শিক্ষার্থীদের প্রেরণার বাতিঘর ‘আবদুল আউয়াল’

পরিবেশ শিক্ষা শিক্ষা সাহিত্য সারাদেশ সাহিত্য
শেয়ার করুন...

এম এ মান্নানঃ
শিক্ষকতা মহান পেশা হলে শিক্ষক হচ্ছেন মহত্তম। মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষকরা স্বমহিমায় বিশুদ্ধ জ্ঞান, মানবিক আর নৈতিক শিক্ষায় দিক্ষিত করে গড়ে তুলেন যোগ্যতম নাগরিক। প্রতিটি শিক্ষিত মানুষের নাগরিক জীবনে শিক্ষকের আদর্শিক প্রভাব নানাভাবে প্রেরণার পথ দেখায়।
ইন্সটিটিউটের আলোকিত মুখ তিনি। তাঁর আন্তরিকতায় মুগ্ধ শিক্ষার্থীরা। বিপদে-আপদে ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে তাঁকে পাওয়া যায় সবসময়। শিক্ষার্থীদের কাছে তিনি কেবল একজন শিক্ষকই নন, তিনি একজন ভালো বন্ধুও।
তাই তিনি কারো কাছে প্রিয় শিক্ষক, কারো কাছে অভিভাবকতুল্য মানুষ।ইন্সটিটিউটের শিক্ষকদের কাছেও তিনি সমান জনপ্রিয়। প্রতিষ্ঠানে এমন শিক্ষার্থী কম খুঁজে পাওয়া যাবে, যারা তাঁকে চিনেন না।
বলছিলাম কুমিল্লা ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি) এন্ড মেডিক্যাল এসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) এর শিক্ষক মোঃআবদুল আউয়াল সরকারের কথা। শিক্ষার্থী মহলে তিনি ‘আউয়াল স্যার’ নামে অধিক পরিচিত।
শিক্ষকতা পেশায় কেন এলেন? প্রশ্ন করতেই তিনি হাসেন। বলেন, আমি আগে হসপিটালে প্রায় আটবছর কাজ করেছিলাম। কিন্তু মনে হলো এখানে থেকে সমাজের জন্যে কিছুই করতে পারবো না। আমার শিক্ষাজীবনের ব্রত ছিলো, আমি নিজের জন্যে যেমন কিছু করবো। তেমনি মানুষের জন্যেও কাজ করবো। সেই চিন্তা থেকেই শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত হই। শিক্ষকতা পেশায় ভালো আছি। যখন দেখি কোনো শিক্ষার্থী ভালো করছে, তখন বিষয়টা আমাকে অনেক আনন্দ দেয়। ভালো লাগে এই ভেবে যে, আমি হয়তো শিক্ষার্থীদের জন্যে কিছু করতে পারছি।
একটানা কথা বলে তিনি একটু নীরব থাকেন। সেই সুযোগে তাঁকে বলি,বলতে গেলে অনেক শিক্ষার্থী সমৃদ্ধ এ প্রতিষ্ঠানের অন্যতম জনপ্রিয় শিক্ষক আপনি। এই কথাগুলো শুনে জবাবে তিনি শিশুসুলভ হাসেন। হাসি ঠোঁটে জিইয়ে রেখেই বলেন, আমি কেবল শিক্ষার্থীদের সাথে থাকার চেষ্টা করেছি। শিক্ষার্থীদের সাথে মিশেছি। তাদের ভালোমন্দ জানার চেষ্টা করেছি। কারো কোনো প্রয়োজনে সাড়া দিয়েছি। পরামর্শ দিয়েছি। কে কোন বিভাগে (আইএইচটি/ ম্যাটস) পড়ে সেদিকে তাকাই নি। সব শিক্ষকই শিক্ষার্থীদের ভালোবাসায় সিক্ত হন। শিক্ষার্থীদের অফুরান ভালোবাসা প্রাপ্তি আমার জীবনের বড় এক প্রাপ্তি।
তিনি বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন দেখতে বলি। আমি বলি, তোমরা কোথায় যেতে চাও,সেই স্বপ্নটি আগে দেখো। তারপর স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্যে পরিকল্পনা করো। পড়াশোনার কোনো বিকল্প নেই। কঠোর পরিশ্রম করলে মানুষের স্বপ্ন পূরণ হবেই। আমি আরও বলি, নিজের ভবিষ্যত অন্য কেউ এসে সুন্দর করে দিয়ে যাবে না। নিজের জীবন নিজেকেই গড়ে তুলতে হবে।’

প্রশ্ন করলে এই গুণী শিক্ষক বলেন, আমি চেষ্টা করছি শিক্ষার্থীদেরকে তাদের পাঠের বিষয়গুলোকে সহজভাবে উপস্থাপন করতে। যাতে তারা সহজেই বুঝতে পারে। আমি শিক্ষার্থীদের জন্যে আরো কিছু বই লিখবো। লেখার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরাই আমার বড় অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে। তারা বই লেখার জন্যে আমাকে প্রতিনিয়ত উৎসাহিত করছে। ’
আগে গল্প কবিতা লেখার শখ ছিলো মোঃ আবদুল আউয়াল সরকারের। দৈনিক আমার প্রানের বাংলাদেশ পত্রিকায় লিখতেন তিনি। অবসর পেলেই বই পড়তে ভালোবাসেন। সময় পেলে আবারও সাহিত্যচর্চা করার ইচ্ছে আছে তাঁর।
আজকের দিনে আমাদের প্রত্যাশা শিক্ষক সমাজের প্রতিটি শিক্ষক যেন হয়ে উঠেন সত্যিকারের নিবেদিত প্রাণ মানুষ গড়ার কারিগড়।

image_pdfimage_print

শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.