অনলাইন ডেস্কঃ করোনাভাইয়াসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের সংক্রমণ ঠেকাতে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসা ৭ জনের বাড়িতে লাল পতাকা টানানো হয়েছে।
তাদের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে প্রত্যেকের বাড়ি বাড়ি পরিদর্শন করেছে উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা।
এই প্রবাসীদের সবাই প্রায় ২ সপ্তাহ আগে (১৬ নভেম্বর) দেশে ফিরলেও গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আসা এই ৭ প্রবাসীর ব্যাপারে তথ্য পেয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ।
পাসপোর্ট নম্বরের সুত্র ধরে আগত প্রবাসীদের বিস্তারিত খুজে বের করে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা। এরপরই মঙ্গলবার দুপুরে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা তাদের বাড়িতে ছুটে যান।
দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে বাড়ি ফেরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৭ জন হলেন কসবা উপজেলার খাড়েরা গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া, তার স্ত্রী তাহেরা আক্তার, শিশু কন্যা আলীশা, একই উপজেলার সৈয়দাবাদ গ্রামের লোকমান মিয়া ও আল আমিন, নবীনগর উপজেলার সীকানীকা গ্রামের রাজু সরকার এবং বাঞ্ছারামপুর উপজেলার খোশকান্দি গ্রামের আতিকুর রহমান।
এদিকে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় এই নিয়ে একটি জরুরি বৈঠকের আয়োজন করে জেলা করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কমিটি। বৈঠকের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ জানান, বৈঠকে দক্ষিণ আফ্রিকা ফেরত ৭ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখার এবং তাদের বাড়ি লাল পতাকায় চিহ্নিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও আখাউড়া স্থলবন্দরে বিভিন্ন সতর্কতা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ উল আলম বলেন, ‘প্রবাসীদের বাধ্যতামূলক কোয়ারন্টিন নিশ্চিত করতে আমরা খোঁজখবর নিয়েছি। তাদের নির্ধারিত কোয়ারেন্টিন পিরিয়ড শেষ হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে টিম এসে তাদের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে। নমুনা পরীক্ষার পর সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া সাপেক্ষে তারা এলাকায় স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারবে।’
কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: অরুপ পাল বলেন, ‘সামাজিক সংক্রমণ রোধে দক্ষিণ আফ্রিকা আগতদের বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিদেশ থেকে আগতদের শরীরে কোনো উপসর্গ থাকলে তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। করোনার অস্তিত্ব ধরা পড়লে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার আওতায় আনা হবে।’
এদিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকার মানুষ তাদের ব্যাপারে সতর্ক রয়েছেন। খাড়েরা ইউনিয়নের নয় নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ মুছা মিয়া জানান, প্রায় ১৩ দিন আগে আলমগীর তার পরিবারসহ বাড়িতে ফিরেছেন। তারা সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী কোয়ারেন্টাইনে থেকেছেন। বাড়ির বাইরে তারা বের হননি।
প্রবাসী আলমগীরের বড় ভাই সালেহ আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, ‘ওমিক্রণ এর বিষয়ে সর্তকতা হিসেবে আমার ভাই বাড়িতে আসার পর থেকে বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেন না। এমনকি ঘরেও মাস্ক পরে সতর্ক অবস্থায় চলাফেরা করছেন।’
উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ১২ হাজার ৪১৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে ১৮০ জনের।