রঙ তুলির ছোঁয়ায় তারুণ্যের দীপ্তি ছড়াচ্ছে লাকসাম উপজেলা ও পৌর শহরে বিভিন্ন সড়ক আর অলিগলি। বাহারি রঙে রঙিন এ শহরে বসেছে তারুণ্যের মেলা। এ যেন স্বপ্নের এক শহর যা ছিলো এতদিন কল্পনাতে তা এখন রূপ দিয়েছেন বাস্তবে এই শহরেরই একদল ছাত্র-ছাত্রী । মনের মাধুরী মিশিয়ে একের পর এক নোংরা দেয়াল ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করে আঁকছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন চিত্র।
এসব দেয়াল চিত্র দেখলেই মনে হবে মুগ্ধ শহীদ হননি। এই বুঝি ডেকে বলবেন, ‘পানি লাগবে কারো, পানি’। আবার ভাববেন আবু সাঈদের কথা। ক্ষণিকের জন্য মনে হবে এখনও আবু সাঈদ বুক পেতে দাঁড়িয়ে বলছেন, ‘চালা গুলি, গুলি কর।’
এ ছাড়াও হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সকল ধর্মের মানুষ নিয়ে আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধনের চিত্রকর্ম শোভিত হচ্ছে দেয়ালে দেয়ালে।
এসব দেয়াল চিত্র দেখে অসাম্প্রদায়িক বাঙালি জাতি হিসেবে নিজেদের ধন্য মনে হবে। আছে ফুল, পাখি আর নানা শব্দের উচ্চারণ। মনে হবে অনেকদিনের জমানো কথা লিখে রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। আপনাকে কিছুক্ষণের জন্য যান্ত্রিক জীবন থেকে মুক্তি দেবে এসব দেয়াল চিত্র।
এছাড়াও যদি তুমি ভয় পাও তবে তুমি শেষ, যদি তুমি রুখে দাঁড়াও তবে তুমি বাংলাদেশ, ছাত্রলীগের মতো সমন্বয়ক বা সমন্বয়ক পরিচয়ে কেউ সুযোগ সুবিধা দাবি করে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করে তাকে গণধোলাই দিবেন (হাসনাত আব্দুল্লাহ) পলক -স্যাটেলাইটে পানি লেগে ইন্টারনেট ব্যাহত হয়েছে,জনগণ -নাটক কম কর পিও,স্বাধীনতার সূর্য উদয়, বল বীর বল উন্নত মম শির’১৯৫২ তো দেখি নাই দেখিছি ২০২৪, আমি মুগ্ধ পানি লাগবে পানি এমন নানান প্রতিবাদী উক্তি শোভা পাচ্ছে লাকসাম থানার দেয়ালে।
অথচ কিছুদিন আগেও এসব দেয়ালে ছিল বিভিন্ন পণ্যের বাহারি বিজ্ঞাপন ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ব্যানার ফেস্টুন। তার পরিবর্তে আজ সেখানে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের রঙ তুলির ছোঁয়ায় ফুটে উঠেছে কোটা আন্দোলনের স্লোগানসহ দেশের বিভিন্ন চিত্র আর সমাজ সংস্কার গঠনমূলক উক্তি।
ছাত্র-ছাত্রীদের নিজস্ব উদ্যোগে লাকসাম পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ থানার দেয়ালসহ বিভিন্ন স্থাপনায় শিক্ষার্থীদের এমন চিত্র আঁকতে দেখা গেছে।
এ সময় ছাত্রছাত্রীরা বলেন আমরা বিভিন্ন স্থাপনায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন, কোটা আন্দোলনসহ নানান উক্তি দিয়ে সাধারণ মানুষকে মেসেজ দিচ্ছি। আমরা চাই সারা দেশের ন্যায় লাকসাম উপজেলা ও পৌর শহরকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে তুলতে। লাকসাম উপজেলা ও পৌর শহর সুন্দরভাবে সাজাতে আমাদের এ উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।
এ সময় সাধারণ দর্শনার্থীরা বলেন, দেয়ালে দেয়ালে রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীদের পোস্টার, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনে সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছিল। এসব পোস্টার, ফেস্টুন অপসারণ করে সৌন্দর্য বাড়াতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা দেয়ালে দেয়ালে চিত্রকর্ম আঁকছে । শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন উক্তি স্লোগান লিখছে, দেখতে খুবই সুন্দর লাগছে।আমাদের উচিত তাদের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদেরকে সহযোগিতা করা
সেই সঙ্গে দেয়ালগুলোতে বিভিন্ন চিত্র, উক্তি, ছবি আঁকা হচ্ছে, এটি পরিবেশএবং শহর সৌন্দর্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং আগামী প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে