অনলাইন ডেস্কঃ
সেন্টমার্টিন সংলগ্ন ৫৯০ হেক্টর প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকার অতিরিক্ত বঙ্গোপসাগরের ৭০ মিটার গভীর সমুদ্রের ১ হাজার ৭৪৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকাকে মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া ঘোষণা করা হয়েছে। অনিয়ন্ত্রিত জাহাজ ও ইঞ্জিনচালিত নৌকার চলাচল, মাত্রাতিরিক্ত মৎস্য সম্পদ আহরণ, সমুদ্রে বর্জ্য ও ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ নিক্ষেপ, প্রবাল উপনিবেশ ধ্বংস, জীববৈচিত্র্য হ্রাস ও জলবায়ু পরিবর্তন রোধে এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১২ জানুয়ারি) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার দীপংকর বরের সই করা এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ এর ধারা ১৩ (১) ও ১৩ (২)-এর ক্ষমতাবলে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় বঙ্গোপসাগরের সেন্টমার্টিন দ্বীপের এক হাজার ৭৪৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকাকে গত ৪ জানুয়ারি ‘সেন্টমার্টিন মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া’ ঘোষণা করে। এই মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়াটি এখন পর্যন্ত দেশের সর্ববৃহৎ এবং দ্বিতীয় মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া।
‘সেন্টমার্টিন মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া’ ঘোষণার ফলে বৈশ্বিকভাবে হুমকির সম্মুখীন গোলাপি ডলফিন, হাঙ্গর, রে মাছ, সামুদ্রিক কাছিম, সামুদ্রিক পাখি, প্রবাল, সামুদ্রিক ঘাস এবং সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য ও এদের আবাসস্থল সংরক্ষণ; সামুদ্রিক মাৎস্য সম্পদের টেকসই আহরণের মাধ্যমে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবিকার মানোন্নয়ন; জাতীয় সুনীল অর্থনীতিকে সমৃদ্ধকরণ এবং বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা ও অভীষ্ট লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আশা করা যায় সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রবাল এবং সামুদ্রিক জলজ প্রাণী তথা সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে এই মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়াটি ঘোষণার ফলে দ্বীপ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় কর্মরত/অবস্থানরত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তায় আইনের যথাযথ প্রয়োগ এবং প্রটেক্টেড এলাকার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা করা সহজতর হবে। তাছাড়া এই প্রটেক্টেড এরিয়া থেকে টেকসই পদ্ধতিতে সামুদ্রিক সম্পদ আহরণ সীমিত করা হলে এর ফলাফলস্বরূপ প্রটেক্টেড এরিয়ার মধ্যে সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ ও জলজ প্রাণীর প্রজনন বাড়বে। একই সঙ্গে প্রটেক্টেড এরিয়ার বাইরেও সামুদ্রিক মাৎস্য সম্পদ ও জলজ প্রাণীর প্রাচুর্যতা বৃদ্ধির সম্ভাবনা বহুগুণে বেড়ে যাবে।
সর্বোপরি, মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের মাধ্যমে এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা ১৪.৫.১ অর্জনের পাশাপাশি জাতীয় সুনীল অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করা সহজতর হবে।
বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণে অবস্থিত অনন্য এ প্রবাল দ্বীপ এবং এর প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সকলকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্যও বিজ্ঞপ্তিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।