বিল্লাল হোসেন, যশোর থেকেঃ
যশোরে ডিগ্রি ছাড়াই বড় মাপের ডাক্তার সেজে অর্থ আয়ের ফাঁদ পেতে বসা হাবিবুর রহমানকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার যশোর জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের যৌথ অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এই জেল- জরিমানা করা হয়। নকল ডাক্তার হাবিবুর রহমান যশোর শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোডে অবস্থিত পিয়ারলেস ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চেম্বারে বসে চিকিৎসার নামে রোগীদের সাথে জমপেশ প্রতারণা করে আসছিলেন। সাইনবোর্ড, ভিজিটিং কার্ড ও প্রেসক্রিপশন (ব্যবস্থাপত্র) দেখলে যে কেউ মনে করবেন তিনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার। হাবিবুর রহমান বাস্তবে একজন মস্তবড় প্রতারক বলে প্রমাণ পান অভিযানে থাকা কর্মকর্তারা।
যশোর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপ দাশ জানান, জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলামের নির্দেশে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টা ৪৫ মিনিটে অভিযান চালিয়ে দেখা যায় হাবিবুর রহমান নামে একজন চিকিৎসক সেজে রোগীদের ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন। এসময় তার ডাক্তারী সনদ চাইলে বের করতে ব্যর্থ হন। ডিগ্রিধারী ও বিএমডিসি সনদপ্রাপ্ত না হয়েও হাবিবুর নামের আগে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করছেন। তিনি বড় অংকের চিকিৎসা ফিস নিয়ে মানুষের অপচিকিৎসা করছিলেন। হাতেনাতে আটক করে তাকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. নাজমুস সাদিক জানান, হাবিবুর রহমান চিকিৎসক পরিচয়ে সাধারণ মানুষের সাথে দীর্ঘদিন প্রতারণা করে আসছিলেন। তিনি আসলে চিকিৎসক নন। তিনি চিকিৎসার প্যাডে নামের আগে লিখেছেন ডাক্তার। আর নামের পরে ডিগ্রি উল্লেখ করেছেন ডিএমএফ,ডিএমএ ও এমএসসি। যার একটি বিএমডিসি স্বীকৃত ডাক্তারের কোন ডিগ্রি না। এছাড়া ব্যবস্থাপত্রে হাবিবুর রহমান মেডিসিন, শিশু, অ্যাজমা, বাত-ব্যথা, গ্যাস্ট্রোলিভার, চর্ম-যৌন রোগ ও ডায়াবেটিসে অভিজ্ঞ বলে উল্লেখ করেছেন। হাবিবুর রহমান এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রীধারী বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশনকৃত না হয়েও তিনি প্রতি রোগীর কাছ থেকে ব্যবস্থাপত্রের ভিজিট নেন ৩০০ টাকা। অধিকাংশ ব্যবস্থাপত্রে থাকে ওষুধের লম্বা তালিকা। আবার প্যাথলজির বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা লিখেও লাখ লাখ টাকা কমিশন নেন। এই ধরণের অভিযোগে বৃহস্পতিবার পিয়ারলেস ডায়াগনস্টিকে অভিযান চালিয়ে হাবিবুর রহমানকে আটক করা হয়। বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন অনিযায়ী ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কবীর হোসেনের ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
অভিযানকালে ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. নাজমুস সাদিক ও সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপ দাশসহ সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. রেহেনেওয়াজ, মেডিকেল অফিসার অনুপম দাস ও পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।