কুমিল্লার লালমাই উপজেলায় যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে নির্যাতন করে মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছেন স্বামী। এ ঘটনায় নির্যাতিতা স্ত্রী বাদী হয়ে স্বামী ও দেবরের বিরুদ্ধে লালমাই থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
শনিবার সকালে লালমাই থানা পুলিশ ওই নির্যাতিতার স্বামী মো. হাসানকে গ্রেপ্তার করেছে।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ১৮ বছর আগে মো. হাসানের (৪০) সাথে একই উপজেলার তুলাতলী গ্রামের ফরিদা আক্তারের (৩৫) বিয়ে হয়। সম্প্রতি তিনি ব্যবসার জন্য শ্বশুর বাড়ি থেকে ৫ লাখ টাকা এনে দিতে স্ত্রীকে চাপ দেন। যৌতুকের টাকা এনে না দেয়ায় গত ১৯ জুন বিকেলে স্বামী হাসান ও দেবর হোসাইন ওই গৃহবধূকে টয়লেট পরিষ্কারে ব্যবহৃত ব্রাশ দিয়ে শারীরিক নির্যাতন শেষে মাথার চুল ন্যাড়া করে দেন। পরবর্তীতে ২৪ জুন বিকালে ২য় দফায় নির্যাতন করা হয়। গত ৩০ জুন দুপুরে মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে ভুলইন দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একরামুল হক নিজ কার্যালয়ে উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে বিষয়টি সমাধান করতে সালিশ বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এতে হাসান সংসার করতে না চাওয়ায় ২ লাখ টাকা নিয়ে স্ত্রীকে তালাক দেয়ার সিদ্ধান্ত দেন। কিন্তু নির্যাতন ও মাথা ন্যাড়া করার বিচার না পাওয়ায় ওই নারী সেই সিদ্ধান্ত না মেনে গত ২ জুলাই লালমাই থানায় মামলা করেন। শনিবার ভোরে পুলিশ হাসানকে গ্রেপ্তার করে।
গৃহবধূ ফরিদা আক্তার বলেন, যৌতুকের জন্য আমার উপর নির্যাতন চালিয়ে মাথার চুল কেটে দেয়া হয়। কিন্তু আমি চেয়ারম্যান অফিসে ন্যায় বিচার পাইনি। ভুলইন দক্ষিণের চেয়ারম্যান শালিস বৈঠক করে ২ লাখ টাকায় আমাকে তালাক দেয়ার রায় দেন। কিন্তু শারীরিক নির্যাতন ও মাথা ন্যাড়া করার বিচার না পাওয়ায় আমি সেই সিদ্ধান্ত না মেনে থানায় মামলা দায়ের করতে বাধ্য হয়েছি।
লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আইয়ুব বলেন, গৃহবধূকে নির্যাতন ও মাথা ন্যাড়া করার ঘটনায় স্বামীকে গ্রেপ্তার করে শনিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
