট এলাকার বেড়ীর বাহিরে ও ভিতরে ৪-৫ ফুট জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়। এছাড়াও লঞ্চঘাট এলাকার ডিসি রোডের ওপর দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবাহিত হতে দেখা গেছে। এছাড়ও সদ্য ঘোষিত কলাতলি ইউনিয়নের চরখালেক, মাছুয়াখালী ও কলাতলী গ্রামসহ পুরো ইউনিয়ন প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে ১ নং মনপুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমানত উল্লা আলমগীর জানান, ৪-৫ ফুট জোয়ারের পানিতে ৫ গ্রামের বেড়ীর বাহিরে ও ভিতরে প্লাবিত হয়। এছাড়াও কাউয়ারটেক এলাকার ডিসি রোডের ওপর জোয়ারের পানি প্রবাহিত হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভিভিশন-২ এর উপসহকারি প্রকৌশলী আবদুর রহমান জানান, জোয়ারের পানিতে চরাঞ্চলসহ বেড়ীর বাহিরে ৪ ফুট জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে। মনপুরা উপজেলার দায়িত্বে থাকা চরফ্যাশন উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আল-নোমান জানান, মেঘনার পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়ে নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পরিস্থিতি অভজারবেশন করা হচ্ছে।