মার্কো ভেরাত্তি চোট কাটিয়ে ফিরলে ইতালি সমর্থকেরা কি তাঁকে দলে চাইবেন? মনে হয় না!
প্রথম ম্যাচে গোল না পেলেও অসাধারণ খেলেছিলেন ভেরাত্তির জায়গায় সুযোগ পাওয়া মানুয়েল লোকাতেল্লি। আর দ্বিতীয় ম্যাচে ইউরোর মঞ্চে নিজেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয় করিয়ে দিলেন।
রোমের স্তাদিও অলিম্পিকোতে সাসসুয়োলোর এই মিডফিল্ডারের জোড়া গোলেই ইউরোতে আজ সুইজারল্যান্ডকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে ইতালি। নিশ্চিত করেছে নকআউট পর্বে নিজেদের অংশ গ্রহণ। বাকি গোলটা লাৎসিও স্ট্রাইকার চিরো ইম্মোবিলের। যেমন দুর্দান্ত খেলছেন লোকাতেল্লি, ভেরাত্তি সুস্থ হলেও মূল একাদশে আর জায়গা কি পাবেন?
প্রথম ম্যাচের সঙ্গে ইতালির একাদশে তেমন কোনো পরিবর্তন ছিল না এই ম্যাচে। শুধু চোটে পড়া রাইটব্যাক আলেসসান্দ্রো ফ্লোরেঞ্জির জায়গায় সুযোগ পেয়েছিলেন নাপোলির জোভান্নি দি লরেঞ্জো।
শুরু থেকেই আগের ম্যাচের মতো দাপট দেখাতে শুরু করে দলটা। যে দলটা আজীবন রক্ষণাত্মক খেলে অভ্যস্ত, ‘কাতেনাচ্চিও’ ধারার জনক, সেই ইতালির এমন খেলা দেখে কে বলবে সেটা? ইনসিনিয়া, ইম্মোবিলে, বেরার্দি, জর্জিনিও, বারেল্লা, লোকাতেল্লি, স্পিনাৎসোলা – প্রত্যেকে দ্যুতিময়, উজ্জ্বল, ভাস্বর!
অবশ্য সুইজারল্যান্ডও পিছিয়ে ছিল না। তারা বুঝেছিল, নতুন রূপে দেখা দেওয়া এই ইতালিকে থামাতে গেলে তাদের মতো আক্রমণাত্মকভাবেই খেলতে হবে। যে কারণে প্রথম থেকে সুইসরাও বল কেড়ে নিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে সমানতালে। ইতালি যেন পেছন থেকে খেলা গড়তে না পারে এজন্য কিয়েল্লিনি-বোনুচ্চিদের একই ছন্দে প্রেস করে গেছেন সেফারোভিচ-শাকিরিরা। লাভ হয়নি। ইতালি ধৈর্য্য ধরেছে। ধৈর্য্য ধরে আক্রমণে গেছে।
১৯ মিনিটে আক্রমণের সুফল প্রায় পেয়েই গিয়েছিল ইতালি। ইনসিনিয়ার কাছ থেকে বল পেয়ে হেড করতে মিস করলেও পা ঠেকিয়ে গোল করেন কিয়েল্লিনি। কিন্তু ভিএআরের সাহায্যে দেখা যায়, গোল হওয়ার আগে বল লেগেছিল কিয়েল্লিনির হাতে। ফলাফল, গোল বাতিল। ইতালির চিন্তা বাড়িয়ে হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে পড়ে এর কিছুক্ষণের মধ্যেই মাঠ ছাড়েন কিয়েল্লিনি, মাঠে আসেন ফ্রান্সেসকো আসেরবি।
কিয়েল্লিনি উঠে যাওয়ার কারণে চিন্তা করার সময় পায়নি ইতালি। ২৭ মিনিটে বেরার্দির দুর্দান্ত এক পাসে গোল করেন লোকাতেল্লি।
বাকি ম্যাচ এমন চেনা রেসিপি মেনেই এগিয়েছে। দ্বিতীয়ার্ধে ৫২ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোল পেয়ে যান লোকাতেল্লি। এরপর ইতালিকে চেপে ধরেও সুবিধা করতে পারেনি সুইসরা। পরে দলের সবচেয়ে প্রতিভাবান খেলোয়াড় শাকিরিকে মাঠ থেকে উঠিয়ে রুবেন ভারগাসকে নামিয়ে নিজেদের ভাগ্য পরীক্ষা করে দেখেন কোচ পেতকোভিচ। লাভ হয়নি। শেষে ৮৯ মিনিটে গোল করে ইতালির দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়া নিশ্চিত করে ফেলেন ইম্মোবিলে।
এর আগে কখনও এক ম্যাচে তিন গোল না করা ইতালি এবার আসরের প্রথম দুই ম্যাচেই টানা তিনটি করে গোল করল। এই ইতালিকে অন্য ইতালি বলবেন না তো কী বলবেন?