
আব্দুর রাজ্জাক বাপ্পী,ঠাকুরগাঁওঃ ঠাকুরগাঁওয়ের বুড়ি বাঁধ সেচ প্রকল্পের শান্ত জলরাশির বুকে নতুন আকর্ষণ যুক্ত হয়েছে এক বিশাল মৎস্য ভাস্কর্য।
প্রায় ৩০ ফুট দীর্ঘ এই শুভ্র ভাস্কর্যটি এখন জেলার মানুষের কাছে একটি নতুন পরিচয়ের প্রতীক হয়ে উঠেছে। এটি দেখতে প্রতিদিন দূর দূরান্ত, থেকে ছুটে আসছেন হাজারো দর্শনার্থী, যা স্থানটিকে পরিণত করেছে এক প্রাণবন্ত মিলনমেলায়।
সদর উপজেলার চিলারং মৌজার রুহিয়া সড়কের পশ্চিমে অবস্থিত এই মৎস্য চত্বরটি এখন ঠাকুরগাঁওয়ের অন্যতম জনপ্রিয় বিনোদন কেন্দ্র। বুড়ি বাঁধের চারপাশের মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক দৃশ্য, পাখির কলরব, আর সুইস গেটের জলরাশি এখানে এক প্রশান্তির আবহ তৈরি করেছে।
দিনাজপুর থেকে আসা দর্শনার্থী কনিকা তিগ্যা মুগ্ধ হয়ে বলেন, “সুক নদীর বুকে সুইস গেটের জলতরঙ্গ, বিশাল জলাশয়ের কচুরিপানার সাদা-নীল ফুল, আর এই শুভ্র মৎস্য ভাস্কর্য সব মিলিয়ে এক কথায় ফ্যান্টাস্টিক! ব্যস্ত জীবনের ক্লান্তি ভুলে এখানে এসে স্বর্গের সুখ খুঁজে পেলাম।”
স্থানীয় ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এই ভাস্কর্যটি নির্মাণের পর থেকে এলাকার আকর্ষণ অনেক বেড়েছে। এটি এখন শুধু একটি শিল্পকর্ম নয়, বরং ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষের জন্য একটি নতুন বিনোদন কেন্দ্র। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সুলতানুল ফেরদৌস নম্র চৌধুরীও এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় মাত্র ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই ভাস্কর্যটি শুধু সৌন্দর্যবর্ধন নয়, বরং প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণের এক নতুন বার্তা নিয়ে এসেছে। এর ডিজাইন এমনভাবে করা হয়েছে যে, মনে হয় যেন মাছটি জল থেকে লাফিয়ে উঠেছে। প্রকৃতি ও জীবন ক্লাবের উপদেষ্টা আবু মহিউদ্দিন বলেন, “এই ভাস্কর্যটি আমাদের নদী ও মাছের গুরুত্ব মনে করিয়ে দিচ্ছে। এটি দেখে মানুষ প্রকৃতি রক্ষার জন্য আরও সচেতন হবে। বিশিষ্ট শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিদ প্রফেসর মনতোষ কুমার দে বলেন, “আগে এই অঞ্চলে অনেক মাছ পাওয়া যেত, যা এখন কমে গেছে। এই ভাস্কর্যটি প্রকৃতি রক্ষার প্রতীকীভাবে তুলে ধরেছে।
উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নির্মিত এই ভাস্কর্যটির বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম বলেন, “দর্শনার্থীদের জন্য স্থানটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার পাশাপাশি মৎস্য অভয়ারণ্য স্মরণ করে ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম যাকারিয়া বলেন, পর্যটকদের জন্য শৌচাগার ও বসার আসন রয়েছে সেখানে। দর্শনার্থীরা একদিকে যেমন আনন্দ উপভোগ করছেন, অন্যদিকে এই বধের কারনে সহজেই সেচ সুবিধা ভোক করছেন স্থানীয় চাষিরা। এতে চাষিদের অতিরিক্ত ব্যয় কমায় খুশি স্থানীয় চাষিরা।