সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক উপদেষ্টা হারিছ চৌধুরী ১৪ বছর লুকিয়ে ছিলেন ছদ্মবেশে সংগৃহীত
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার অন্যতম যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি হারিছ চৌধুরীকে মরিয়া হয়ে খুঁজছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এলে হঠাৎ আত্মগোপনে চলে যান তিনি। এরপর ১৪ বছর তিনি ছিলেন লোকচক্ষুর অন্তরালে। বিভিন্ন সময় শোনা যায়, দেশের বাইরে আত্মগোপন করেছেন হারিছ।সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার এই রাজনৈতিক উপদেষ্টার মৃত্যু নিয়ে রয়েছে কৌতূহল, রয়েছে নানা মত। কারও কারও বিশ্বাস, হারিছ চৌধুরী সত্যিই মারা গেছেন। অনেকে আবার মনে করেন, গোয়েন্দাদের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরিয়ে রাখতেই মৃত্যুর খবর প্রচার করছেন হারিছ।
আসল ঘটনা কোনটি? এ বিষয়ে অনুসন্ধান করেছে দৈনিক মানবজমিন। উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পাঠকদের জন্য সেই প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হলো-
গত ১৫ জানুয়ারি মানবজমিন জানায়, কোভিড আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে হারিছ চৌধুরীর। তার বিলেত প্রবাসী মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা চৌধুরীর বরাত দিয়ে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।
সামিরা জানান, তার বাবা হারিছ চৌধুরী গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর কোভিড আক্রান্ত হয়ে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। যদিও হারিছের ভাই আশিক চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, ঢাকায় নয়, হারিছের মৃত্যু হয়েছে লন্ডনে। এই খবর প্রকাশের পর অনেকেই বিশ্বাসযোগ্য নয় বলে উড়িয়ে দেন।
গোয়েন্দারা একাধিকবার সংবাদপত্রটির অফিসে ফোন করে খবরের সত্যতা জানতে চান। এরপর থেকে অনুসন্ধানে নামে মানবজমিন।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, হারিছ চৌধুরী দীর্ঘ ১৪ বছর গোয়েন্দাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে “মাহমুদুর রহমান” নামে আত্মগোপনে ছিলেন। তিনি বিদেশেও যাননি। বাংলাদেশের ভেতরেই ছিলেন এবং ঢাকাতেই বেশিরভাগ সময় কাটান। ওয়ান ইলেভেনের পরপরই কিছুদিন সিলেটে অবস্থান করেন। ঢাকায় ফিরে তিনি নাম পাল্টে রাখেন মাহমুদুর রহমান। দীর্ঘ ১৪ বছর এই নামেই পরিচিত ছিলেন তিনি। নিজেকে পরিচয় দিতেন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক হিসেবে। ঢাকার পান্থপথে প্রায় ১১ বছর কাটিয়ে দেন এই পরিচয়ে।
ভিন্ন নামে পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র
এই সময় তিনি “মাহমুদুর রহমান” নামে একটি পাসপোর্টও নেন। যার নম্বর- BW0952982। ওই পাসপোর্ট শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার ঠিকানা ব্যবহার করা হয়। বাবার নাম লেখা হয়- আবদুল হাফিজ। ২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে এই পাসপোর্ট ইস্যু হয়। পাসপোর্টে ব্যবহৃত ছবিতে তার চেহারায় এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন ধরা পড়ে। সাদা লম্বা দাড়ি। চুলের রঙও পুরোপুরি সাদা। চেহারায় পড়েছে বয়সের ছাপ। শুধু পাসপোর্টই নয়, মাহমুদুর রহমান নামে জাতীয় পরিচয়পত্রও পেয়ে যান হারিছ। তার এনআইডি নম্বর- ১৯৫৮৩৩৯৫০৭।
এই পাসপোর্ট ও এনআইডির সূত্র ধরে প্রায় দু’মাস অনুসন্ধানের পর মানবজমিন জানতে পারে, অধ্যাপক মাহমুদুর রহমানই আলোচিত রাজনৈতিক নেতা হারিছ চৌধুরী।
চলাফেরা ও আশেপাশের মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক
হারিছ এই ছদ্মবেশে কীভাবে ঢাকায় ছিলেন তাও উঠে এসেছে মানবজমিনের অনুসন্ধানে। জানা গেছে, তিনি ঢাকার পান্থপথে একটি ভাড়া করা অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে থাকতেন। বাসা থেকে খুব একটা বের হতেন না। একজন নারী গৃহকর্মী ও একটি ছেলে থাকতো তার সঙ্গে। বই পড়ে সময় কাটাতেন। নামাজ পড়তেন নিয়মিত। নানা রোগে আক্রান্ত ছিলেন।
অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সের ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি তিন বছর ধরে এখানে কাজ করি। তার সম্পর্কে ব্যক্তিগত তথ্য খুব একটা জানতাম না। শুনেছি তার স্ত্রী ও সন্তানরা থাকেন লন্ডনে। কেউ কোনোদিন আসেনি। আসা-যাওয়ার সময় সালাম দিতাম। তিনি হাসিমুখে সালাম নিতেন। তাকে সবাই প্রফেসর সাহেব বলেই জানতো। নিঃসঙ্গ এই মানুষটির মৃত্যুও হয় নিঃসঙ্গতায়।
সাইফুল আরও বলেন, একদিন ভোর রাতে কেউ একজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। শুনেছি হাসপাতালে থাকার পর তার মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর পর তার মেয়েকে দেখি। প্রথমে আমাদের জানাতেও চাননি স্যার মারা গেছেন। মারা যাবার পর দুই মাস এই বাড়িতেই ছিলেন জামাইসহ। গত জানুয়ারিতে তারা বাসা ছেড়ে দেন।
হারিছ চৌধুরী বাসা থেকে খুব কম বের হতেন। কথাও বলতেন না। বাসার সামনের একটি ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনতেন। সেই ফার্মেসি সূত্রে জানা যায়, তিনি উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিক ও হৃদরোগের ওষুধ কিনতেন।
ফার্মেসির মালিক সুমন খন্দকার বলেন, স্যার খুব ভাল মানুষ ছিলেন। কখনো বাকিতে ওষুধ নিতেন না। পাশেই একটি মুদি দোকান। সেই দোকান থেকেই জিনিসপত্র কিনতেন। দোকানের মালিক মোহাম্মদ সুজন বলেন, তিনি তো খুব ভাল মানুষ ছিলেন। সব সময় আমার দোকান থেকে চাল, ডাল, তেল এসব প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতেন।
ফ্ল্যাট মালিক জানান, তার মৃত্যু সম্পর্কে কিছুই জানেন না। প্রফেসর সাহেব নিয়মিত ভাড়া দিতেন। ভালো মানুষ ছিলেন।
মৃত্যু ও দাফন
মাহমুদুর রহমান নামেই হাসপাতালে ভর্তি হন হারিছ। দাফনও হয় এই নামে।
অনুসন্ধানে উঠে আসে, গত বছর ২৬ আগস্ট কোভিডে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। এর আগে অন্য একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। মারা যান ৩ সেপ্টেম্বর। ডেথ সার্টিফিকেটে বলা হয়েছে তিনি Covid with Septic Shock-এ মারা গেছেন। তিনি প্রফেসর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মাহবুব নূরের অধীনে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ৪ সেপ্টেম্বর সার্টিফিকেট ইস্যু করেন সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আ.ক.ম. নূর।
তার মৃতদেহ গ্রহণ করেন মেয়ে সামিরা চৌধুরী। এরপর একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে গোসলের জন্য মোহাম্মদপুর নিয়ে যাওয়া হয়। কাফনের কাপড় কেনেন মোহাম্মদপুরের মাইকআউস স্টোর থেকে।
সামিরা চৌধুরী জানান, প্রথমে কেউই কোভিড আক্রান্ত রোগীর লাশ গোসল করাতে রাজি হয়নি। পরে যাই হোক রাজি হওয়ার পর গোসল সম্পন্ন হয়। দাফন নিয়েও জটিলতা তৈরি হয়। কোথায় দাফন হবে। এরপর আত্মীয়স্বজনের পরামর্শে সাভারে দাফনের সিদ্ধান্ত হয়। লাশ নিয়ে যাওয়া হয় সাভারের লালাবাদ কমলাপুরে। জামিয়ার কর্ণধার শাইখুল হাদিস আশিকুর রহমান কাশেমী সাহেব রাজি হলে তাকে জামিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণেই দাফন করা হয়।
কেন এই গোপনীয়তা জানতে চাইলে সামিরা চৌধুরী বলেন, ১৪ বছর যে মানুষটি আত্মগোপনে ছিলেন তার খবর প্রকাশ করা সহজ ছিল না। নানা ভয় আর আতঙ্ক কাজ করেছে। তবে এটা নিশ্চিত করে বলতে পারি অধ্যাপক মাহমুদুর রহমানই আমার বাবা হারিছ চৌধুরী। ডিএনএ টেস্ট করলেই এটা খোলাসা হয়ে যাবে। জীবিত থাকা অবস্থায় আমি লন্ডন থেকে টেলিফোনে উনার সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছি। আমার স্বামীও চার বছর আগে একবার ঢাকায় তার সঙ্গে দেখা করে। সুইজারল্যান্ডে অবস্থানরত আমার ভাই নায়েম শাফি চৌধুরীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। সে এখন সুইজারল্যান্ডে সিনিয়র এনার্জি অ্যানালিস্ট হিসেবে কর্মরত রয়েছে। সেলিম চাচাও নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। যিনি সম্প্রতি মারা গেছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, হারিছ চৌধুরী দু’বার আত্মসমর্পণ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার পরামর্শকরা এতে সায় দেননি।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় হারিছ চৌধুরীর যাবজ্জীবন সাজা হয়। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তাকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ.এম.এস কিবরিয়া হত্যা ও বিস্ফোরক মামলারও আসামি ছিলেন হারিছ চৌধুরী। গত ১৪ বছর গোয়েন্দারা তাকে হন্যে হয়ে খুঁজে তার সন্ধান পাননি। হারিছ চৌধুরী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোক প্রশাসন ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন।
যুক্তরাজ্যে তিনমাস আগে মারা যান হারিছ চৌধুরী
প্রায় সাড়ে তিন মাস আগে তিনি মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন তার চাচাতো ভাই
প্রকাশিত: ০৩:০৯ দুপুর জানুয়ারি ১২,
যুক্তরাজ্যে প্রায় সাড়ে তিন মাস আগে মারা গেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব ও ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি হারিছ চৌধুরী।
বুধবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে তার চাচাতো ভাই ও কানাইঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী ঢাকা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, “গত সেপ্টেম্বরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তাকে লন্ডনে দাফন করা হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে লন্ডনে থাকতেন তিনি।” লন্ডনের কোন এলাকায় তিনি মারা গেছেন-সে প্রশ্ন এড়িয়ে যান সিলেট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির এ সদস্য।
মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) মৃত্যুর প্রায় তিন মাস পর নিজের ফেসবুক পোস্টে হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর খবর জানান তিনি। এতো দেরিতে ভাইয়ের মৃত্যুর খবর জানানো প্রসঙ্গে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, তখন তিনি (আশিক চৌধুরী) যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন। যে কারণে তিনি তখন মৃত্যুর খবর জানাতে পারেননি।
আশিক চৌধুরী জানান, হারিছ চৌধুরী গত বছরের আগস্টের মাঝামাঝি লন্ডনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে তিনি বাসায় ফেরেন। কয়েকদিন পর তার করোনাভাইরাসের রিপোর্ট নেগেটিভও আসে।
সাময়িকভাবে কোভিডের ধকল কাটিয়ে উঠলেও তার ফুসফুস মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফুসফুসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় একপর্যায়ে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে যুক্তরাজ্যের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থান মারা যান হারিছ চৌধুরী। তার মৃত্যু সংবাদ মেয়ে মুন্নু চৌধুরী ফোনে দেশে জানিয়েছেন বলে জানান আশিক চৌধুরী।
এর আগে, হারিছ চৌধুরীর সঙ্গে একটি ছবি যুক্ত করে এক ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, “ভাই বড় ধন, রক্তের বাঁধন।” ওই পোস্টে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ‘ইন্নালিলাহি… রাজিউন’ লিখে কমেন্ট করতে থাকেন।
২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব ছিলেন হারিছ চৌধুরী। পাশাপাশি বিএনপির যুগ্ম মহাসচিবও ছিলেন তিনি। সে সময়ের প্রভাবশালী এই নেতা বিএনপি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। ২০১৮ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে যাবজ্জীবন সাজা হয় হারিছ চৌধুরীর।
জানা গেছে, স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ে নিয়ে হারিছ চৌধুরী যুক্তরাজ্যে থাকতেন। তার ছেলে জনি চৌধুরী পেট্রোলিয়াম ইঞ্জিনিয়ার। আর মেয়ে মুন্নু চৌধুরী ব্যারিস্টার। আগে থেকেই হারিছ চৌধুরী ব্ল্যাড ক্যান্সারসহ নানা জটিল রোগে ভুগছিলেন। ২০০২ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে একবার রক্ত পরিবর্তন করেন। দেশ থেকে পালানোর পর তিনি যুক্তরাজ্যে আরেকবার রক্ত পরিবর্তন করেন বলে পারিবারিক সূত্র জানায়।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, আক্রান্ত হওয়ার আগে হারিছ চৌধুরী করোনাভাইরাসের দুই ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন। করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার পর তার রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায় এবং পুরো ফুসফুস সংক্রমিত হয়ে পড়ে। ফলে করোনাভাইরাস নেগেটিভ হওয়ার পরও তিনি ফুসফুস জটিলতায় ভুগছিলেন।
জানা যায়, ২০০৭ সালে দেশে জরুরি অবস্থা জারির সপ্তাহখানেক পর স্ত্রীকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দর্পনগরে বেড়াতে আসেন হারিছ চৌধুরী। ওই রাতেই যৌথবাহিনী তার বাড়িতে অভিযান চালায়। তবে তখন তাকে পাওয়া যায়নি। এরপর কয়েক দিন সিলেটের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে থাকেন।
জানা যায়, ২০০৭ সালের ২৯ জানুয়ারি জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে যান বিএনপি সরকারের দাপুটে এই নীতিনির্ধারক। এরপর তিনি ভারতের আসাম রাজ্যের করিমগঞ্জ জেলার বদরপুরে নানার বাড়িতে ওঠেন। সেখান থেকে পাকিস্তান হয়ে ইরানে তার ভাই আবদুল মুকিত চৌধুরীর কাছে পৌঁছান এমন খবরও শোনা যায়। কয়েক বছর সেখানে থেকে যুক্তরাজ্যে পরিবারের কাছে যান তিনি। সেখান থেকে ভারতে যাতায়াত করতেন এবং ব্যবসা-বাণিজ্য দেখভাল করতেন বলে একাধিক সূত্র বিভিন্ন সময় নিশ্চিত করেছে।
প্রসঙ্গত, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় ২০১৮ সালে যাবজ্জীবন সাজা হয় হারিছ চৌধুরীর। একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তার ৭ বছরের জেল ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা হয়।