কুমিল্লা প্রতিনিধিঃ কুমিল্লায় মাদক কারবারিদের গুলিতে সাংবাদিক মহিউদ্দিন সরকার নাইম হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ৪ আসামির প্রত্যেকের সাত দিন করে রিমান্ড আবেদন করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) বিকালে আসামিদের কুমিল্লা জেলা জজ আদালতে উপস্থিতিতে এ রিমান্ড আবেদন করা হয়।
তবে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো আদেশ না দিয়ে আসামিদের কুমিল্লা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালতের বিচারক শারমিন রিমা।শুক্রবার রিমান্ড আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বুড়িচং থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শরীফুর রহমান। তিনি জানান, গ্রেপ্তার চার আসামিকে আমরা শুক্রবার আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করি। পরবর্তীতে এ বিষয়ে আদেশ দেবেন আদালত। তাদের কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে দুজন এজাহার নামীয় ও দু’জন অজ্ঞাতনামা আসামি।
গ্রেপ্তারকৃত এজহারভুক্ত আসামিরা হলেন- মো. ফরহাদ মৃধা মনির (৩৮) ও মো. পলাশ মিয়া (৩৪)। জড়িত সন্দেহভাজন আরো দু’জন হলেন- নুরু মিয়া ও সুজন।
তদন্ত কর্মকর্তা আরো জানান, মামলা আসামিরা এবং হত্যাকাণ্ডের শিকার মহিউদ্দিন পূর্ব পরিচিত ছিল। পূর্ব শত্রুতার জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে আমরা প্রাথমিক তদন্তে পেয়েছি।
এদিকে, শুক্রবার দুপুরে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করা হয় গ্রেপ্তার ৪ আসামিকে।
এ সময় এক লিখিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ জানায়, পুলিশের অভিযানে এজহারভুক্ত মো. ফরহাদ মৃধা ওরফে মনির হোসেন ও মো. পলাশ মিয়া এবং সন্দেহভাজন ও হত্যাকাণ্ডে সহযোগী নুরু মিয়া এবং সুজনদের গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনাস্থলে ফেলে যাওয়া ২ ও ৩ নং আসামির (মনির ও পলাশ) ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত মনির ও পলাশ ১নং আসামি রাজুর সঙ্গে যোগসাজশে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনাস্থলে নিয়ে যায় এবং হত্যাকাণ্ড শেষে মোটরসাইকেল রেখে পালিয়ে যায়। তদন্তে প্রাপ্ত আসামি নুরু ও সুজন ঘটনাস্থলে ভিকটিমকে হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা করে আসামিদের পালাতে সুযোগ করে দেয়।
এদিকে, গত বৃহস্পতিবার রাতে নিহত সাংবাদিক মহিউদ্দিন সরকার নাঈমের মা নাজমা আক্তার বাদী হয়ে ৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ৬ জনকে আসামি করে বুড়িচং থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের সাদেক মিয়ার ছেলে ও একাধিক মাদক ও অস্ত্র মামলার আসামি মো. রাজুকে (২৪)।
উল্লেখ্য, কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের হায়দ্রাবাদ সীমান্তে মাদক কারবারির গুলিতে মহিউদ্দিন সরকার নাঈম নিহত হন। বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
সাংবাদিকদের মানববন্ধন:
এদিকে, সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডে প্রধান আসামি রাজুসহ জড়িত অন্যতের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবিতে মানববন্ধন করেছে কুমিল্লায় কর্মরত সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন।
শুক্রবার সকালে কুমিল্লা প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে কুমিল্লা ফটো সাংবাদিক ফোরাম, বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া প্রেস ক্লাব মানববন্ধন করে।
এ ছাড়া দুপুরে কুমিল্লা কন্দিরপাড় পূবালী চত্বরে মানববন্ধন করে কুমিল্লা রিপোর্টার্স ইউনিটির একটি ইউনিট।