মতলব উত্তরে দেবরের বিরুদ্ধে ভাবিকে মারধরের অভিযোগ

আইন-অপরাধ আরো চট্টগ্রাম পরিবেশ সারাদেশ
শেয়ার করুন...

সম্রাট সিকদার চাঁপুর থেকেঃ চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার পশ্চিম ইসলামাদ খন্দকার বাড়ির সৌদি প্রবাসী জামাল খন্দকারের স্ত্রী দুই সন্তানের জননী শিল্পী বেগমকে দীর্ঘদিন ধরে জায়গাজমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মারধর এবং হত্যা চেষ্টার অভিযোগ তার দেবর মোঃ জিহাদ খন্দকার ওরফে রাঙ্গা শিবলি (৩১) এর বিরুদ্ধে।

উল্লেখ্য, ১৪ মে রবিবার আনুমানিক সকাল ৭ টার দিকে রাঙ্গা শিবলি তার বড় ভাই সৌদি প্রবাসী জামাল খন্দকারের নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ের ইট, রড, সিমেন্টের বস্তা এলোপাতাড়িভাবে এদিক-সেদিক ফেলে দেয় এবং গালাগালি করে। শিল্পী বেগম তাতে প্রতিবাদ করায় তাকে রাঙ্গা শিবলি রডদ্বারা পিটিয়ে জখম করে। ফলে শিল্পী বেগম মাটিতে পড়ে যায়। এরপর দ্যা দিয়ে কুপ দেওয়ার উদ্দেশ্যে তেরে আসলে সে তার ঘরে অবস্থান নেয়। এতে দ্যা এর কুপ শিল্পী বেগমের বসতঘরের টিনে লাগে। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আহত শিল্পী বেগমকে মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তার স্বামী জামাল খন্দকারকে বিষয়টি জানিয়ে মতলব উত্তর থানায় একটি অভিযোগ করা হয়।

শিল্পী বেগম জানান, “আমার স্বামী মোঃ জামাল খন্দকার দীর্ঘদিন বিদেশ আছেন। আমি আমার ছেলে সিয়াম (১২) এবং মেয়ে রাবেয়া (৯) বাড়িতে থাকি। আমার স্বামী বাড়িতে না থাকায় এই সুযোগে আমার দেবর মোঃ জিহাদ খন্দকার ওরফে রাঙ্গা শিবলি (৩১), মোঃ কামাল খন্দকার (৪৭), মকিম খন্দকার (২৫) কারনে অকারনে আমাদের উপরে অত্যাচার, অবিচার করে। আমি আমার ছোট দু’টি ছেলে মেয়ে নিয়ে ভয়ভীতির মধ্যে দিনাতিপাত করছিলাম। আর সহ্য করতে না পেরে প্রতিবাদ করায় তারা আমাকে পিটিয়ে জখম করে। ১৪ মে সকাল আনুমানিক ৭ টায় আমার উপরে যে অত্যাচার, নির্যাতন করা হয়েছে আমি এখন আমার বাচ্চাদের নিয়ে খুবই আতংকের মধ্যে আছি। আমার নির্মাণাধীন বিল্ডিং করতে বাধা দেয় আমার দেবর আমি তার প্রতিবাদ করায় আমাকে মারধর, ঘড় ভাঙচুর সহ প্রায় ২০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি করে এবং দ্যা দিয়ে কুপ দেয় সেই কুপ আমার ঘরের টিনে লাগে। আজকে যদি আমার উপরে দ্যা এর কুপ লাগতো তাহলে আমি আজকে আহত অথবা নিহত হয়ে যেতে পারতাম, আমার বাচ্চারা মা হারিয়ে এতিম হতো। আমি আমার ওয়ার্ডের মেম্বার মোঃ খলিল মেম্বার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন মুকুল সাহেবকে বিষয়টি জানিয়েছি তারা আমাকে আইনের সহযোগিতা নিতে বলেছেন। আমি মতলব উত্তর থানায় অভিযোগ করেছি আশাকরি তারা আমাকে সহযোগিতা করবেন। আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমার দেবর রাঙা শিবলি আমাদের এখন বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। আমরা ভয়ভীতির মধ্যে দিনাতিপাত করছি।”

শিল্পী বেগমের ছেলে সিয়াম জানান, “আমার কাকা রাঙা শিবলি আমাকে আমার আম্মুকে মারধর করেছে দ্যা দিয়ে কুপ দেওয়ার সময় আমার আম্মু ঘরের ভিতরে চলে গেলে সেই কুপ আমাদের ঘরের টিনে লাগে অল্পের জন্য আমার আম্মুর গায়ে দ্যা এর কুপ লাগেনি। আমার আব্বু সৌদি প্রবাসী। সেই সুযোগে আমার কাকা আমাদের উপরে প্রতিনিয়ত অত্যাচার করে আসছে। আমার মাকে আমার কাকা রাঙা শিবলি সবসময় শারীরিকভাবে অত্যাচার অবিচার এবং ঘর ভাঙচুর করে। আমরা ভয়ের মধ্যে দিনাতিপাত করছি।”

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, রাঙা শিবলি এলাকায় গায়ের জুড়ে ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে আসছে। তার বিরুদ্ধে অনেক সময় অনেক অভিযোগ পাওয়া যায়। রাঙা শিবলির উশৃংখল চলাফেরা বদমেজাজি আচার-আচরণের বিষয়ে কেউ কিছু বললে তার উপরেও সে চড়াও হয়।

শিল্পী বেগমের বড় ভাই সৌদি প্রবাসী জহিরুল ইসলাম বলেন, “আমার ছোট বোন শিল্পী বেগমকে তার দেবর রাঙা শিবলি মারধর এবং হত্যা চেষ্টা করেছে এই বিষয়টা আমি জানতে পেরেছি। আমার বোনের স্বামী সৌদি প্রবাসী। সে বাড়ীতে না থাকায় তার ভাই শিবলি বিভিন্ন সময় আমার বোনকে শারীরিক নির্যাতন করে সেই খবর আমরা প্রবাসে থেকে শুনতে পাই। আমার বোন শিল্পী বেগম, ভাগিনা সিয়াম ও ভাগ্নি রাবেয়া ওরা ছোট ওদের উপরে এর প্রভাব পড়ছে। পড়ালেখার সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। ওরা সবসময় ভয়ভীতির মধ্যে থাকে, তারা এখন তার কাকার অত্যাচারে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আমি প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।”

মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ শাহাজাহান কামাল জানান, “আমরা মারধরের অভিযোগ পেয়েছি এর সত্যতা পেলে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

image_pdfimage_print

শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.