ঠাকুরগাঁওয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার সাংবাদিক তানভীর হাসান তানুকে জামিন দিয়েছে আদালত।
রোববার (১১ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাংবাদিক তানুকে ঠাকুরগাঁও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) ডালিম কুমার রায় সাংবাদিক তানভীর হাসান তানুর ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
অন্যদিকে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে তার জামিন আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় ঠাকুরগাঁও সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুর রহমানের আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তানুর আইনজীবী মো. আরিফ।
এর আগে শনিবার রাতে থানা হাজতে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তানুকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের বিছানায় হাতকড়া দিয়ে বেঁধে রাখা হয় তাকে।
এদিকে তানভীর হাসান তানুকে গ্রেফতার ও হাসপাতালের বেডে হাতকড়া পড়িয়ে রাখার ঘটনায় সমালোচনার ঝড় উঠে। তানুর মুক্তির দাবিতে এবং মামলা প্রত্যাহার চেয়ে জেলা প্রেসক্লাব চত্বরে বিক্ষোভ করেন সাংবাদিকরা।
এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও উত্তাল হয়ে উঠে। সাংবাদিক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও ফেসবুক পোস্ট করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
তানুর বাবা আবু তাহের জানান, করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়েছিলেন তানু। সম্প্রতি এ রোগ থেকে সুস্থ হন। তবে এখনও তিনি অসুস্থতা অনুভব করছেন। তাকে নিয়মিত ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছে।
তানু ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন, দৈনিক ইত্তেফাক ও অনলাইন সংবাদপত্র জাগো নিউজের ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত। ঠাকুরগাঁওয়ে করোনা রোগীদের খাবারের জন্য বরাদ্দ দেয়া টাকা আত্মসাৎ করে নিম্নমানের খাবার সরবরাহ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মামলায় শনিবার তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
জানা যায়, গত ৫ ও ৬ জুলাই ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের খাবার নিয়ে জাগোনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকম ও বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে সংবাদ প্রকাশ করেছিলেন সাংবাদিক তানভীর হাসান তানু, রহিম শুভ ও আব্দুল লতিফ লিটু।
এ সংবাদ প্রচারের পরই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসে। সংবাদটি ‘মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট, জনরোষ সৃষ্টিকারী ও মানহানিকর’ দাবি করে ৯ জুলাই হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. নাদিরুল আজিজ বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিক তানভির হাসান তানু, রহিম শুভ ও আব্দুল লতিফ লিটু এবং অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
শনিবার (১০ জুলাই) রাত সাড়ে আটটার দিকে মামলার খোঁজখবর নিতে থানায় গেলে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এ মামলায় অন্য দুই আসামি হলেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের জেলা প্রতিনিধি আব্দুল লতিফ লিটু ও নিউজবাংলা টোয়েন্টিফোর ডটকমের জেলা প্রতিনিধি রহিম শুভ।