খানসামা সংবাদদাতাঃ
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের ডাঙ্গারহাট এলাকায় আবু তালেব রানা নামে এক যুবক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ডাঙ্গারহাট এলাকার মনছুর রহমানের ছেলে আবু তালেব রানার সঙ্গে খামারপাড়ার বালাপাড়া গ্রামের বাউরাপাড়ার রশিদুল ইসলামের মেয়ে রিমা খাতুনের প্রেমের সম্পর্ক হয়। একপর্যায়ে আবু তালেব রিমাকে বিয়ের কথা বলেন। কিন্তু পরে আবু তালেব অন্য মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ালে গত রবিবার ঈদের নামাজের পর রিমা তালেবের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশনে বসেন। এ ঘটনায় আবু তালেব বিয়েতে অসম্মতি জানিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। এরই সূত্রে গতকাল মঙ্গলবার মেয়ের পরিবার থানায় অভিযোগ করতে গেলে কর্মরত এসআই শিমুল স্থানীয়ভাবে মেম্বারের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা করার পরামর্শ দেন।
এদিকে আবু তালেবও সন্ধ্যার পর মুঠোফোনে স্থানীয় ইউপি সদস্য আফসেদুল ইসলামকে রিমাকে বিয়ে করার কথা জানান। পরে রাত প্রায় ১০টার দিকে আবু তালেব তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে ‘বিদায় পৃথিবী বিদায় আমার সকল ফেসবুক ফ্রেন্ড আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন আমিন’ পোস্ট দিয়ে বিষপান করেন। এরপর হোসেনপুরে তাঁর বোনের বাড়ি গিয়ে বমি করতে শুরু করেন। পরে তাঁর বোনের পরিবারের লোকজন বিষপানের বিষয়টি টের পেয়ে এম আ. রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে আবু তালেবের চাচা আফজাল হোসেন বলেন, ‘ছেলেকে আমরা ওই মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার জন্য রাজি করাই। কিন্তু সে বাড়ি আসার পথে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও সদস্যের ছেলে ২ লাখ টাকার জন্য চাপ দেন। টাকা না দিলে পরিবারের সবার নামে মামলার হুমকিও দেন। এটি সহ্য করতে না পেরে আমাদের ছেলে বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে জোর দাবি জানাই।’
ইউপি সদস্য আফসেদুল ইসলাম বলেন, ‘থানা থেকে ফোন দিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য বললে আমি আবু তালেবের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করি। তিনি আমাকে রাতের মধ্যেই বিয়ের বিষয়ে নিশ্চিত করেন। আর আমার সঙ্গে কোনো ধরনের টাকা লেনদেনের কথা হয়নি। আমাকে জড়িয়ে মিথ্যাচার করা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে খানসামা থানার অফিসার ইনচার্জ চিত্তরঞ্জন রায় জানান, অনশনের ঘটনায় পুলিশ তো বিয়ে কিংবা মেয়েকে বের করে দিতে পারে না, তাই স্থানীয়ভাবে বসে মীমাংসা করার পরামর্শ দেওয়া হয়। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।