এম আর সজিব সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের ডাবর সেতু সংলগ্ন ভৈষেরগাঁও জলমহালের তীর এবং দরগাপাশা ইউনিয়নের সিচনী মহাসিং নদীর বাঁধ কেটে মের্সাস তাহিয়া ব্রীক ফিল্ডে কোটি টাকার মাটি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। পানির গতিপথ বন্ধ করে দিন-রাত ইটভাটায় মাটি পরিবহনে ট্রাক চলাচল করছে।
শান্তিগঞ্জ উপজেলার দরগাপাশা ইউনিয়নের সিচনী এলাকায় মেসার্স তাহিয়া ব্রীক ফিল্ডে ইট তৈরির জন্য জলমহাল এবং বাঁধের মাটি ইটভাটায় পরিবহনের জন্য মহাসিং নদীতে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে।
শনিবার সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, পূর্ব পাগলা ইউনিয়নের জান্দের টুপি গ্রামের ভূমি খেকো রাসেল আহমদ,শুকুর আলী সিন্ডিকেট চক্র ব্রীক ফিল্ডের বর্তমান মালিক ভারতীয় কয়লা চোরাকারবারি নাসির উদ্দীনের যোগসাজশে সুনামগঞ্জের বৃহত্তর দেখার হাওরের পানি নিষ্কাশনের একমাত্র মহাসিং নদীর পুরাতন বাঁধ কেটে নদীর মাঝখানে বাঁধ নির্মাণ করে ইটভাটায় মাটি নেওয়া হচ্ছে। এতে পানির গতিপথ বন্ধ করে বাঁধ দিয়ে যাতায়াত করছে মাটি ভর্তি প্রায় অর্ধশতাদিক জাপানি ট্রাক্টর ও পিক-আপ। এদিকে তিনটি এক্সসেভেটার ভ্যাকু দিয়ে দেড় মাস যাবৎ সরকারি মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করছেন ভূমি খেকো সিন্ডিকেট চক্র। মহাসিং নদীর সরকারি ভূমি এবং গোপাট জবরদখল করে ইটভাটার খলা তৈরি করা হয়েছে। দরগাপাশা ইউনিয়নের চেংঙ্গেরকারা বিল,হরিনগর ভাই বোনের দাইর জলমহাল সংলগ্ন ফসিল জমি,ছয়হারা গ্রামস্থ ফসিল জমির মাটি উত্তোলন করে ইটভাটায় বিক্রি হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান,কয়লা চোরাকারবারি মেসার্স তাহিয়া ব্রীক ফিল্ডের প্রোপাইটার নাসির উদ্দীন আজ থেকে প্রায় দেড় মাস যাবৎ স্থানীয় প্রশাসনের ২/৩ জন কর্মচারীকে ম্যানেজ করে ডাবর মহাসড়ক ও মহাসিং নদীর উপর দিয়ে প্রতিদিন কয়েক শতাধিক ট্রাক্টর ইট ভাটায় মাটি আনা নেওয়ার কাজ করছে। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে পানির গতিপথ।
মহাসিং নদীর উত্তর তীরের পুরাতন বাঁধ কেটে মাটি উত্তোলন করায় হুমকিতে রয়েছে উভয় তীরের কয়েকশত হেক্টর বোরো ফসলসহ বৈরী বাঁধও।
এছাড়াও ইটভাটার দূষিত ধোয়ায় বিনষ্ট হচ্ছে পরিবেশ এবং হুমকিত রয়েছে এক ফসলি জমি। এদিকে ইটভাটার আশেপাশের বাড়িঘরে ধোঁয়ায় বাড়ছে বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই। ব্রীক ফিল্ডের মালিক প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা ভয়ে তার বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করে না। ভারতের সাথে চোরাচালান ব্যবসা করে রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনেগেছেন। সুনামগঞ্জ পৌর শহরের হাছননগরস্থ শান্তিবাগ আবাসিক এলাকায় বহুতল ভবন নির্মাণ সহ বেশ কয়েকটি ফ্ল্যাট রয়েছে নাসির উদ্দীনের নামে। নাসির উদ্দীন নিজে ভ্যাকু গাড়ির সামনে দাড়িয়ে সরকারি বৈরী বাঁধ কেটে ছাড়পত্রহীন ইটভাটায় মাটি নিচ্ছেন।
মহাসিং নদীতে বাঁধ নির্মাণের বিষয়ে ইটভাটার মালিক নাসির উদ্দীন সাংবাদিক কে বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানান।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফজলে রাব্বানী মহাসিং নদীতে বাঁধ নির্মাণের বিষয়ে ইটভাটার মালিক নাসির উদ্দীনকে মোবাইলফোনে জানালে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টার ভিতরে বাঁধ কেটে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক রাখার নির্দেশ দেন।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া জানান, অভিযোগ পেয়ে সহকারী কমিশনার ভূমিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলে দিয়েছি।