ঠাকুরগাঁওয়ে কবরস্থানের জমিতে আশ্রয়ন প্রকল্প গড়ে তোলার অভিযোগ

আইন-অপরাধ ইসলামিক পরিবেশ ময়মনসিংহ সারাদেশ
শেয়ার করুন...

আব্দুর রাজ্জাক বাপ্পী, ঠাকুরগাঁও থেকেঃ
ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়নের শিংপাড়া কবরস্থানের জমিতে আশ্রয়ন প্রকল্পের বাড়ি নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু করায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। ১১ মে বুধবার ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা প্রশাসেনর চিঠি নিয়ে এক ঠিকাদারের লোকজন সেই কবরস্থানে স্থানীয়দের রোপনকৃত কোটি টাকার অধিক মূল্যমানের গাছ কাটা শুরু করলে সেখানে গাছের ঠিকাদার ও স্থানীয়দের মধ্যে মারমুখী অবস্থার সৃষ্টি হয়। এ সময় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের আশ্বাসে পরিস্থিতি সাময়িক শান্ত হলেও এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
শিংপাড়া কবরস্থান উন্নয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা আফাজ উদ্দিন জানান, দুই একর ৮৭শতক জমি জুড়ে থাকা শিংপাড়া কবরস্থানটি অনেক পুরাতন ঐতিহ্যবাহী খাস ক্ষতিয়ান ভুক্ত একটি কবরস্থান। সম্প্রতি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা প্রশাসন এই কবরস্থানের জমিতে আশ্রয়ন প্রকল্পের বাড়ি নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করলে আমরা এলাকাবাসী কবরস্থান বাদ দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ও ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসন সহ বিভিন্ন মহলে অনুরোধ জানাই। এর প্রেক্ষিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন ও ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহাবুবুর রহমান কবরস্থান বাদ দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে বলে সুপারিশসহ আশ্বাস প্রদান করেন।

কিন্ত ১১ মে বুধবার আকস্মিক ভাবে এই কবরস্থানে আশ্রায়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া হিসেবে গাছ কাটার জন্য এক ঠিকাদার সেই কবরস্থানে ২০বছর আগে স্থানীয়দের রোপনকৃত কোটি টাকার অধিক মূল্যমানের গাছ কাটা শুরু করে। এসময় সেখানে গাছের ঠিকাদার ও স্থানীয়দের মধ্যে মারমুখী অবস্থার সৃষ্টি হয়। তখন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলে এলাহী মুকুট চৌধুরীর আশ্বাসে পরিস্থিতি সাময়িক শান্ত হয়।
আফাজ উদ্দিন আরো জানান, কবরস্থানের উন্নয়নের জন্য সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির আওতায় ২০০২সালে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সাথে ননজুডিয়াশিয়াল স্ট্যাম্পে চুক্তি সম্পাদন করে কবরস্থান উন্নয়ন কমিটি ফলজ, বনজ ও ঔষধি গাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির দুই হাজার গাছ রোপনসহ যত্ন করে গাছগুলো বড় করে তোলে। যার বর্তমান বাজার মূল্য কোটি টাকার অধিক হলেও উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় ভূমি অফিস, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয় কবরস্থান উন্নয়ন কমিটিকে কিছু না জানিয়ে গাছগুলো কেটে নিতে শুরু করেছে বলে স্থানীদের অভিযোগ৷
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মোহাম্মদ সামুসুজ্জামানের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, কবরস্থানে আশ্রায়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত এখনও চুড়ান্ত হয়নি। সরকারি বিধি মোতাবেক সেখানকার গাছ কাটার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এলাকার পরিবেশবাদীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে কোটি টাকার গাছ নাম মাত্র মূল্যে কিনে নিয়েছে প্রভাবশালী মহল। তাই তড়িঘড়ি করে তাঁরা গাছ কেটে নেওয়ার কৌশল অবলম্বন করেছে। উল্লেখ্য এলাকার পরিবেশবাদীরা আগামীকাল সকাল ১০ টায় বাতেনের মোড়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।


শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.