লাকসাম পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ-৪

আইন-অপরাধ আরো কুমিল্লা চট্টগ্রাম পরিবেশ সারাদেশ
শেয়ার করুন...

ফলোআপ

সেলিম চৌধুরী হীরাঃ
লাকসাম পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রসরাজ দাসকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ২৪ মার্চ কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক রিতা চক্রবর্তী স্বাক্ষরিত পত্রে বলা হয়েছে, লাকসাম পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রসরাজ দাস কে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে বিধি মোতাবেক অন্য সিনিয়র শিক্ষককে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো। সিনিয়র শিক্ষকদের মাঝে দুর্নীতি স্বজনপ্রীতির অভিযোগ আছে এমন কাউকে উক্ত পদে দায়িত্ব প্রদান না করার জন্যও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
উক্ত স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রসরাজ দাসের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ শিরোনামে দৈনিক আজকের জীবন পত্রিকায় ৬ মার্চ, ১৬ মার্চ এবং ২৩ মার্চ তিনটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদ লাকসামের সর্ব মহলে ব্যাপক প্রশংসিত এবং আলোচিত ছিল।
তবে এই প্রতিবেদককে আইসিটি আইনে মামলা দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ কামাল হোসেন। ১২ বছর যাবত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত থাকা এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের নিকট একটি প্রতিবেদন দিয়েছেন লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাউছার হামিদ।
১২ মার্চ স্বাক্ষরিত ৭ পাতা সংযুক্তির ঐ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লাকসাম পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রসরাজ দাসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, আসদাচরণ ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে।
উক্ত স্কুলে সার্বিক বিষয়ে যথাযথ ভাবে কাজ সম্পন্ন করার চেষ্টা করলেও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অসহযোগিতা ও অদক্ষতার কারণে উক্ত স্কুলে শৃঙ্খলা ফেরাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার জন্য শিক্ষকদের মাঝে বিভিন্ন দল উপদলে বিভক্ত করে রেখেছেন এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে শিক্ষকদের মিটিংয়ে কয়েকজন শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ তোলেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের উপস্থিতিতে অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও অন্যান্যদের সাথে উক্ত রসরাজ দাস খারাপ আচরণ করার কথাও বলা হয়েছে ওই পত্রে।
উক্ত স্কুল নিরীক্ষার জন্য ১৩ ফেব্রুয়ারি একটি অডিট কমিটি গঠন করেন ইউএনও।
ওই কমিটিকে সহযোগিতা না করায় অডিট করেনি উক্ত কমিটি। অডিট কমিটিকে সহযোগিতা না করা শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও আসদাচরণের শামিল বলা হয়েছে।
এছাড়াও এডহক কমিটির অভিভাবক সদস্যদের অভিযোগ সহ ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি স্কুলের পিঠা উৎসব, রুটিন প্রণয়ন, বাৎসরিক ক্যালেন্ডার ও ডায়েরী ছাপাতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম অবলোকন করেছেন ইউএনও কাউছার হামিদ।
রসরাজ দাস একপাক্ষিক অবস্থান গ্রহণ ও শিক্ষকদের মাঝে বিভাজন সৃষ্টি করায় তার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, সিভিল সোসাইটি, সাংবাদিক ও অন্যান্য সাধারণ নাগরিকগণ অবস্থান নিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
সর্বোপরি উক্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণসহ অন্য কাউকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব প্রদান অথবা নিয়মিত প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার ব্যাপারে মত প্রকাশ করেছেন লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাউছার হামিদ।
ওই পত্রের আলোকেই ২৪ শে মার্চ কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক রিতা চক্রবর্তী স্বাক্ষরিত পত্রে লাকসাম পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রসরাজ দাসকে অব্যাহতি দিয়ে বিধি মোতাবেক অন্য সিনিয়র শিক্ষককে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে লিখিতভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ কাউছার হামিদ ৫ এপ্রিল শনিবার বিকেলে বলেন, বোর্ডের প্রেরিত চিঠি পেয়েছি। অফিস খুললে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উক্ত রসরাজ দাসকে অব্যাহতি দেওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে ভুক্তভোগীরা।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছাড়াও উক্ত স্কুলের বেশ কয়েকজন শিক্ষক, অফিস সহায়ক ও অফিস পিয়নের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম-দুনীতির অভিযোগ রয়েছে যাহা অনুসন্ধান চলছে।


শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published.