মোঃ আবুল কালাম, লাকসামঃ সাতঘর আনছারিয়া নূরানী হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা। লাকসামের গোবিন্দপুর ইউনিয়নের সাতঘর ইছাপুরায় ২০০২ সালের ১ জানুয়ারি এ প্রতিষ্ঠানের ভিত্তি গড়েন, মৌলভী আনছার আলী।
মাদ্রাসার মুহতামিম (প্রধান শিক্ষক) মাওলানা মোঃ মাঈন উদ্দিন বলেন, নূরানী ও হুফফাজে কুরআনে ৬ জন প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে বর্তমানে শিশু থেকে ৩য় জামাত পর্যন্ত পাঠদান করা হয়। নাজেরা ও হিফজ বিভাগে ১২৩ জন মেয়ে শিক্ষার্থীসহ প্রায় ৩শ’ শিক্ষার্থী এখানে পড়াশোনা করে। এদের মধ্যে ২৩ জন এতিম ও অসহায় শিশুকে বিনামূল্যে পড়াশোনা, থাকা-খাওয়া ও পোশাক দেয়া হচ্ছে। এ বছর ১০ জন হাফেজে কোরআন ছাত্রকে পাগড়ি দেয়া হয়েছে। এখানে ৩য় জামাত উত্তীর্ণ ছাত্র-ছাত্রীরা বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় প্রথম দশে স্থান পেয়ে আসছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকারি কর্মসূচি পালন ছাড়াও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা সাপ্তাহিক পাঠ মূল্যায়নসহ নিয়মিত এসেম্বলি ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনে অংশগ্রহণ করে বলেও জানান মুহতামিম।
তিনি আরো বলেন, অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট থেকেও স্বল্প বেতন নেয়া হয়। শিশু ৮০ টাকা, ১ম ১শ’, ২য় ১৩০ ও ৩য় জামাত ১৫০ টাকা বেতন ধরা হয়েছে। আবাসিক ছাত্রদের কাছ থেকেও সামান্য অর্থ নেয়া হয়। মূলতঃ এলাকাবাসীর দান-অনুদানেই মাদ্রাসাটি পরিচালিত হচ্ছে। এ সময় তিনি যাকাত, ফিতরা, সাদাকাসহ নিয়মিত সহায়তা দানের জন্য সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানান।
মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাওলানা মোঃ আবু তৈয়ব বলেন, শিশুদের আধুনিক সাধারণ শিক্ষাসহ, সহীহভাবে কোরআন শিক্ষা, মাসলা-মাসায়েল, দোয়া, শুদ্ধভাবে প্রাত্যহিক ইবাদতের নিয়ম-কানুন শেখানো হয় সযত্নে। মাদ্রাসার পাঠদান ও আবাসিক কক্ষ বাড়ানো জরুরি। স্বাভাবিক পাঠদানসহ মাদ্রাসার ভবন উন্নয়নে সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করছি।
ঐ গ্রামের বয়োঃবৃদ্ধ নাজমুল হক বলেন, অজপাড়াগাঁয়ে পিছিয়ে পড়া শিশুদের সাধারণ শিক্ষা ও দ্বীনি শিক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন সাতঘরের হুজুর খ্যাত মৌলভী আনছার আলীর সুযোগ্য ছেলে মাওলানা শফিকুর রহমান। ঐ মৌলভী দৌলতগঞ্জ গাজীমুড়া কামিল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক। তৎকালে তিনি আরবি সাহিত্য পড়াতেন। বর্তমানে এলাকাবাসীর সহায়তায় এ প্রতিষ্ঠানটিও অত্রাঞ্চলে শিক্ষার দ্যুতি ছড়াচ্ছে।
স্থানীয় ইছাপুরা সেন্ট্রাল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ আবুল ফয়েজ বলেন, গ্রামবাসীর দান-অনুদানে মাদ্রাসাটি পরিচালিত হচ্ছে। দ্বীনি শিক্ষায় ইতিমধ্যে মাদ্রাসার সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা প্রতিষ্ঠানটির উন্নতি ও সাফল্য কামনা করি।