রাহাদ সুমন, বানারীপাড়া (বরিশাল) থেকেঃ
বরিশালের উজিরপুরে নিখোঁজের ৪ দিন পর দীপ্ত মণ্ডল নামের তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রের বস্তাবন্দি লাশ খাল থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একই এলাকার ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩১ মে) ভোর সাড়ে ৫টায় উপজেলার হারতা-সাতলা খাল থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। দীপ্ত মণ্ডল (৮) উজিরপুর উপজেলার হারতা ইউনিয়নের কাজী বাড়ি গ্রামের দীপক মণ্ডলের ছেলে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন একই এলাকার রতন বিশ্বাস ও তার স্ত্রী ইভা এবং নয়ন শীল। দীপ্ত নিখোঁজের পর থেকে প্রতিবেশী রতন বিশ্বাস ও নয়ন শীলের ওপর সন্দেহ করেন স্বজন ও স্থানীয়রা।
৩০ মে গভীর রাতে হারতা বাজারের ছোট ব্রিজ এলাকায় নয়ন শীল পানি দিয়ে তার সেলুনের মেঝে পরিস্কার করার সময় স্থানীয়দের মাঝে সন্দেহ আরও ঘনিভূত হয়। দীপ্তর স্বজন ও স্থানীয়রা নয়ন শীল ও তার ঘর মালিক রতন বিশ্বাসকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এক পর্যায়ে রাত সাড়ে তিন টার দিকে তারা দীপ্তকে হত্যার কথা স্বীকার করে। এ সময় পুলিশকে খবর দিলে ৩১ মে ভোর সাড়ে ৫টায় হারতা বাজারের পার্শ্ববর্তী খাল থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় দীপ্তর লাশ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়দের ধারণা অপহরণের পরে নয়ন শীলের সেলুনের মধ্যে বসে দীপ্তকে হত্যা করা হয়। তালা বদ্ধ সেলুনের ভিতরে থাকা লাশে পচন ধরে গন্ধ বের হওয়ায় ৩০ মে গভীর রাতে বস্তা বন্দি করে খালে ফেলে দেওয়া হয়। শিশুটির গলা ও নাক কাটা এবং একটি চোখ খুচিয়ে নষ্ট করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা লিটন। এদিকে
দীপ্তর মায়ের সঙ্গে রতন ও নয়ন দু’জনের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছেলে দীপ্ত দেখে ফেলায় এ হত্যাকান্ড হতে পারে বলে স্থানীয়রা জানান।
এ প্রসঙ্গে উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) আলী আর্শাদ জানান,গত শুক্রবার (২৭ মে) রাত ১১টার দিকে নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয় দীপ্ত। ছেলে নিখোঁজের বিষয়ে তার বাবা দীপক মণ্ডল শনিবার (২৮ মে) রাতে উজিরপুর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
এ ঘটনায় রতন বিশ্বাস ও তার স্ত্রী ইভা এবং নয়ন শীলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শিশুটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা বা কি কারণে এই হত্যাকাণ্ড করা হয়েছে সে বিষয়ে বিস্তর তদন্ত চলছে বলেও তিনি জানান।