রাহাদ সুমন,বানারীপাড়া(বরিশাল)প্রতিনিধি॥ পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার আটঘর- কুড়িয়ানা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক শেখর কুমার সিকদারকে প্রকাশ্য দিবালোকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যার মামলার প্রধান আসামী বর্তমান চেয়ারম্যান মিঠুন হালদারসহ ৪জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৮। বুধবার (৩১ জানুয়ারি) ভোররাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ওইদিন দুপুর ১২টায় প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এসব তথ্য জানান র্যাব-৮-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী যুবায়ের আলম। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- কুড়িয়ানা ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান ও কুড়িয়ানা গ্রামের বাসিন্দা সমীরন হালদারের ছেলে মিঠুন হালদার (৪৪), তার ছোট ভাই সুষময় হালদার (১৮), একই ইউপির মুসলিম গ্রামের ফারুক হোসেনের ছেলে জালিস মাহমুদ (২৪) ও সংগীতকাঠি গ্রামের মৃত দেলোয়ার হোসেনের ছেলে আমিনুল ইসলাম (২৩)। এ প্রসঙ্গে র্যাব-৮’র অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী যুবায়ের আলম বলেন, গত মঙ্গলবার ( ৩০ জানুয়ারি ) সকাল সাড়ে ১০টায় কুড়িয়ানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগদানের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে রওনা দেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শেখর কুমার সিকদার। কুড়িয়ানা বাজারের কাছে পৌঁছলে বর্তমান চেয়ারম্যান মিঠুন হালদারের নেতৃত্বে ২৫-৩০ জন শেখর কুমার সিকদারের পথরোধ করেন। পরে তারা লাঠি ও ইট দিয়ে পিটিয়ে শেখরকে মৃত ভেবে ফেলে রেখে পালিয়ে যান। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্বরূপকাঠি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় শেখর কুমার সিকদারের স্ত্রী মালা মন্ডল বাদী হয়ে স্বরূপকাঠি ( নেছারাবাদ) থানায় মামলা করেন। অধিনায়ক বলেন, এলাকায় আধিপত্য নিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। হত্যার পরপর আসামিরা বিভিন্ন স্থানে গিয়ে আত্মগোপন করেন। তাদের গ্রেপ্তারের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও ছায়াতদন্ত শুরু হয়। আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাগেরহাটের মোল্লারহাট এলাকায় আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। পরে সেখান থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের স্বরূপকাঠি থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এর আগে আলোচিত এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় স্বাধীন হালদার,শঙ্কর,বাবুল ও তাপস মজুমদার নামের চার আসামীকে গ্রেফতার করা হয়। এ বিষয়ে স্বরূপকাঠি থানার ওসি গোলাম ছরোয়ার জানান, নিহত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শেখর কুমার সিকদারের স্ত্রী মালা মন্ডল বাদী হয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান মিঠুন হালদারসহ ১৫জনকে সুনির্দিষ্ট ও ১০/১২ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার ৪জনকে পুলিশ ও ৪ জনকে র্যাব গ্রেফতার করেছে। পুলিশের গ্রেফতার করা চারজনকে বুধবার (৩১ জানুয়ারী) সকালে পিরোজপুরে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এদিকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে বুধবার (৩১ জানুয়ারী) বিকালে কুড়িয়ানা গ্রামের বাড়িতে শেখর কুমার সিকদারের শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়। এসময় সেখানে উপস্থিত আওয়ামী লীগের নেত-কর্মী ও সমর্থকসহ হাজারো মানুষ তাকে অন্তিম শ্রদ্ধায় পুষ্পার্ঘ ও চোখের জলে শেষ বিদায় জানায়।