জহুরুল ইসলাম হালিম, রাজবাড়ীঃ
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘ ১১ বছর পর সিজারিয়ান অপারেশন চালু হয়েছে।
সোমবার (১৫ আগষ্ট) জাতীয় শোক দিবসের বিশেষ দিনে এক প্রসূতির সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সন্তানের জন্ম হয়। বরাট ইউনিয়নের কাঁচবন্ধ গ্রামের আমানত হোসেনের স্ত্রী শারমিন আক্তার কে বেলা দেড়টার দিকে সার্জারীর মাধ্যমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘ ১১বছর পর পুনরায় সিজারিয়ান অপারেশন বিভাগ চালু হলো।
সিজারিয়ান অপারেশন বিভাগ ( গাইনি সার্জারী) পুনরায় চালু হওয়ায় সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে এই দিনটি কে স্বরনীয় করে রাখতে হাসপাতাল কতৃপক্ষ এই উদ্যোগ নেয়। সার্জারীর মাধ্যমে সদ্য জম্ম নেওয়া শিশুটির নাম রাখা হয়েছে শাহাদাৎ হোসেন রাসেল।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৭সালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চালু করা হয়। পরবর্তীতে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। ২০০০ সালে প্রসূতি সেবা চালু করা হয়। ২০১১ সাল পর্যন্ত ৯টি সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়। অবকাঠামোগত সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা থাকার পর অ্যানেস্থেসিয়া ও গাইনি সার্জারী চিকিৎসকের অভাবে গত ১১ বছর সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ ছিল। তবে নরমাল (স্বাভাবিক) প্রসব বিভাগ চালু ছিল।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আমিরুল হক শামীমের তত্বাবধানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র গাইনি সার্জারী বিভাগের চিকিৎসক ডা. তৃপ্তি সরকার ও অ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসক প্রদীপ কুমার পাল, আবাসিক চিকিৎসক ডা. শাহ মোহাম্মাদ শরীফ নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ড গর্ভবতী মহিলার সিজার করেন।
জেলা শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে প্রত্যন্ত উপজেলা গোয়ালন্দ। যাহা পদ্মা নদী তীরবর্তী অবিস্থত। সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ থাকায় ভোগান্তী পোহাতে হয়েছে উপজেলাবাসীর। সরকারি সেবার জন্য এ সময়ে উপজেলাবাসীকে বাজবাড়ী সদর হাসপাতাল অথবা পার্শ্ববর্তী ফরিদপুর জেলা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল যেতে হয়।
সিজারিয়ান অপারেশনের(সার্জারী) মাধ্যমে জম্ম নেওয়া শিশুর খালা পারভিন খাতুন বলেন,সিজারিয়ান অপারেশন করে আমার বোন ছেলে সন্তানের মা হয়েছেন। কোনো টাকা-পয়সা ছাড়াই ডাক্তার সিজার করেছেন। আমার মতো সাধারণ মানুষের জন্য খুবই সুবিধা হয়েছে। সত্যি খুব ভাল লাগছে।
দৌলতদিয়া বেপারী পাড়া গ্রামের তোতা শেখ বলেন, দীর্ঘদিন সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ থাকার পর আবারও চালু হয়েছে। সিজারিয়ান অপারেশন চালু হওয়ায় গরীব মানুষের অনেক সুবিধা হবে। অনেক দালাল আছে যারা রোগীদের ভুলভাল বুঝিয়ে বেসরকারি ক্লিনিকে নেওয়ার চেষ্টা করে। হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশন চালু হওয়ায় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই।
গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.আমিরুল হক শামীম বলেন, অপারেশনের সকল সরঞ্জাম থাকার পরও অ্যানেস্থেসিয়া ও গাইনি চিকিৎসক না থাকায় সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ ছিল। বর্তমানে গাইনি সার্জারী চিকিৎসক এবং অ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসক যোগদান করেছে। জাতীয় শোক দিবসের বিশেষ দিনে সিজারিয়ানের মাধ্যমে জম্ম নেওয়া শিশু নাম রাখা হয়েছে শাহাদাৎ হোসেন রাসেল। এখন থেকে নিয়মিত সিজার করা হবে