ডি-৩০ ডিজঅ্যাবিলিটি লিস্ট-২০২১ সম্মাননায় ভূষিত হলেন এটুআই-এর ভাস্কর ভট্টাচার্য

আরো পরিবেশ প্রবাস
শেয়ার করুন...

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবন্ধী বিষয়ক আইন (এডিএ) ঘোষণা উদযাপন লক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানের প্রাক্কালে ডি-৩০ ডিজঅ্যাবিলিটি লিস্ট ২০২১ সম্মাননায় ভূষিত হলেন এটুআই এর ন্যাশনাল কনসালটেন্ট ফর অ্যাকসেসিবিলিটি জনাব ভাস্কর ভট্টাচার্য।

বিশ্বব্যাপী প্রতিবন্ধীদের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে থেকে সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিকে খুঁজে বের করে নির্দিষ্ট মনোনয়ন এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অনন্য কৃতিত্বের অধিকারীদের সম্মাননা দেওয়ার লক্ষ্যে ডি-৩০ ডিজঅ্যাবিলিটি লিস্ট প্রণয়ন করা হয়। এবছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ১২৫ জনের বেশী প্রভাবশালী প্রতিবন্ধী নেতাদের জন্য ৩০০ এর মতো নমিনেশনের প্রেক্ষিতে দ্বিতীয়বারের মতো ডি-৩০ ডিজঅ্যাবিলিটি লিস্ট তৈরি করা হয়েছে। এতে জায়গা করে নিয়েছেন ভাস্কর ভট্টাচার্য। প্রতিবন্ধীদের অন্তর্ভুক্তি, নেতৃত্ব এবং সকল স্তরে প্রতিনিধিত্বের সুযোগ অব্যাহত রাখতে এ প্রচেষ্টা অনুঘটক হিসেবে কাজ করবে বলে আশা আয়োজক কর্তৃপক্ষের।

ইয়াং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশন (ইপসা)–এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন জন্ম থেকেই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ভাস্কর ভট্টাচার্য। তিনি প্রতিবন্ধী মানুষের প্রবেশগম্যতা ও প্রতিকুলতা বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তিতে অভিগম্যতা ও অন্তর্ভুক্তি নিয়ে গত ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করে যাচ্ছেন। নীতি নির্ধারণ, অ্যাডভোকেসি, প্রতিবন্ধীদের জন্য সহায়ক এবং সুলভ প্রযুক্তি উদ্ভাবন লক্ষ্যে কাজ করছেন তিনি। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ২০১৮ সালে তিনি ‘ডিজিটাল এমপাওয়ারমেন্ট অব পার্সনস উইথ ডিজঅ্যাবিলিটিস’ শীর্ষক ইউনেস্কো পুরষ্কার পেয়েছিলেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশের প্রথম অন্তর্ভুক্তিমূলক বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করা ভাস্কর এরই মধ্যে দুই লক্ষেরও অধিক পৃষ্ঠার পাঠ্য উপকরণকে অভিগম্য আকারে তৈরি করেছেন এবং ৫ শতাধিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আইসিটি দক্ষতা এবং সহায়ক প্রযুক্তিতে দক্ষ করে তোলার লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ প্রদান করেছেন। কোভিড-১৯ মহামারিতে জাতীয় হেল্পলাইন ৩৩৩ এবং মাইগভ এর সেবা সম্পর্কিত তথ্যগুলো প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সহজগম্য করতে সরকারের উদ্যোগের সাথে জড়িত ছিলেন তিনি।

ডি-৩০ ডিজঅ্যাবিলিটি লিস্ট ২০২১ সম্মাননায় নির্বাচিত হওয়ার পরে অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে ভাস্কর ভট্টাচার্য বলেন, “যেকোনো পুরষ্কার প্রাপ্তিই অনেক আনন্দের। বাংলাদেশে একজন অগ্রগামী প্রতিবন্ধী হিসেবে ২০০৫ সালে নেওয়া ডেইজি (ডিজিটাল অ্যাক্সেসিবল ইনফরমেশন সিস্টেম) প্রকল্পের জন্য আরও বেশি বেশি কাজ করতে চাই। উল্লেখ্য এর মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ২ লক্ষ পৃষ্ঠারও বেশি পড়াশোনা ও তথ্য সম্পর্কিত বিষয় ডেইজি পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়েছে। দেশের প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য প্রকাশিত সকল পাঠ্যবই এবং বাংলাদেশের প্রথম অ্যাক্সেসিবল ডিকশনারি তৈরির জন্য ২০১৮ সালে আমাকে ইউনেস্কো পুরষ্কারে ভূষিত করা হয়েছিল।”

ইউনেস্কো পুরষ্কার ছাড়াও, নিজের অবদানের জন্য আন্তর্জাতিক এবং জাতীয়ভাবে অনেক স্বীকৃতি পেয়েছেন ভাস্কর। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- বাংলাদেশে সরকারের প্রধানমন্ত্রী পুরষ্কার ২০১৬, হেনরি ভিসকার্ডি অ্যাওয়ার্ড ২০১৭, এবং অভিগম্য প্রকাশনার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত লন্ডন বুক ফেয়ার ২০১৫ অ্যাওয়ার্ড পুরষ্কার।

image_pdfimage_print

শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.