সিন্ডিকেটের কব্জায় অস্থির বগুড়া শেরপুরের বীজআলুর বাজার

আইন-অপরাধ আরো কৃষি পরিবেশ রাজশাহী সারাদেশ
শেয়ার করুন...

মিন্টু ইসলাম শেরপুর বগুড়া প্রতিনিধি:
উত্তরাঞ্চলের অন্যতম প্রধান আলু উৎপাদনকারী হিসেবে খ্যাত বগুড়া শেরপুর উপজেলা। এ উপজেলায় সংকট না থাকলেও মৌসুমের শুরুতেই বীজআলুর কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। এভাবে তারা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কৃষকদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এছাড়াও ডিলারদের কাছে কিছু কৃষক অগ্রিম বুকিং দেয়ার ফলে বীজ সহজেই পাচ্ছেনা বলে এমন অভিযোগও তুলেছে সাধারণ কৃষকেরা।
শেরপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, শেরপুরে আলুর বীজ বিক্রি সিন্ডিকেট দখলে নিয়েছে। ফলে স্থানীয় বাজারে আলু বীজের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ডিলার ও ব্যবসায়ীদের কাছে বার বার ধর্ণা দিয়েও বীজ মিলছে না। তাছাড়া কিছু ডিলারদের কাছে কতিপয় কৃষকরা অগ্রিম বুকিং দেয়ার ফলে বীজ সহজেই পাচ্ছেনা বলে এমন অভিযোগ তুলছেন সাধারণ কৃষকেরা। তারা জমি তৈরির আগেই যেমন বীজের প্রাপ্তিতা নিয়ে সংকট, আবার চাহিদা অনুযায়ী মানসম্মত বীজ মিলবে কিনা তা নিয়েও শঙ্কায় রয়েছেন। যার ফলে আলু চাষ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকরা।
এদিকে কৃষকদের জিম্মি করে অসাধু ব্যবসায়ী ও ডিলারদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেট ইচ্ছেমতো দামে আলু বীজ বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার মিশনে মাঠে নেমেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় নির্ধারিত দামের চেয়ে প্রতি বস্তা বীজ আলু ৫শ’ থেকে এক হাজার টাকা বেশি নিয়ে অগ্রিম বুকিংয়ের মাধ্যমে বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ব্র্যাক সিড এন্ড এগ্রো’র টিএসও শফিকুল ইসলাম জানান, গত বছরের তুলনায় দেড়শ’ মেট্রিক টন বীজ কম এসেছে এই অঞ্চলে। খুচরা বাজারে আলুর দাম বেশি থাকায় কৃষকরা এবার বেশি জমিতে আলু চাষ করবেন, ফলে বীজের চাহিদা বেড়েছে। তবে কোন অবস্থাতেই কোম্পানি নির্ধারিত দামের চাইতে বেশি দামে বিক্রি করা যাবে না।
শেরপুর উপজেলায় চলতি মৌসুমে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৭’শ হেক্টর জমিতে। অর্জন হয়েছে প্রায় ৬’শ হেক্টর জমি। সেক্ষেত্রে আলু বীজের চাহিদা রয়েছে ৪ হাজার ৫০ মেট্রিক টন। এরমধ্যে বিএডিসি’র বীজ শতকরা ৭ভাগে ৩’শ মেট্রিক টন, ব্র্যাক সীডের ১ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন, চাহিদার বাকী বীজগুলো কৃষকরা নিজস্বভাবে ও দেশের বিভিন্ন কোম্পানীর মাধ্যমে সংগ্রহ করে থাকেন। প্রতি হেক্টর জমিতে ১৫’শ কেজি তথা বিঘা প্রতি ২০০ কেজি বীজ রোপন করতে হয় কৃষকদের।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. ফারজানা আকতার বলেন, ডিলাররা নির্ধারিত দামের বাইরে বেশি দামে বীজ বিক্রি করতে পারবেন না। এরপরও যারা বেশি দামে বিক্রি করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া ব্রাক, এসিআইসহ বেসরকারি বীজ কোম্পানির কত টন বীজ শেরপুরে বরাদ্দ তা আমার জানা নেই। আমরা তাদের লোকজনকে ডেকে নির্ধারিত দামে যেন বিক্রি হয় সে ব্যবস্থা নেব। তাছাড়া আলু বীজ নিয়ে সিন্ডিকেট ভাংতে উপজেলার ২৩জন বিএডিসি’র ডিলারদের উপর নজরদারি রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে লাব্বি সীড কোম্পানীর বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ায় ১ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করেছে উপজেলা প্রশাসন।


শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.