ঈদ উদ্যাপনে শর্ত সাপেক্ষে গণপরিবহনসহ সব যানবাহন চলাচলের বিষয়ে নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। একই সঙ্গে ঈদের পর টানা ১৪ দিন গণপরিবহনসহ সব ধরনের যানবাহন বন্ধেরও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আজ বুধবার বিআরটিএর পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই ভোর ৬টা পর্যন্ত পাঁচটি শর্তে সব ধরনের যানবাহন চলতে পারবে। শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে:
১. বাস/ মিনিবাসে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে চলতে হবে। পাশাপাশি আসনে বসা যাবে না। গণপরিবহনে আসন বিন্যাস করতে হবে আড়াআড়িভাবে। অর্থাৎ, কোনো আসনে জানালার পাশে যাত্রী বসলে পেছনের আসনের যাত্রীকে করিডরের পাশের আসনে বসতে হবে।
২. অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে চলার কারণে যে আর্থিক ক্ষতি হবে, তা পুষিয়ে নিতে বিদ্যমান ভাড়ার অতিরিক্ত ৬০ শতাংশ বাড়তি ভাড়া দিতে হবে যাত্রীদের।
৩. গণপরিবহনের যাত্রী, চালক, সুপারভাইজার/ কন্ডাক্টর, চালকের সহকারী ও টিকিট বিক্রির দায়িত্বে নিয়োজিতদের মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক। তাঁদের জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
৪. যাত্রার শুরু ও শেষে বাস-মিনিবাস পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে হবে। জীবাণুনাশক ছিটিয়ে এসব যান জীবাণুমুক্ত করতে হবে। এ ছাড়া যাত্রীদের হাতব্যাগ ও মালপত্র জীবাণুনাশক ছিটিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
৫. গণপরিবহনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করতে হবে। শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
এর বাইরে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া অন্যান্য শর্তও সবাইকে পালন করতে হবে। এসব শর্ত মেনে অ্যাপের মাধ্যমে চলাচলকারী রাইডশেয়ারিং সেবার যানবাহনও চলতে পারবে।
২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ৫ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত সরকার কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আলোকে যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রেও বিআরটিএ আলাদা নির্দেশনা দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এই সময় সড়কে গণপরিবহন ও সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি সেবায় নিয়োজিত যানের চলাচল এই বিধিনিষেধের আওতামুক্ত থাকবে।
জরুরি সেবার মধ্যে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং কৃষিপণ্য ও উপকরণ (সার, বীজ, কীটনাশক, কৃষি যন্ত্রপাতি) পরিবহনে নিয়োজিত যানবাহন। খাদ্যশস্য, খাদ্যদ্রব্য পরিবহন ও বিক্রয়ে নিয়োজিত যান নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে না। ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, কোভিড টিকাদান, জাতীয় পরিচয়পত্র সরবরাহ কাজ; রাজস্ব আদায়–সংক্রান্ত কার্যাবলি; বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন, ইন্টারনেট সেবায় নিয়োজিত যানবাহনও চলবে। প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের কাজে ব্যবহৃত যানবাহন চলাচলেও কোনো বাধা থাকবে না। জরুরি পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত ট্রাক/ লরি/ কাভার্ড ভ্যান এই নিষেধাজ্ঞার আওতাবহির্ভূত থাকবে। বিদেশগামী যাত্রীরা আন্তর্জাতিক ভ্রমণের টিকিট/ প্রমাণক প্রদর্শন করে গাড়ি নিয়ে যাতায়াত করতে পারবেন।
নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাক সেবা, ব্যাংক, ভিসা–সংক্রান্ত কার্যক্রম, সিটি করপোরেশন/ পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা ও সড়কবাতি ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, ফার্মেসি, ফার্মাসিউটিক্যালসসহ অন্যান্য জরুরি পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মচারী ও যানবাহন। এসব জরুরি সেবায় নিয়োজিতদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে হবে।