স্টাফ রিপোর্টারঃ চট্টগ্রামের এক গরু-মহিষ ব্যবসায়ীকে প্রায় ৪৫দিন আটক রেখে তার পরিবার থেকে দুইবারে ২০ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে৷
সূত্র জানায় চট্টগ্রাম জেলার রাউজান পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের সাহেদা বেগমের স্বামী গরু-মহিষ ব্যবসায়ী আলী আকবর গত ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে সাড়ে ৪লক্ষ টাকা নিয়ে বাড়ী থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন৷ নিখোঁজের প্রায় ৪৫দিন পর ১ নভেম্বর ঢাকার যাত্রাবাড়ি থানায় অস্ত্র আইনের ৬নং মামলায় ৩নং আসামী হিসেবে আলী আকবরকে দেখানো হয়েছে।
এ ঘটনায় চট্টগ্রামের গরু ব্যবসায়ীর স্ত্রী সাহেদা বেগম গত ১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর মহা-পুলিশ পরিদর্শক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন৷
লিখিতো অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ১৬ সেপ্টেম্বর অপহরণ হওয়ার পর ১৭ সেপ্টেম্বর রাঙ্গামাটির কোতয়ালী থানার ওসি জিডি গ্রহন করেনি। ২৭ সেপ্টেম্বর র্যাব-৭ কে অবহিত করা হয়। ২৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি’র নিকট অভিযোগ দেওয়া হয়। ওই দিন রাঙ্গামাটির এসপি কে ব্যবস্থা নিতে ডিআইজি চট্টগ্রাম চিঠি প্রেরণ করে। ২৯ সেপ্টেম্বর রাঙ্গামাটি এসপি কার্যালয়ের সামনে তার স্ত্রী গেলে, অপহৃত আলী আকবর তার মোবাইল থেকে কল করে স্ত্রীকে জানায়, সে ঢাকা ডিবি কার্যালয়ে আটক আছে, তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে, ভাল আছেন। ৩০ সেপ্টেম্বর অজ্ঞাত ব্যক্তি মোবাইলে বলে তার স্বামীকে চট্টগ্রামে মাইক্রোবাসে আনা হবে, ২০লাখ টাকা ঘুষ দিতে হবে। আলী আকবরের স্ত্রী ১৫লাখ টাকা রেডি করে দুই পুলিশ কর্মকর্তার হাতে দেয়। মাইক্রোবাসের নং-১১-১১৫৩। ১৫লাখ টাকা গ্রহন করার পর আবার আলী আকবরকে ঢাকায় নিয়ে যায়। গত ৩০ অক্টোবর ঢাকায় আবার ৫লাখ টাকা ঘুষ আদায় করা হয়। ১ নভেম্বর অস্ত্র মামলায় আলী আকবরকে ৩নং আসামী দেখানো হয়। ২০লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার পর আলী আকবরের সাথে থাকা সাড়ে ৪লাখ টাকা ও দুইটি এন্ড্রোয়েট মোবাইল সেট মামলার জব্দ তালিকায় উল্লেখ করা হয়নি। কারেন্টের সট দিয়ে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়। আরো জানা যায় পুলিশ সদর দপ্তর অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্ত শুরু করছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা হলেন ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ এর পিওএম-পূর্বের উপ-পুলিশ কমিশনার এস.এম এমরান হোসেন। গত ৩০জানুয়ারি প্রথম শুনানীর দিন ছিল, আলী আকবরের স্ত্রী অসুস্থ্য হওয়ায় হাজির হতে পারিনি।
এব্যাপারে আলী আকবরের স্ত্রী সাহেদা বেগম বলেন পুলিশ প্রধানের কাছে অভিযোগ দেওয়ায় আমি ও আমার স্বাক্ষীদের অস্ত্র মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এব্যাপারে সু-শাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর কুমিল্লা জেলা শাখার সভাপতি শাহ মোঃ আলমগীর খান বলেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কোন ব্যক্তিকে আটক করার পর ২৪ ঘন্টার মধ্যে আদালতকে অবহিত করতে হবে। কেউ যদি অনৈতিক সুবিধা আদায় করার জন্য কোন ব্যক্তিকে দীর্ঘদিন আটক রাখে তাহলে মানবাধিকার লংঘন হবে। তদন্ত করে অপরাধীদের বিচারের আওতায় নিতে হবে।