লাকসাম (কুমিল্লা) প্রতিনিধি:
কুমিল্লার লাকসামে দোগাইয়া চাঁদপুর দরবারের দুই পীরকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়েছে। এ নিয়ে তৌহিদী জনতার ব্যানারে মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ ও পোষ্টারিং করা হয়। এদের একজন মঞ্জুর আলম পারভেজ ওরশ আয়োজনের ঘোষণা দেয়ায় এলাকার সাধারণ মুসুল্লি ও পীরের অনুসারীদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এলাকাবাসী জানায়, দেশ বরেণ্য মুফাচ্ছীর আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার বাদী তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী এবং সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত চাঁদপুরী দরবারের অপর পীর সৈয়দ মঞ্জুর আলম পারভেজসহ তাদের সহযোগীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সম্প্রতি তৌহিদী জনতার ব্যানারে কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের লাকসাম বাইপাসে মানববন্ধন এবং দৌলতগঞ্জ বাজারে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও ওই তিন পীরকে লাকসামে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে লাকসাম ও মনোহরগঞ্জে পোষ্টারিংও করা হয়। এরই মধ্যে মঞ্জুর আলম পারভেজ ওরশ আয়োজনের ঘোষণা দেয়ায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে লাকসাম থানার ওসি নাজনীন সুলতানা ওই পীরকে থানায় ডেকে নিয়ে ওরশ আয়োজন না করার অনুরোধ জানান। কিন্তু তিনি ওরশ আয়োজনে অনড় থাকেন।
লাকসাম থানার ওসি নাজনীন সুলতানা জানান, দু’পক্ষের উত্তেজনা বিষয়টি নজরে এলে মঞ্জুর আলম পারভেজ পীর সাহেবকে ওরশ আয়োজন না করার অনুরোধ করা হয়। কিন্তু তিনি ওরশ আয়োজনে অনড় থাকেন। তাই কুমিল্লা পুলিশ সুপারের অনুমতি নেয়ার জন্য উনাকে বলেছি।
এ বিষয়ে দোগাইয়া চাঁদপুরী দরবারের ভক্ত জহির উদ্দিন জানান, পারভেজ সাহেব মন্ত্রী তাজুলের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। ওনার অনুষ্ঠানে মন্ত্রীর শ্যালক মহব্বত, ভাতিজা আমীর, স্বঘোষিত সন্ত্রাসী শামীম চেয়ারম্যান, ইমন মেম্বার থাকতেন মূল মেহমান। তাদের হয়ে দরবারের পাশে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর তোলার জন্য মন্ত্রীর পক্ষে সরাসরি বক্তব্য রাখেন। যা বিভিন্ন মিডিয়ায় এসেছে। এছাড়াও ইমন মেম্বারকে দিয়ে দরবারের সীমানার ভেতর দিয়ে পার্শ্ববর্তীদের রাস্তা করে দিয়েছেন। এতে দরবার অরক্ষিত হয়ে পড়ে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় থেকে দরবার দখলের চেষ্টা করেছেন। এলাবাসীও এতে ক্ষুব্ধ। এছাড়াও তিনি নিয়ম-নীতি লংঘন করে জোর পূর্বক ওয়াকফ এস্টেটের মাধ্যমে দরবারের মোতয়াল্লী হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে, অভিযুক্ত পীর সৈয়দ মঞ্জুর আলম পারভেজ মুঠো ফোনে বলেন, আমি পীর না। আমি কেয়ার টেকার হিসেবে দরবারের কিছু খেদমত আঞ্জাম করছি। প্রায় ১৫ বছর ধরে মেডিক্যালি অ্যাপ্রুভ প্রক্রিয়ায় এখানে বাচ্চাদের সুন্নতে খৎনা করছি।
তবে অভিযোগের বিষয়ে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। দরবারে তার সাথে দেখা করতে বলে লাইন কেটে দেন।
এ বিষয়ে লাকসাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজনীন সুলতানা বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় এ দরবারে ওরশ না করতে অনুরোধ করেছি। তিনি জেলা পুলিশ সুপার থেকেই অনুমতি পাননি। তারা জানিয়েছে সুন্নতে খৎনা আর কয়েকজনকে তাবারুক দিবে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সেখানে আর্মি অবস্থান করছে। আমাদের পুলিশ অফিসারও সেখানে গেছেন।