কুমিল্লা দক্ষিন জেলা প্রতিনিধিঃ
চার মাস আত্মগোপনে থাকার পর হঠাৎ হাজিরা খাতায় দুই দিনের স্বাক্ষর দিয়ে সমালোচনায় এসেছেন পূর্বাঞ্চলীয় রেলওয়ে লাকসামের ট্রেন পরীক্ষক (টিএক্সআর) আরিফুল হায়দার চৌধুরী মান্না।
তিনি লাকসাম রেল অঙ্গন সহ বিভিন্ন মহলের এবং কর্মচারীদের জন্য ছিলেন আতংক।
তার পরম সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন রেলওয়ে শ্রমিকলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও লাকসাম হেড টিএক্সআর অফিসের ষ্টোর মুন্সী হাসান আহমেদ পলাশ।
সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের শ্যালক মহব্বত আলীর নাম ভাঙিয়ে প্লাটফর্মের মসজিদের পাশেই মাদক আখড়া বসানো, দখল ও টিকিট কালোবাজারি সহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধের কারণে তারা সমালোচিত ছিলেন।
সামান্য ও তুচ্ছ কারণে রেলওয়ের কর্মচারী সহ সাধারণ মানুষকে ধরে এনে নির্যাতন করতো তারা।
৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আত্মগোপনে চলে যান তারা । ভুক্তভোগীরা তাদের বিরুদ্ধে লাকসাম রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় পোস্টার ও ব্যনার সাটানোসহ মিছিল মিটিং করেছেন।
দীর্ঘদিন আত্মগোপনে থাকাবস্থায় হঠাৎ এক ও দুই ডিসেম্বর ২০২৪ ইং হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিয়েছে আরিফুল হায়দার চৌধুরী ওরফে মান্না ও অজ্ঞাত ইউনুস৷
হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দেওয়াকে কেন্দ্র করে তোলপাড় চলছে রেল অঙ্গনে। ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর ৫ আগস্ট থেকে আত্মগোপনে চলে যায় লাকসাম রেলওয়ে শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও লাকসাম রেলওয়ে স্টেশন টিএক্সআর আরিফুল হায়দার চৌধুরী মান্না এবং রেলওয়ে শ্রমিকলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ও লাকসাম হেড টিএক্সআর দপ্তরের ষ্টোর মুন্সী হাসান আহমেদ পলাশ।
আত্মগোপনে থাকা আরিফুল হায়দার চৌধুরী মান্নার স্বাক্ষরটি হেড টিএক্সআর আক্তার হোসেন নিজে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর নিয়েছে বলে গুঞ্জন রয়েছে।খোঁজ নিয়ে হাজিরা খাতায় এই স্বাক্ষরের সত্যতা পাওয়া গেছে।
এদিকে অজ্ঞাত স্থান থেকে মান্নার হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরের খবরে তার হাতে নির্যাতিত
লাকসাম রেলওয়ে জংশনে কর্মরত শ্রমিক কর্মচারীদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দেওয়ায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, অভিযুক্ত আরিফুল হকের কৈফিয়ৎ তলব করা হয়েছে। এখনো কোন জবাব পাওয়া যায়নি। তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
জানাগেছে, টিএক্সআর মান্না ও ষ্টোর মুন্সী হাসান আহমেদ পলাশ তারা বিগত ১০ বছর চাকরি না করেই তুলতেন বেতন ভাতা এবং টিএ বিল।
সাবেক সরকারের এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলামের শ্যালক মহব্বত আলীর সঙ্গে চলাফেরা করার কারণে তাদের সঙ্গে ভয়ে কেউ কথা বলতে পারতোনা বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
লাকসাম রেলওয়ে জংশনে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, প্রকাশ্যে মাদক সেবন, মাদক ব্যবসা, জিম্মি, হকারদের থেকে চাঁদাবাজিসহ সকল ধরনের অপরাধ কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিল তারা। সারাক্ষণ ঘুরাফেরা আর নেতাগিরি করে বেড়াতেন। পলাশ রেলওয়ের বিভিন্ন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নাম ভাঙ্গিয়ে চলতো। লাকসাম স্টেশনকে নিজের কব্জায় রেখে শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তাদেরকে লাঞ্ছিত করারও অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।