চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্ল) প্রতিনিধি: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে পরিবেশ দূষণ ও ফসলি জমি রক্ষায় মাটি খেকোদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে স্থানীয় বোরো চাষীরা। এর আগে তারা গত মঙ্গলবার (১ মার্চ) উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।
শুক্রবার সকালে উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের ধনুসাড়া পূর্ব পাড়ায় একতা ব্রিক্সের সামনে স্থানীয় বোরো চাষী কৃষক ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় বিক্ষুব্ধ কৃষক হাজী সিদ্দিকুর রহমান, বাহার উদ্দিন বাহার, আব্দুর রহিম, হাজী মোকছেদ আলী, খোরশেদ আলমসহ স্থানীয়রা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে জানান, দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে বিএডিসি’র একটি গভীর নলকূপের মাধ্যমে স্থানীয় কৃষকরা পানি সেচ দিয়ে বোরো আবাদ করে আসছিলো। চলতি বছর ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ওই নলকূপটি বন্ধ করে দেয় স্থানীয় মাটিখেকো আবুল খায়ের ও প্রভাবশালী ব্রিক্স ফিল্ড মালিক কর্তৃপক্ষ। এতে প্রায় ২০০ একর জমিনে বোরো আবাদ করা সম্ভব হয়নি। খালের পানি দিয়ে কয়েকজন কৃষক বোরো আবাদ শুরু করলেও মাটিখেকোরা কৃষকদের রোপনকৃত ধানের চারা কেটে ফেলে ডাইভারশন তৈরী করে কৃষি জমির উপর দিয়ে মাটি পরিবহন করে নিয়ে যাচ্ছে। জানা গেছে, মাটিগুলো স্থানীয় একতা ব্রিক্সসহ কয়েকটি ব্রিক্স ফিল্ডে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে আরো বলেন, মাটি খেকো আবুল খায়ের স্থানীয় ইউনুস মেম্বার নামে এক ব্যক্তির নিকট থেকে ৬০ শতাংশ জমি ক্রয় করে ৩০-৪০ ফুট গভীর খাদ করে মাটি বিক্রি করছে। যারফলে পাশ^বর্তী কৃষি জমির মালিকগণ ভয়ে ও আতঙ্কে আছেন, কখন ওই খাদের পাড় ভেঙ্গে পাশ^বর্তী জমিনগুলোও সে গর্তে বিলীন হয়ে যায়। চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারি কমিশনার (ভূমি), উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার নিকট ফসলী জমি রক্ষার দাবিতে এলাকাবাসীর স্মারকলিপি প্রদানের প্রেক্ষিতে মাটিখেকো আবুল খায়ের ইতোপূর্বে প্রশাসনের কাছে মাটি উত্তোলন করবে না মর্মে মুছলেকা দিলেও এখনও সে মাটি কাটা অব্যাহত রেখেছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগি কৃষকরাসহ এলাকাবাসী দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন বলেন, ‘ঘোলপাশা ইউনিয়নের ধনুসাড়া এলাকার কৃষকদের পক্ষ থেকে একটি স্মারকলিপি পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। কৃষি জমির টপ সয়েল কেটে নিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা প্রচুর ক্ষতির মুখে পড়ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়কে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে’।
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মনজুরুল হক বলেন, ‘বিষয়টি সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি। স্থানীয়দের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে ওই এলাকায় একবার ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে কতিপয় মাটি ব্যবসায়ীকে সতর্ক ও জরিমানা করা হয়েছে। বিস্তারিত জেনে এ ব্যাপারে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে’।