গোলাম রাব্বানী, নওগাঁ
নওগাঁ জেলার মাঠে মাঠে এখন দেখা মিলছে বোরো ধানের চারা রোপণের উৎসব। কাক ডাকা ভোর থেকে শুরু করে দিনের শেষ মুহূর্ত পযন্ত মাঠে চলছে কৃষকের ব্যস্ততা।
জমিতে পানি সেচ, হালচাষ, বীজতলা থেকে চারা উত্তোলন ও রোপণ সব নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।
নওগাঁর বেশিরভাগ কৃষক এরই মধ্যে শেষ করেছে জমি প্রস্তুতির কাজ। কৃষকরা বলছেন, পৌষ মাসের মাঝামাঝিতেই বোরো ধান রোপণের কাজ শেষ হয়ে যায়। কিন্তু মৌসুমের শুরুতে প্রচণ্ড শীত আর ঘনকুয়াশার কারণে কৃষকরা মাঠে নামতে পারেননি। তাই চলতি মৌসুমে বোরো ধান রোপণে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। তবে এখন পুরো দমে চলছে কাজ।
নওগাঁ মান্দা উপজেলার ভারশোঁ এলাকার গোলাম রাব্বানী জানান, কিছু দিন আগেও প্রচণ্ড শীত আর ঘনকুয়াশার কারণে দুশ্চিন্তায় পড়তে হয়েছিল। অনেক কৃষকের বীজতলা লাল হয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে তাদের নতুন করে বীজতলা তৈরি করতে হয়েছে। তবে এখন আবহাওয়া মোটামুটি ভালো। এ জন্য মাঠে কৃষকরা নেমে পড়েছেন। আর ১৫ দিনের মধ্যেই সব জমিতে রোপণ কাজ শেষ হয়ে যাবে।
আত্রাই উপজেলার কৃষক শফিকুল ইসলাম জানান, এ বছর জমি রোপণে অনেকটা দেরি হয়ে গেছে। প্রথম দিকে প্রচণ্ড শীতে কৃষকরা মাঠে নামতে পারেননি। ফলে জমি তৈরির কাজ ঠিক সময় মতো করা সম্ভব হয়নি। শীতের পাশাপাশি প্রথম দিকে কৃষি শ্রমিকেরও সংকট ছিল। বেশি দাম দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছিল না। তবে এখন শীতের দাপট কমায় মাঠে মাঠে কৃষকের ব্যস্ততা বেড়েছে।
নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু হোসেন জানান, কুয়াশায় বীজতলা নষ্টের সম্ভাবনা আছে। বীজতলা রক্ষার জন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের সবসময় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। অতিরিক্ত কুয়াশায় বীজতলার ঠিকমতো পরিচর্যা না করলে নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এ জন্য প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা বীজতলার পানি পরিবর্তন করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আর রাতে পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখতে হবে। তাহলে বীজতলা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশেই কম থাকবে।
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চালিত মৌসুমে নওগাঁ জেলায় ১ লাখ ৮৯ হাজার জমিতে বোরো ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছ নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এখন পর্যন্ত জেলায় ৬৩ হাজার ৯০৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণ সম্পন্ন হয়েছে।