সময়মতো উৎপাদনে না আসায় কয়লাভিত্তিক ১০ বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল

অর্থনীতি পরিবেশ সারাদেশ
শেয়ার করুন...

নেপাল থেকে ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আনতে আগামী মাসে চুক্তি
অনলাইন ডেস্কঃ সময়মতো উৎপাদনে না আসায় কয়লাভিত্তিক ১০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। রোববার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু এ তথ্য জানিয়েছেন।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত দিয়েছেন যেগুলো সময়মতো উৎপাদনে আসতে পারেনি সেগুলো বাদ দেওয়ার।

তিনি বলেন, ২০১০-২০১১ সালের বিদ্যুতের মাস্টারপ্ল্যানে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এগুলো সময় মতো বাস্তবায়ন করা যায়নি। বাতিল করার ক্ষেত্রে সেই বিষয়টিও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।
প্রকল্পগুলো হচ্ছেÑ পটুয়াখালীর (২/৬৬০) মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, উত্তরবঙ্গ ১২০০ মেগাওয়াট সুপার থার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট, মাওয়া ৫২২ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, ঢাকার ২৮২ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, চট্টগ্রামের ২৮২ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, খুলনার ৫৬৫ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মহেশখালীর দুটি ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর ৭০০ মেগাওয়াট আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং সিপিজিসিবিএল-সুমিতোমো ১২০০ মেগাওয়াট আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, সামগ্রিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সরকারের ‘ইন্টিগ্রেটেড এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার মাস্টারপ্ল্যানে’ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ‘যৌক্তিক পর্যায়ে পুনঃনির্ধারণ’ করা প্রয়োজন।
তাছাড়া প্যারিস এগ্রিমেন্টে বাংলাদেশ স্বাক্ষর করায় এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় পরিবেশবান্ধব জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন আমাদের জন্য অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছে।
২০০৮ সালের পর দেশে যে ১৮টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প অনুমোদন পায়, তার মধ্যেই ১০টি প্রকল্প এখন বাতিল হল।

গত কয়েক বছর ধরে এসব প্রকল্পের কাজ থামকে থাকায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এগুলো বাতিলের প্রস্তাব দিয়েছিল বলে এর আগে প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছিলেন।
রোববারের সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘সময়মত আসতে না পারায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই পাওয়ার প্লান্টগুলো বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। এই পাওয়ার প্ল্যান্টগুলো বাদ দেওয়ার ফলে বিদ্যুতের ঘাটতি হবে না। ভবিষ্যতে কোন অঞ্চলে কী পরিমাণ বিদ্যুৎ লাগবে, তার ওপর ভিত্তি করে ভবিষ্যত পরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে।

আমাদের হাতে যে পরিমাণ পাওয়ার প্ল্যান্ট আছে এবং আগামীতে যে পরিমাণ আমরা পাব, এতে দেখা যাচ্ছে আমাদের প্রায় ১৩ হাজার মেগাওয়াট পাওয়ার প্লান্ট আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে সিস্টেমে অতিরিক্ত থাকবে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, নেপালের সঙ্গে চুক্তি করতে আমাদের নেগোশিয়েশন ফাইনাল হয়ে গেছে। কনসালট্যান্ট নিয়োগ হয়ে গেছে। এই মাসের মধ্যে তাদের রিপোর্ট হয়তো আমরা পেয়ে যাবো। আগামী মাসের মধ্যে আমরা ফাইনাল চুক্তিতে চলে যাবো। আমরা আশা করছি, আগামী মাসেই নেপালের চুক্তিটি ফাইনাল করা হবে। নেপাল থেকে মোট ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আনা হবে।

তিনি বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ জ্বালানি নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানির মধ্যে সোলার পাওয়ার প্ল্যান্টের দাম এখনও সহনীয় পর্যায়ে আসেনি। প্রচুর জায়গা লাগে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচও বেশি। এই সেক্টরে নতুন প্রযুক্তি কিভাবে বাড়ানো যায় আমরা সেই চেষ্টা করছি।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ভারতের ট্রান্সমিশন কোম্পানি জিএমআর ট্রান্সমিশন লাইন করে আমাদের বিদ্যুৎ দেবে। এতে সুবিধা হল আমাদের বিদ্যুতের লাইনটা হয়ে গেল। ভবিষ্যতে এই লাইন দিয়ে আমরা আরও বিদ্যুৎ আনতে পারব। আমরা চেষ্টা করছি ড্রাই সিজনে আমাদের বিদ্যুৎ ওদের ওখানে রপ্তানি করতে। সূত্রঃ আমাদের অর্থনীতি


শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.