
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
অবশেষে দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতার অভিশাপ থেকে মুক্তি মিলছে লাকসাম উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের বাসিন্দাদের। স্থানীয়দের মাঝে স্বস্তির শ্বাস ফেলে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসনের সাহসী ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ। রবিবার (৩ আগষ্ট) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গোবিন্দপুর ইউনিয়নের বেতিহাটি, গোবিন্দপুর, রশিদপুর, গাজীরপাড় সিমানা এলাকায় পরিচালিত ৫ দিনের বিশেষ অভিযানে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে পানি নিষ্কাশনের জন্য বাঁধ কেটে দেওয়া হয়েছে। এই উদ্যোগে এলাকাবাসীর মধ্যে দেখা দিয়েছে ব্যাপক স্বস্তি. তারা মনে করছেন, এভাবেই চলতে থাকলে বন্যার আশঙ্কা অনেকটাই কমে যাবে।
গোবিন্দপুর এলাকার জনসাধারণের উদ্যোগে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউসার হামিদের নেতৃত্বে ও ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তা আনোয়ারা বেগমের সার্বিক সহযোগিতায় পরিচালিত এই অভিযানে জলাবদ্ধতার মূল কারণ চিহ্নিত করে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। অভিযানে ৬ টি আধাপাকা ও টিনের অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়, যা পানি চলাচলের পথে দীর্ঘ দিন ধরে বাধা সৃষ্টি করছিল। এর পাশাপাশি, জলাবদ্ধতার কারণে দুর্ভোগে থাকা ২টি বাড়ির রাস্তা কেটে পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা করা হয়, যা স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক স্বস্তি এনে দিয়েছে।
এলাকাবাসীর পক্ষে গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কয়েক বছর ধরে বর্ষা এলেই আমাদের এই এলাকার বিভিন্ন স্হানে হাঁটুপানি জমে যেত। প্রশাসনের এই পদক্ষেপে আমরা সত্যিই খুশি। এখন মনে হচ্ছে, একটা স্বস্তির নিশ্বাস নিতে পারছি। স্হানীয় রহিম বলেন, আমাদের বাড়ির সামনে সব সময় পানি জমে থাকত। এখন রাস্তা কেটে দেওয়ার ফলে পানি নেমে যাচ্ছে। এভাবে চললে আর বন্যার ভয় থাকবে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউসার হামিদ দৃঢ় কণ্ঠে জানান, উপজেলার জলাবদ্ধতা নিরসনে এই অভিযান কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। পর্যায়ক্রমে লাকসামের প্রতিটি ইউনিয়নে এ ধরনের অভিযান পরিচালিত হবে। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং পানি চলাচলের পথে তৈরি হওয়া ভেষাল ও বাঁধগুলো কেটে দেওয়ার এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। তার এই ঘোষণা লাকসামের আপামর জনগণের মধ্যে এক নতুন আশার সঞ্চার করেছে। এটি কেবল একটি অভিযান নয়, এটি জলাবদ্ধতার বিরুদ্ধে এক সুদূরপ্রসারী সংগ্রামের সূচনা, যা লাকসামবাসীকে
একটি জলাবদ্ধতামুক্ত এবং বাসযোগ্য উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলার পথে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।