অনলাইন ডেস্কঃ বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই রকেট চিনের। কিন্তু চিন বলছে, এই রকেট তাদের নয়। চাঁদে এই মহাকাশ আবর্জনা বহনকারী রকেটের ধ্বংসাবশেষ আছড়ে পড়লে তার কী প্রভাব পড়তে পারে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন বিজ্ঞানীরা।
কয়েক ঘণ্টায় ৯,৩০০ কিমি গতিবেগে চাঁদে আছড়ে পড়বে রকেটের ধ্বংসাবশেষ, প্রভাব নিয়ে চিন্তায় বিজ্ঞানীমহল
বড় ঘটনা ঘটতে চলেছে আজ, যা নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন সারা বিশ্বের বিজ্ঞানীমহল। চাঁদের (Moon) সঙ্গে ধাক্কা লাগতে চলেছে মহাকাশের প্রায় ৩ টন আবর্জনা (Space Junk) বহনকারী একটি রকেটের ধ্বংসাবশেষের (Discarded Rocket)। আর তা নিয়েই চিন্তিত মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। তাঁরা দাবি করেছেন যে, শুক্রবার অর্থাৎ ৪ মার্চই এই ভয়ঙ্কর ঘটনাটি ঘটতে পারে। মহাকাশ বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে, এমনটা হলে চাঁদে প্রায় ১০ থেকে ২০ মিটারের একটি গর্ত তৈরি হতে পারে। কিন্তু চাঁদে তৈরি হওয়া সেই গর্তের ফলে মহাকাশে তার কী প্রভাব পড়তে পারে, তা বুঝতে কয়েক সপ্তাহ, এমনকি কয়েক মাসও লেগে যেতে পারে।
২০১৪ সালে লুনার মিশনের অংশ হিসেবে মহাকাশে একটি রকেট পাঠিয়েছিল চিন। বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন যে, এটি সেই রকেটেরই ধ্বংসাবশেষ। যদিও এই দাবি সম্পূর্ণ ভাবে নস্যাৎ করেছে বেজিং। শি জ়িনপিংয়ের দেশটি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে যে, এই রকেট তাঁদের দেশের নয়। বিজ্ঞানীরা এর আগে এটিকে ফ্যালকন-নাইন স্পেস বলে দাবি করেছিলেন। পরে সেই ধারণা ভুল বলে প্রমাণিত হয় এবং বিজ্ঞানী বিল গ্রে দাবি করেন যে, এই মহাকাশযানটি আসলে চিনের। একটা সময় এ-ও মনে করা হয়েছিল যে, এই রকেটটি এলন মাস্কের স্পেসএক্স প্রজেক্টের।
বিগত বেশ কিছু দিন যাবৎ মহাকাশ বিজ্ঞানী ও পর্যবেক্ষকরা এই রকেটের অবস্থান এবং গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করেছেন। আর তারপরই বিজ্ঞানীমহল আশঙ্কা করছে যে, শুক্রবার, ৪ মার্চ প্রায় ৯,৩০০ কিলোমিটার বেগে চাঁদের দূরবর্তী অংশে রকেটের ধ্বংসাবশেষ আছড়ে পড়তে পারে যা টেলিস্কোপেরও চোখ এড়িয়ে যাবে খুব সহজেই। বিজ্ঞানীরা আরও জানিয়েছেন যে, এমনটা যদি সত্যিই হয়, তাহলে ১০-২০ মিটার গর্ত তৈরি হতে পারে চাঁদের বুকে। এমনিতেই অসংখ্য গর্ত নিয়ে প্রদক্ষিণ করে চাঁদ। তার উপরে আবার সেখানে আরও গর্ত তৈরি হলে সংশয়ের রীতিমতো কারণ রয়েছে বলে বিজ্ঞানীরা আরও জানিয়েছেন।
মহাকাশ বিজ্ঞানী বিল গ্রে বলছেন, “স্পেস জাঙ্কটি অত্যন্ত দ্রুত গতির সঙ্গে চাঁদের দিকে ধেয়ে আসছে। আগামী দিনে যদি আমরা এই নিয়ে কোনও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ না করি, তাহলে ভবিষ্যৎে বড় সমস্যার সম্মুখীন হতে চলেছি।” বিল গ্রে উদ্বেগ প্রকাশ করে আরও বলছেন, রকেটের ঠিক অংশটি চাঁদে আঘাত করবে, সে বিষয়ে এখনও পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাঁর দাবি, এই রকেট ধ্বংসাবশেষ চাঁদের সঙ্গে ধাক্কা খাওয়ার পরে মহাকাশে কী প্রভাব ফেলবে, তা বুঝতে বেশ কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাসও লেগে যেতে পারে।
প্রসঙ্গত, গত জানুয়ারি মাসে এহেন মহাকাশ বিজ্ঞানী বিল গ্রেই দাবি করেছিলেন যে, মহাকাশ ধ্বংসাবশেষ বা স্পেস জাঙ্ক চাঁদের খুব কাছাকাছি চলে এসেছে। যদিও পরবর্তীতে তা কক্ষপথ পরিবর্তন করে এবং সেই স্পেস জাঙ্কই ৪ মার্চ, শুক্রবার চাঁদের উপরে আছড়ে পড়তে চলেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সূত্রঃ টিভি৯