তাণ্ডবের নাম হাইড্রোলিক হর্ন ও এলইডি লাইট

আইন-অপরাধ আরো কুমিল্লা চট্টগ্রাম পরিবেশ সারাদেশ
শেয়ার করুন...

সেলিম চৌধুরী হীরা
দিনের বেলায় তীব্র শব্দে কানে আঘাত হানে। রাতের অন্ধকারে তীক্ষ্ণ আলোয় চোখে পড়ে ধাঁধা দেখে৷ এগুলো কোনো দুর্ঘটনা নয়, বরং আমাদের চলাচলরত মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাগুলোর হাইড্রোলিক হর্ন ও এলইডি লাইটের ফল।

লাকসাম উপজেলায় বিষয়টি এখন প্রায় নিয়ন্ত্রণহীন। কিছু অসচেতন চালক কেবল বাহারি আলো বা বিকট শব্দের আনন্দে পুরো একটি জনপদের মানুষকে বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। অথচ তারা হয়তো জানেই না, এসব হর্নের শব্দ মাত্রা ৯০- ১০০ ডেসিবল ছাড়িয়ে যেতে পারে, যা কেবল শ্রবণশক্তি নষ্ট করে না, হৃদস্পন্দনেও অস্বাভাবিকতা আনতে পারে। শিশু ও অসুস্থদের জন্য রীতি মত ভয়ংকর৷

রাতে যখন অটোরিকশার চোখ ঝলসানো আলো রাস্তায় ভাসে, তখন বিপরীত দিক থেকে আসা চালক বা পথচারী প্রায়শই বিভ্রান্ত হয়ে যান। অন্ধকারে এই মুহূর্তিক ধাঁধা যে কত বড় দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে, তা ভুক্তভোগীই জানেন।

আরেকটি ভয়ংকর দিক হলো, এইসব আলোকে অনেক সময় পুলিশ বা অ্যাম্বুলেন্সের লাইটের মতো সাজানো হয়, ফলে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হন।

পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, সড়ক পরিবহন আইনসহ অনেক আইনে এইসব কর্মকাণ্ডকে দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা আছে। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োগের অভাবে এসব আইন কাগজেই সীমাবদ্ধ।

লাকসাম পৌরসভা, ট্রাফিক বিভাগ এবং উপজেলা প্রশাসনের উচিত, এই সমস্যা নিরসনে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া। পাশাপাশি, জনসচেতনতা বৃদ্ধি, চালকদের প্রশিক্ষণ, ওয়ার্কশপ মালিকদের দায়িত্বশীলতা এবং প্রয়োজনীয় আইন প্রয়োগ সবকিছু একসঙ্গে না ঘটলে এই অনিয়ন্ত্রিত তাণ্ডব বন্ধ হবে না।

শব্দ ও আলো আমাদের জীবনের অংশ হতে পারে, তবে সেটি যেন অন্যের শান্তি ও নিরাপত্তার বিনিময়ে না হয়।


শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *