মোঃ শাকিল আহমেদ, বামনা ( বরগুনা) প্রতিনিধিঃ
১৫ নভেম্বর ২০০৭ এই অঞ্চলের প্রতিটা মানুষের কাছে একটি আতঙ্কের নাম সিডর।
সেদিন শত শত মানুষ কে বানের পানিতে মৃত ভাসতে দেখা গেছে। অসংখ্য মানুষ আপনজন হারিয়েছেন। অসংখ্য ঘরবাড়ি উড়িয়ে নিয়েছে। অনেক পরিবারকে সর্বশান্ত করেছে। মৃত ব্যক্তিদের দাফন করার মতো জায়গা ছিল না। আজ ও ভূলতে পারে নি সিডরের কথা উপকূল বাসি। আজ সেই ভয়াল ১৫ নভেম্বর। ২০০৭ সালের ১৪ নভেম্বর রাতে উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে আঘাত হেনেছিল সাইক্লোন প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় সিডর ‘। সেই দিনের বেদনাবিধুর ইতিহাস আজো ভূলতে পারেনি বরগুনার মানুষ। দিনটি এলাকাবাসীর জন্য শোকের দিন।
এর ধ্বংসলীলায় মুহূর্তেই পাল্টে যায় উপকূলীয় জনপদের জীবন। সেই দুঃসহ স্মৃতিতে এখনো আঁতকে ওঠে উপকূলীয় মানুষ।
মহাবিপদ সঙ্কেত বুঝতে না পারার খেসারত দিতে হয়েছে উপকূলবাসীর প্রাণ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে। প্রবল জলোচ্ছ্বাসের স্রোতে ভেসে যায় গবাদি পশু, হাঁস-মুরগি ও ক্ষতিগ্রস্ত হয় পশুপাখি, ফসল ও অসংখ্য গাছপালা। মুহূর্তেই ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হয়। গ্রামে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে লাশ আর লাশ। বাতাসে লাশের গন্ধ আর স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে এ এলাকার আকাশ বাতাস।
ঘড়ির কাটায় তখন রাত ৭ টা ৪০ মিনিট। মহাবিপদ সংকেতের কথা শুনে আতঙ্কিত উপকূলের মানুষ। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির সাথে দমকা হাওয়া বইছে। সচেতন মানুষগুলো যেতে শুরু করলেন আশ্রয় কেন্দ্রে। বেশীর ভাগ মানুষই রয়ে গেলেন বাড়িতে। তাদের ধারনা ছিল, কত ঝড়ই আইলো গেলো-এবারেও তাদের কিছু হবেনা। সিডর আঘাত হানতে শুরু করেছে উপকূলীয় এলাকায়। মানুষের ঘর যেন এখনই উড়িয়ে নিয়ে যাবে। তার সাথে যুক্ত হলো পানি প্রবাহ। রাত সাড়ে ১০ টার দিকে বঙ্গোপসাগরের সব জল জম দূতের মতো এসে মানুষগুলোকে নাকানি-চুবানী দিয়ে কেড়ে নিতে শুরু করলো। মাত্র ১০ মিনিটের জলোচ্ছ্বাসে উপকূলের কয়েক হাজার মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। পুরো এলাকা হয়ে গেলো লন্ডভন্ড। চারিদিকে ধ্বংসলীলা। লাশের পর লাশ পাওয়া যাচ্ছে।