আলিফ হোসেন,তানোরঃ
রাজশাহীর তানোরের বিস্তীর্ণ এলাকায়
আমনখেতে সাতরা পোকার (বোগা পোড়া) আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এতে ধান গাছের পাতা হলুদ রং ধারণ করে গাছ দেবে যাচ্ছে। রোগ প্রতিরোধে কৃৃৃৃষি বিশেষজ্ঞ পরামর্শ ছাড়াই অনুমান নির্ভর কীটনাশক ব্যবহার করে কৃষকেরা ক্ষতির মুখে পড়েছে। এঘটনায় কৃষি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কৃষকদের মাঝে চরম অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, কৃষকদের সুবিধার্থে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের নিজ কর্মস্থলে থাকা বাধ্যতামুলক। কিন্ত্ত আলোচিত এই কৃষি কর্মকর্তা সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে রাজশাহী শহর থেকে যাতায়াত করেন। তিনি কখানোই অফিস সময় মানেন না। তিনি সরকারি গাড়ি নিয়ে ঘুঘুডাঙ্গা, তুলসিক্ষেত্র, আন্ধরসুরা পদ্মবিল ভ্রমন করেন বলে কৃষকেরা জানান।
উপজেলার বাধাইড় ইউনিয়নের (ইউপি) কৃষক আব্দুল লতিব বলেন, হরিশপুর মাঠে তিনি ৫ বিঘা জমিতে রোপাআমণ চাষ করেছেন। আমণখেতে এই রোগের প্রভাবে ফসলহানির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কীটনাশক ব্যবসায়ির পরামর্শে পচন ও কারেন্ট পোকার বিষ দিয়েও রোগ দূর হয়নি। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত কৃষি অফিসের লোকজনের কোন দেখাও পাওয়া যায়নি। আমণ চাষে এখন পর্যন্ত একবিঘা জমিতে খরচ হয়েছে প্রায় ১২ হাজার টাকা। উপজেলার পাঁচন্দর ইউপির প্রানপুর গ্রামের কৃষক যুবদল নেতা কামরুল ইসলাম বলেন, প্রথম দিকে অল্প পরিমানে ধানগাছের পাতা হলুদ আকার ধারন করে, আমি ২০ বিঘা জমিতে রোপা আমন লাগিয়েছে, এর মধ্যে বিঘা জমির ধানে এই রোগ দেখা দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, এলাকার জাহাঙ্গীরের ২ বিঘা, এরবানের ৭ বিঘা জমিতে চাষাবাদ করেছে তার মধ্যে দেড় বিঘায় এই রোগ, রফিকের ১৪ বিঘার মধ্যে এক বিঘায়, আইনুল মাস্টারের ৭ বিঘের মধ্যে দেড় বিঘায় এই রোগের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। আব্দুুল লতিফ বলেন, প্রচন্ড খরার কারনে এই রোগের প্রাদুর্ভাব। আমরা কোন সময় মাঠে কৃষি অফিসের লোকজনকে দেখি না। আমরা পা ফাটা লুঙ্গি পরা কৃষক অফিসে গিয়েও এসি রুমের ভেতর যাবার সাহস পায় না। কৃষকরা আরো বলেন, এবার রোপাআমণ রোপণের সময় থেকে প্রচন্ড খরতাপের মধ্যে পড়ে। সেচ দিয়ে ধানগাছ কোনো রকমে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছিল। তবে খরার কারণে আমণখেতে প্রচুর আগাছা দেখা দেয়। এতে এক বিঘা জমির আগাছা পরিস্কার করতে প্রায় ৫ থেকে ৬ হাজর টাকা খরচ হয়েছে। বৃষ্টি নির্ভর রোপাআমণ চাষাবাদে খরচ একটু কম হব, তবে এবারের চিত্র পুরোটা ভিন্ন। জমি তৈরী থেকে রোপণ ও পরবর্তীতেও সেচ দিয়ে ধানগাছ বাঁচিয়ে রাখতে হয়েছে। উপজেলার স্বর্ণপদক প্রাপ্ত আদর্শ কৃষক নুর মোহাম্মদ বলেন, প্রচন্ড খরতাপের কারনে এই রোগের সৃষ্টি। এটা সাতরা পোকার আক্রমণের কারনে পাতা হলুদ হয়ে বসে গেছে। জমির যেখানে এরোগের আক্রমণ হয়েছে সেখানে ফলন হবে না। বিশেষ করে উঁচু জমিতে এই রোগের আক্রমণ ব্যাপক আকার ধারন করেছে। তিনি বলেন, এই রোগের আক্রমণ দেখা দেবার সঙ্গে সঙ্গে সেখান কার ধান গাছ তুলে ফেলে নতুন ধান গাছ রোপণ করতে হতো, কিন্তু এখন আর উপায় নেই। তিনি বলেন, দুঃখজনক সত্যি কৃষি কর্মকর্তা স্টেশনে থাকেন না অফিস সময় মানেন না। এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ বলেন, জিংক বা ক্রমির জন্য এই ধরণের রোগ হতে পারে। তবে জমিতে না গিয়ে বলা যাবে না। তাহলে কি এই রোগ সম্পর্কে অবহিত না জানতে চাইলে তিনি বলেন, অজানা না কিছু কিছু জায়গায় গিয়েছি বলে দায় সারেন এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, এবার উপজেলায় ২১ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের চাষাবাদ হয়েছে।#