নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, এই সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় করোনার প্রতি, মানুষের স্বাস্থ্যের প্রতি, মানুষের জীবন-জীবিকার প্রতি অবহেলা করেছে। আমরা নিঃসন্দেহে বলতে পারি, এই সরকারের হাতে দেশের সাড়ে ১৭ কোটি মানুষ নিরাপদ নয়।
আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের এক মানববন্ধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মান্না বলেন, স্বাস্থ্য খাত বলে কিছু আছে, এটা বাংলাদেশের মানুষ দেখে না। যে রোগই হোক না কেন, প্রাইভেট হাসপাতালে কোনো রোগী ঢুকলে তিনি এবং তাঁর পরিবার সর্বস্বান্ত হয়ে যান। সীমান্তের তিনটি জেলাতে এখন পর্যন্ত কোনো আইসিইউ ও অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা হয়নি।
সারা দেশের গ্রাম–গ্রামান্তরে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে উল্লেখ করে মান্না বলেন, ঢাকায় ইতিমধ্যে যাঁরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ৬২ শতাংশ ভারতীয় ডেলটা ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত। যখন ভারতে করোনা সর্বগ্রাসী রূপ নিয়েছিল, তখন সবাই অনুরোধ করেছিল সীমান্ত বন্ধসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে। কিন্তু এই সরকার কেবল মুখে মুখ বলেছে, কিন্তু কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সরকার নামেই একটা লকডাউন চালু রেখেছে। এই সরকার বাস, ট্রেন, কলকারখানাসহ সব কিছু চালু করে দিয়েছে।
দেশের সব কিছু চালু আছে, শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু নেই উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘১৪ মাস ধরে একটিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলে না। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ভেবে বাংলাদেশের সব নাগরিক উদ্বিগ্ন। ইন্টারনেটের ভয়াবহ প্রভাবে কিশোরেরা বিপথগামী হচ্ছে, তারা অশ্লীলতার পঙ্কিলতার মধ্যে ডুবে যাচ্ছে। অথচ আমাদের শিক্ষামন্ত্রী বলেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে তার ওপর কোনো চাপ নেই। সারা দেশের শিক্ষক-ছাত্র-অভিভাবকেরা সোচ্চার কণ্ঠে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি করছেন। যদি বাস চলে, ট্রেন চলে, স্টিমার চলে, সব কলকারখানা, অফিস-আদালত চলে, তাহলে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা দিয়ে কেন খুলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালাতে পারেন না। অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
মাহমুদুর রহমান বলেন, সারা বিশ্ব বলছে করোনার অভিঘাত থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র উপায় যত তাড়াতাড়ি সম্ভব টিকাদানের ব্যবস্থা করা। আমেরিকায় ৩০ শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। ইউরোপসহ নানা দেশে টিকা দেওয়া হচ্ছে এবং ধীরে ধীরে বিধিনিষেধ তুলে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকারের কাছে যত টিকা আছে, তাতে মাত্র ৩ শতাংশ মানুষ টিকা পাবে।
ধর্মীয় বক্তা মো. আফছানুল আদনানের (আবু ত্ব-হা মোহাম্মদ আদনান) নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারে সরকার কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলেও মন্তব্য করেন মাহমুদুর রহমান মান্না।
মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ এবং বিএনপির সাবেক সাংসদ বিলকিছ ইসলাম।
সূত্রঃ প্রথম আলো